[SSC] জীববিজ্ঞান ১ম অধ্যায়

[SSC] জীববিজ্ঞান ১ম অধ্যায় বোর্ড প্রশ্ন ২০১৬

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। পরিক্ষার আগে শেষ প্রস্তুতির সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হচ্ছে বিগত বছরের বোর্ড প্রশ্ন গুলোর সমাধান করা। এতে করে প্রশ্নের ধরণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়। এজন্য পিডিএফ মেলার আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে ২০১৬ সালে [SSC] জীববিজ্ঞান ১ম অধ্যায় থেকে আসা সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।

ঢাকা বাের্ড ২০১৬

শিক্ষক জীববিজ্ঞান ক্লাসে কিছু ছবি প্রদর্শন করেন এবং পরে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন জীবজগতের সকল প্রাণী একে অন্যের উপর নির্ভরশীল।

  • ক. প্লাঙ্কটন কী?
    খ. কমেনসেলিজম বলতে কী বােঝায়?
    গ. উদ্দীপকের B কোন রাজ্যের সদস্য ব্যাখ্যা কর।
    ঘ. A ও C এর সম্পর্কটি জীবজগতের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ উদ্দীপকের শেষ লাইনের আলােকে মূল্যায়ন কর।

ক উত্তর) পানিতে ভাসমান ক্ষুদ্র জীবই হলাে প্ল্যাংকটন।

খ উত্তর) কমেনসেলিজম এক ধরনের ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া। এ ক্ষেত্রে সহযােগীদের মধ্যে একজন মাত্র উপকৃত হয়। অন্য সহযােগী সদস্য উপকৃত না হলেও কখনও ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। যেমন- রােহিনী উদ্ভিদ মূলের সাহায্যে নিজেকে মাটিতে আবদ্ধ করে এবং অন্য বড় উদ্ভিদকে আরােহণ করে উপরে উঠে। এরূপে অন্য বৃক্ষের উপর প্রসারিত হয়ে বেশি পরিমাণে আলাে গ্রহণ করে। কাষ্ঠল লতা খাদ্যের জন্য আশ্রয়দানকারী উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে না এবং তার কোনাে ক্ষতিও করে না। পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ বায়ু থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু আশ্রয়দাতার কোনাে ক্ষতি করে না। কিছু শৈবাল অন্য উদ্ভিদদেহের মধ্যে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করে। কিন্তু আশ্রয়দাতার কোনাে ক্ষতি করে না। সহযােগীদের মধ্যে এ ধরনের আন্তঃক্রিয়াই হচ্ছে কমেনসেলিজম। 

গ উত্তর) উদ্দীপকের চিত্রে B হলাে ডায়াটম নামক এককোষী শৈবাল। এটি প্রােটিস্টা রাজ্যের সদস্য। কারণ এর বৈশিষ্ট্যগুলাে প্রােটিস্টা রাজ্যের বৈশিষ্ট্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। নিচে ডায়াটমের বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করা হলাে-
ডায়াটম এককোষী বা বহুকোষী, একক বা কলােনিয়াল (দলবদ্ধ) বা ফিলামেন্টাস এবং সুগঠিত নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট। কোষে ক্রোমাটিন বস্তু নিউক্লিয়ার পর্দা দ্বারা পরিবৃত্ত থাকে। ক্রোমাটিন বস্তুতে DNA, RNA ও প্রােটিন থাকে। কোষে সকল ধরনের অঙ্গাণু থাকে। এদের খাদ্য গ্রহণ শােষণ, গ্রহণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতিতে ঘটে। মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে, অযৌন প্রজনন ঘটে এবং কনজুগেশনের মাধ্যমে অর্থাৎ জৈবনিকভাবে ভিন্ন কিন্তু গঠনগতভাবে এক, এরূপ দুটি গ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে যৌন প্রজনন ঘটে। তবে কোনাে ভূণ গঠিত হয় না।
উপযুক্ত ব্যাখ্যায় দেখা যায় ডায়াটমের সকল বৈশিষ্ট্য প্রােটিস্টা রাজ্যের বৈশিষ্ট্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এ কারণে উদ্দীপকের চিত্র-B অর্থাৎ ডায়াটম প্রােটিস্টা রাজ্যের সদস্য। 

