শোন একটি মুজিবের থেকে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

শোন একটি মুজিবের থেকে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

শোন একটি মুজিবের থেকে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই গানটি অন্যান্য গানের সঙ্গে বারবার বাজানো হতো ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ থেকে।

গানটির সুরকার ও শিল্পী ছিলেন বিখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী অংশুমান রায়। অসামান্য জনপ্রিয় হওয়ার পর গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার নিজেই এই গানটিকে The voice of not one, but million mujibors singing’ শিরোনামে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন। অনুবাদ করা গানটি গেয়েছিলেন শিল্পী কবরী নাথ।


শোন একটি মুজিবের থেকে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ১। হারানো বাংলাকে আবার তো ফিরে পাব— উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: হারানো বাংলাকে আবার তো ফিরে পাব- চরণটির মধ্য দিয়ে পরাধীন বাংলাকে স্বাধীনভাবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়েছে। এক সময় এই বাংলা ছিল স্বাধীন জনপদ। ১৭৫৭ সালে সে স্বাধীনতা ব্রিটিশদের কাছে হারায়। পরবর্তী সময়ে ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগে এই দেশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হলে পূর্ব বাংলা পরিচিতি পায় পূর্ব পাকিস্তান নামে। পাকিস্তানিরা ২৩ বছর ধরে বাঙালিদের ওপর দুঃশাসন চালায়। এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জেগে ওঠে। হারানো বাংলাকে পুনরায় ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জেগে ওঠে বাঙালির প্রাণে। চরণটিতে বাঙালির সেই আকাঙ্ক্ষাই প্রকাশ পেয়েছে।

প্রশ্ন ২। আকাশে বাতাসে ওঠে রণি- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: আকাশে বাতাসে ওঠে রণি— চরণটির মধ্য দিয়ে কবি বুঝিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠের আওয়াজে বাঙালির জেগে ওঠার কথা। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। সেই ভাষণ ছিল বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের ডাক। যে ডাক শুনে লক্ষ লক্ষ মানুষ স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর সেই কণ্ঠস্বর আকাশে-বাতাসে ধ্বনি-প্রতিধ্বনি সৃষ্টি করে। তাঁর কণ্ঠস্বর লক্ষ লক্ষ মানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়। মূলত একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠে স্বাধীনতা আহ্বানের মধ্য দিয়ে যেন লক্ষ লক্ষ বাঙালি মিলিত কণ্ঠস্বরে স্বাধীনতার জন্য গর্জে উঠেছিল।

প্রশ্ন ৩। সেই সবুজের বুক চেরা মেঠোপথে/আবার যে যাব ফিরে বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: সেই সবুজের বুক চেরা মেঠোপথে/ আবার যে যাব ফিরে- চরণটির মধ্য দিয়ে সবুজ-শ্যামল গ্রামবাংলায় ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে। ১৯৭১ সালে সারা দেশ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নাগপাশে বন্দি হয়ে পড়ে। চারদিকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নারকীয়তা। কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার পর লক্ষ লক্ষ বাঙালির প্রাণে মুক্তির আশা জাগে। তারা স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখে। যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মনে করে স্বাধীনতার পর আবার একদিন তারা স্বপ্নের সবুজ-শ্যামল গ্রামে ফিরে যাবে। যে গ্রামের সবুজের বুক চিরে চলে গেছে মেঠোপথ।

প্রশ্ন ৪। কবি বাংলাদেশকে ‘সোনার খনি’ বলেছেন কেন?
উত্তর: সম্পদে ভরপুর বোঝাতে কবি বাংলাদেশকে ‘সোনার খনি’ বলেছেন। প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্যের আধার বাংলাদেশ। ফুলে-ফসলে, -শিল্পে-কাব্যে এ দেশ পূর্ণ। এ দেশের মাটিতে যেমন সোনালি ফসল ফলে তেমনি এ দেশে নজরুল, রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ দাশের মতো কবিদের বাস। তাঁদের কাব্য-কবিতায় অসাধারণ রূপসী হয়ে ফুটে ওঠে বাংলা। আর এ কারণেই কবি বাংলাদেশকে ‘সোনার খনি’ বলেছেন।

প্রশ্ন ৫। বিশ্বকবির ‘সোনার বাংলা’ কেন? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর গানে বাংলাকে ‘সোনার বাংলা’ বলে অভিহিত করেছেন বলে কবি গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার বাংলাদেশকে বিশ্বকবির ‘সোনার বাংলা’ বলেছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর রচিত একটি দেশাত্মবোধক গানে ‘বাংলাদেশকে ‘সোনার বাংলা’ বলে অভিহিত করেছেন। এই গান আমাদের জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃত। সেই কথা মনে করেই কবি গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার বাংলাদেশকে বিশ্বকবির ‘সোনার বাংলা’ বলেছেন।

প্রশ্ন ৬। কবি ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের কথা কেন বলেছেন?
উত্তর: কবি ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের কথা বলেছেন, কারণ এ স্লোগান বাঙালির অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে রয়েছে। পাকিস্তানবিরোধী সব আন্দোলন-সংগ্রামে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি ব্যবহৃত হতো। এই স্লোগান দিয়েই বাঙালি সারা দেশ প্রকম্পিত করত। জয় সুনিশ্চিত ও অবশ্যম্ভাবী জেনে দ্বিধাহীন চিত্তে বাঙালি এই স্লোগান দিত। এই স্লোগান শুনে লক্ষ লক্ষ বাঙালি রাজপথে নেমে আসত। জয়ের লক্ষ্যে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ত।


🔆🔆 আরও দেখুন: শোন একটি মুজিবের থেকে কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
🔆🔆 আরও দেখুন: শোন একটি মুজিবের থেকে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
🔆🔆 আরও দেখুন: শোন একটি মুজিবের থেকে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের যে কোন আপডেট মিস করতে না চাইলে ফেসবুক ও ইউটিউবে সাবক্রাইব করে আমাদের সাথে কানেক্ট থাকতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।

About মেরাজুল ইসলাম

আমি মেরাজুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পাশাপাশি একজন ব্লগার। এডুকেশন এর প্রতি ভালোবাসাও অনলাইল শিক্ষার পরিসর বাড়ানোর জন্য এডুকেশন ব্লগের পথচলা। ব্লগিং এর পাশাপাশি আমি ওয়েবসাইট ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, কাস্টমাইজ সহ ওয়েব রিলেটেড সকল কাজ করি।

View all posts by মেরাজুল ইসলাম →