ঘ উত্তর) উদ্দীপকের চিত্রে A হলাে দ্বিতীয় স্তরের খাদক ব্যাঙ। আর C হলাে তৃতীয় স্তরের খাদক সাপ। বাস্তুতন্ত্রে এরা মূলত খাদ্য-খাদক সম্পর্কে আবদ্ধ। তাই খাদ্য-খাদক সম্পর্কটি জীবজগতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিচে তা উদ্দীপকের আলােকে মূল্যায়ন করা হলো:

খাদ্য-খাদক সম্পর্কের মাধ্যমেই জীবজগৎ টিকে আছে। তাই জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বাস্তুতন্ত্রের সবগুলো প্রজাতির স্বাভাবিক অবস্থায় থাকা জরুরি। জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থেই প্রতিটি জীব একে অপরের উপর নির্ভরশীল। বিপুল সংখ্যক জীবের পারস্পরিক নির্ভরশীলতার উপর ভিত্তি করেই পরিবেশে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। যেমন উদ্দীপকের ব্যাঙ তার নিচের স্তরের পােকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। এসব পােকা মাকড় উৎপাদকের রক্ষাকবচ হিসেবে। কাজ করে। তাই উৎপাদক যদি পােকামাকড়ের আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে পুরাে বাস্তুতন্ত্রে দেখা দিবে হাহাকার। আবার ব্যাঙ তার পরবর্তী স্তরের খাদক অর্থাৎ সাপের খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এভাবে সাপ আবার তার পরবর্তী স্তরের খাদকের জন্য খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু কোনাে কারণে যদি ব্যাঙ মারা যায়, তাহলে তার পূর্ববর্তী স্তরের কীটপতঙ্গ বেড়ে উৎপাদককে নষ্ট করে দিবে। অন্যদিকে পরবর্তী স্তরের খাদক সাপ খাদ্যাভাবে মারা যাবে বা সংখ্যা , হ্রাস পাবে এবং এক সময় হারিয়ে যাবে। ফলে সাপের উপর নির্ভরশীল পরবর্তী প্রাণীকুলেও দেখা দিবে সংকট। 

উপযুক্ত মূল্যায়ন থেকে দেখা যায় যে, জীবজগতের প্রতিটি জীব একে অপরের উপর নির্ভরশীল। যা সাপ ও ব্যাঙের ক্ষেত্রে দেখানাে হয়েছে।

বরিশাল বোর্ড ২০১৬

জীবজগত কে ৫ টি রাজ্যে ভাগ করা যায়, যেমন:
মনোরা→ 2️⃣ → 3️⃣ → 4️⃣ → অ্যানিমেলিয়া

  • ক. দেহকোষ কাকে বলে? 
    খ. অনৈচ্ছিক পেশি বলতে কী বােঝায়?
    গ. উদ্দীপকের কোন রাজ্যে পেনিসেলিয়াম এর অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
    ঘ. উদ্দীপকের রাজ্যসমূহের ক্রম উন্নতির যৌক্তিক কারণ বিশ্লেষণ কর।

ক উত্তর) জীবের দেহগঠনে অংশ গ্রহণকারী কোষকে দেহকোষ বলে।

খ উত্তর) যে সকল পেশি টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয় তাদেরকে অনৈচ্ছিক পেশি টিস্যু বলে। এ পেশি কোষগুলাে মাকু আকৃতির। এদের গায়ে আড়াআড়ি দাগ থাকে না। এজন্য এ পেশিকে মসৃণ পেশিও বলা হয়। মেরুদন্ডী প্রাণীদের রক্তনালি, পৌষ্টিকনালীর প্রাচীরে অনৈচ্ছিক পেশি থাকে। 

[adfoxly place=’1582′]গ উত্তর) উদ্দীপকে প্রদত্ত জীবজগতের পাঁচটি রাজ্যকে ক্রমানুসারে সাজালে তা দাড়ায়- মনেরা → প্রােটিস্টা » ফানজাই > প্লানটি » অ্যানিমেলিয়া;

পেনিসিলিয়ামের বৈশিষ্ট্যগুলাে বিশ্লেষণের মাধ্যমে তার রাজ্যগত অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলাে- পেনিসিলিয়াম প্রধানত মৃতজীবী স্বভাবের। বেশির ভাগ প্রজাতি নানাবিধ পচনশীল শাকসবজি, ফলফলাদি, জ্যাম, জেলি, পনির, ঔষধ, সংরক্ষিত খাদ্য দ্রব্য এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর পচা ও গলিত দেহের উপর জন্মায়। এর দেহ শাখা-প্রশাখা যুক্ত মাইসেলিয়াম দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কোষে একটি মাত্র নিউক্লিয়াস থাকে। খাদ্য গ্রহণ শােষণ পদ্ধতিতে ঘটে। ক্লোরােপ্লাস্ট অনুপস্থিত। হ্যাপ্লয়েড স্পােরের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটায়।

উপরােক্ত বৈশিষ্ট্যাবলির রাজ্য-৩: অর্থাৎ ফানজাই রাজ্যের বৈশিষ্ট্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় পেনিসিলিয়ামকে জীবজগতের রাজ্য-৩ অর্থাৎ ফানজাই বা ছত্রাক রাজ্যে স্থান দেওয়া হয়েছে।

ঘ উত্তর) উদ্দীপকের প্রবাহ চিত্রের ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ রাজ্য যথাক্রমে প্রােটিস্টা, ফানজাই এবং প্লানটি। রাজ্য-১ অর্থাৎ মনেরা থেকে শুরু করে পরবর্তী রাজ্যসমূহের মধ্যে ক্রম উন্নতি হচ্ছে। নিচে তার যৌক্তিক কারণ বিশ্লেষণ করা হলাে-

উদ্দীপকের রাজ্য-১ : মনেরার নিউক্লিয়াস সগুঠিত নয়। কোষে ক্রোমাটিন থাকলেও নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয়ার পর্দা নেই। এদের খাদ্যগ্রহণ শােষণ এবং কোষ বিভাজন হয় দ্বিবিভাজন প্রক্রিয়ায়। 

কিন্তু রাজ্য-২: প্রােটিস্টায় দেখা যায় নিউক্লিয়াস সুগঠিত। এদের ক্রোমাটিন বস্তুতে DNA, RNA ও প্রােটিন থাকে। এদের খাদ্যগ্রহণ শােষণ, গ্রহণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতিতে ঘটে। আবার এদের কোষ বিভাজন যৌন ও অযৌন উপায়ে হয়ে থাকে। তবে কোনাে ভূণ সৃষ্টি হয় না।

রাজ্য-৩ : ফানজাইতেও মনেরা ও প্রােটিস্টা থেকে উন্নততর বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। এদের নিউক্লিয়াস সুগঠিত এবং খাদ্যগ্রহণ শশাষণ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। এদের দেহে ক্লোরােপ্লাস্ট অনুপস্থিত। হ্যাপ্লয়েড স্পাের দিয়ে বংশবৃদ্ধি ঘটে।

রাজ্য-৪ : প্লানটিতে উন্নত টিস্যুতন্ত্র বিদ্যমান। এদের ভূণ সৃষ্টি হয় এবং তা ডিপ্লয়েড পর্যায় থেকে শুরু হয়। এদের যৌন জনন অ্যানাইসােগ্যামাস প্রকৃতির। এরা প্রধানত স্থলজ তবে অসংখ্য জলজ প্রজাতিও আছে। আবার প্লানটি রাজ্য থেকে উন্নততর বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় অ্যানিমেলিয়া রাজ্যে। 

রাজ্য-৫ : অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের প্রাণীদেহে জটিল টিস্যু বিদ্যমান। এদের কোষে কোনাে বড় কোষপ্রাচীর, প্লাস্টিড ও কোষগহ্বর নেই। এরা খাদ্যগ্রহণ করে গলাধঃকরণ প্রক্রিয়ায়। এদের যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি হয়। ভূণ বিকাশকালীন সময়ে এদের ভূণীয় স্তর সৃষ্টি হয়। এরা চলাফেরা করতে পারে। কিন্তু পূর্ববর্তী অন্যকোনাে রাজ্যের জীব চলাফেরা করতে পারে না।

উপযুক্ত বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায় যে, মনেরা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ রাজ্য অ্যানিমেলিয়া পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে উন্নততর বৈশিষ্ট্যের কারণে পূর্ববর্তী রাজ্য থেকে পরবর্তী রাজ্য উন্নত।

আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *