বায়ান্নর দিনগুলো সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

বায়ান্নর দিনগুলো সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

বায়ান্নর দিনগুলো সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের “বায়ান্নর দিনগুলাে তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ (২০১২) গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী ও সহধর্মিণীর অনুরােধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে রাজবন্দি থাকা অবস্থায় এই আত্মজীবনী লেখা আরম্ভ করেন।

কিন্তু ১৯৬৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি থেকে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক আগরতলা মামলায় ঢাকা সেনানিবাসে আটক থাকায় জীবনী লেখা বন্ধ হয়ে যায়। জীবনীটিতে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলি স্থান পেয়েছে। যৌবনের অধিকাংশ সময় কারা প্রকোষ্ঠের নির্জনে কাটলেও জনগণ-অন্তপ্রাণ এ মানুষটি ছিলেন আপসহীন, নির্ভীক। জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা, গভীর উপলব্ধি ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ তিনি এ গ্রন্থে সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করেছেন। “বায়ান্নর দিনগুলাে” রচনায় ১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধুর জেলজীবন ও জেল থেকে মুক্তিলাভের স্মৃতি বিবৃত হয়েছে।

তকালীন পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর অপশাসন ও বিনাবিচারে বৎসরের পর বৎসর রাজবন্দিদের কারাগারে আটক রাখার প্রতিবাদে ১৯৫২ সালে লেখক অনশন ধর্মঘট করেন। স্মৃতিচারণে ব্যক্ত হয়েছে অনশনকালে জেল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও আচরণ, নেতাকর্মীদের সাথে সাক্ষাৎ ও তাদের কাছে বার্তা পৌছানাের নানা কৌশল ইত্যাদি।

স্মৃতিচারণে বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে ঢাকায় একুশে ফেব্রুয়ারি তারিখে ছাত্রজনতার মিছিলে গুলির খবর। সেই সঙ্গে অনশনরত অবস্থায় মৃত্যু অত্যাসন্ন জেনে পিতামাতা-স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ভাবনা এবং অবশেষে মুক্তি পেয়ে স্বজনদের কাছে ফিরে আসার স্মৃতির হৃদয়স্পর্শী বিবরণও পরিস্ফুট হয়েছে সংকলিত অংশে।


বায়ান্নর দিনগুলো সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন ০১: আফ্রিকার জনমানুষের প্রিয় নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। বর্ণবাদ, বৈষম্য আর শোষণ-নিপীড়নের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকার কালো মানুষগুলোর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্বের পুরোধা ছিলেন তিনি। তাঁকে সইতে হয়েছে নির্যাতন, খাটতে হয়েছে জেল । তাঁর সাতাশ বছরের সশ্রম কারাভোগ ও ত্যাগের বিনিময়ে আফ্রিকার মানুষদের মুক্তি তথা স্বাধীনতা অর্জিত হয়।

ক. জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
খ. ‘অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যদি মরতে পারি, সে মরাতেও শান্তি আছে’— লেখক একথা বলেছিলেন কেন?
গ. উদ্দীপকের নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার লেখকের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি তুলে ধরো।
ঘ. ‘পরিপ্রেক্ষিত ভিন্ন হলেও সংগ্রামী চেতনায় মুজিব-ম্যান্ডেলা এক সূত্রে গাঁথা’— উদ্দীপক ও ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার আলোকে মন্তব্যটি যাচাই করো।

১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।

খ। অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আত্মত্যাগের মাহাত্ম্য বোঝাতে গিয়ে নিজের সহকর্মীদের উদ্দেশে লেখক একথা বলেছিলেন। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার লেখক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামী এক মহান নেতা। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার মানসিকতা পোষণ করতেন তিনি। তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে জীবন দেওয়াকে গৌরবজনক বলে মনে করতেন। তাই মৃত্যুকে তিনি ভয় করতেন না। প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই বিশ্বাসই ধ্বনিত হয়েছে।

উত্তরের সারবস্তু: অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আত্মত্যাগের মাহাত্ম্য বোঝাতে গিয়ে নিজের সহকর্মীদের উদ্দেশে লেখক একথা বলেছিলেন।

গ। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে জেল খাটার দিক থেকে উদ্দীপকের নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার লেখকের সাদৃশ্য রয়েছে। উদ্দীপকে বর্ণিত নেলসন ম্যান্ডেলা বর্ণবৈষম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে আজীবন সোচ্চার ছিলেন। দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি আমরণ সংগ্রাম করেছেন। এজন্য তিনি সুদীর্ঘ সাতাশ বছর জেলের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে দিন কাটিয়েছেন।

বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার লেখক শেখ মুজিবুর রহমানও দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করে দীর্ঘদিন জেল খেটেছেন। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার লেখক শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন আদর্শ দেশপ্রেমিক। দেশ ও দেশের মানুষের মুক্তির জন্য তিনি পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে জেলে গিয়েছেন এবং নানাভাবে অত্যাচারিত হয়েছেন। কোনো রকম চাপ কিংবা প্রলোভনই তাঁকে তাঁর দৃঢ় সিদ্ধান্ত থেকে সরাতে পারেনি। অর্থাৎ,

উদ্দীপকের নেলসন ম্যান্ডেলা এবং ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার লেখক শেখ মুজিবুর রহমান উভয় নেতার জীবনাদর্শ ও কর্মপন্থা মোটামুটি একইরকম। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আত্মত্যাগের দিক থেকে তাঁদের মধ্যে সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

উত্তরের সারবস্তু: মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আত্মত্যাগের দিক থেকে উদ্দীপকের নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার লেখক শেখ মুজিবুর রহমানের সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ। ‘পরিপ্রেক্ষিত ভিন্ন হলেও সংগ্রামী চেতনায় মুজিব-ম্যান্ডেলা এক সূত্রে গাঁথা’— উদ্দীপক ও ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার আলোকে উক্তিটি যথার্থ। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনায় বর্ণিত হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকদের অপশাসন এবং রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন করেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাঁর ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালালেও তিনি পিছু হটেননি।

উদ্দীপকের নেলসন ম্যান্ডেলাও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিরূপ। দুজনের মধ্যেই দেশপ্রেমের আদর্শ ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকে উল্লিখিত নেলসন ম্যান্ডেলা একজন ত্যাগী ও আদর্শিক নেতা। তিনি শাসকগোষ্ঠীর বর্ণবৈষম্য আর নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য তাঁর ওপর নেমে আসে নির্যাতন। দীর্ঘ সাতাশ বছর তাঁকে কারাভোগ করতে হয়।

উদ্দীপকের নেলসন ম্যান্ডেলার সংগ্রামী চেতনার এ দিকটি ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার লেখক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাদৃশ্য তৈরি করে। বঙ্গবন্ধু ও নেলসন ম্যান্ডেলা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণপণ সংগ্রাম করেছেন। নেলসন ম্যান্ডেলা শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়ে সুদীর্ঘ ২৭ বছর জেলের মধ্যে দুর্বিষহ জীবনযাপন করেছেন। বঙ্গবন্ধুকেও জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ সময় কারাগারে অবরুদ্ধ থাকতে হয়েছে।

উভয়ই শোষণ, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেছেন। অর্থাৎ, প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও চেতনাগত দিক থেকে তাঁদের মধ্যে সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।

উত্তরের সারবস্তু: দেশপ্রেম ও সংগ্রামী চেতনা ধারণের দিক থেকে নেলসন ম্যান্ডেলা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একই সূত্রে গাঁথা। উভয়ই শোষণ, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেছেন। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।


🔆🔆 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন: বায়ান্নর দিনগুলো
🔆🔆 অনুধাবন প্রশ্ন: বায়ান্নর দিনগুলো


সৃজনশীল প্রশ্ন ০২: মিছিলটা তখন মেডিকেলের গেট পেরিয়ে কার্জন হলের কাছাকাছি এসে গেছে। তিনজন আমরা পাশাপাশি হাঁটছিলাম। রাহাত স্লোগান দিচ্ছিল। আর তপুর হাতে ছিল একটা মস্ত প্ল্যাকার্ড। তার ওপর লাল কালিতে লেখা ছিল, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। মিছিলটা হাইকোর্টের মোড়ে পৌঁছুতে অকস্মাৎ আমাদের সামনের লোকগুলো চিৎকার করে পালাতে লাগল চারপাশে। ব্যাপারটা কী বুঝবার আগেই চেয়ে দেখি, প্ল্যাকার্ডসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে তপু। কপালের ঠিক মাঝখানটায় গোল একটা গর্ত। আর সে গর্ত দিয়ে নির্ঝরের মতো রক্ত ঝরছে তার।

ক. রেণুর পুরো নাম কী?
খ. ‘আমরা অনশন ভাঙব না’— উক্তিটি বুঝিয়ে দাও।
গ. “উদ্দীপকের সাথে পাঠ্য বইয়ের ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ শীর্ষক আত্মজীবনীমূলক রচনার পটভূমিগত অভিন্নতা রয়েছে।”— মন্তব্যটি যাচাই করো।
ঘ. উদ্দীপকে গল্পকথকের জবানীতে বর্ণিত মহান একুশের ভাষাচিত্রটির সাথে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনাটির কথক ও কাহিনির ভিন্নতাও রয়েছে’— তোমার মতামতসহ মন্তব্যটি যাচাই করো।

২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক। রেণুর পুরো নাম — শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব।

খ। প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন ধর্মঘট পালন করে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জেলে বন্দি ছিলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গী ছিলেন জনাব মহিউদ্দিন আহমদ। রাজবন্দিদের বিনা বিচারে আটক রাখার প্রতিবাদে তাঁরা অনশন ধর্মঘট পালন করেন এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে অনশন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তাই আলোচ্য উক্তিতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের জন্য লেখকের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে।

উত্তরের সারবস্তু: প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন ধর্মঘট পালন করে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে।

গ। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ শীর্ষক আত্মজীবনীমূলক রচনার পটভূমি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, যা উদ্দীপকেরও পটভূমি । ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনায় ১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেলজীবন এবং কারামুক্তির ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। বিনা বিচারে রাজবন্দিদের আটক রাখার প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু অনশন ধর্মঘট শুরু করেন।

তাঁর স্মৃতিচারণার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, অনশনকালে জেল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও আচরণ, নেতাকর্মীদের সাথে সাক্ষাৎ এবং তাঁদের কাছে বার্তা পৌঁছানোর নানা কৌশল সম্পর্কে। তবে এসব কিছুর মাঝেও আছে আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন তথা একুশে ফেব্রুয়ারি তারিখে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলির খবর। আর এই ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ফুটে উঠেছে আলোচ্য উদ্দীপকে।

উদ্দীপকে সরাসরি ভাষা আন্দোলনের ঘটনা বিবৃত হয়েছে। তপু আর তার বন্ধুরা ছাত্র-জনতার ভিড়ে মিশে ভাষার দাবিতে মিছিল করে। পুলিশ মিছিলে গুলি চালালে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এমন অবস্থায় হঠাৎ আবিষ্কৃত হয় মাটিতে লুটিয়ে পড়া তপুর দেহ। তপুর মাথায় গুলি লাগে। আর সেই গুলি লাগার স্থান থেকে অবিরল ধারায় বেরিয়ে আসে রক্ত।

উদ্দীপকের ঘটনাবর্তে উঠে আসা ভাষা আন্দোলনে আত্মাহুতির দিকটি আলোচ্য রচনার মধ্যেও উচ্চারিত হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সাথে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ শীর্ষক আত্মজীবনীমূলক রচনার পটভূমিগত অভিন্নতা রয়েছে।

উত্তরের সারবস্তু: ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ শীর্ষক আত্মজীবনীমূলক রচনার পটভূমি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, যা উদ্দীপকেরও পটভূমি।

ঘ। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনা এবং উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার প্রেক্ষাপট ১৯৫২ সাল। এই সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাবন্দি থেকেও শাসকদের অন্যায়- অত্যাচারের প্রতিবাদে আমরণ অনশন করেন। দেশ ও জাতীর কল্যাণে তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ।

উদ্দীপকে তপু চরিত্রের মধ্য দিয়ে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে শহিদদের আত্মদানের দিকটিই মূর্ত হয়ে উঠেছে। উদ্দীপকে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করা হয়েছে। এখানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা দাবিতে বাংলার দামাল ছেলেদের আত্মদানের কথা বর্ণিত হয়েছে। কথক, রাহাত ও তপু চরিত্রের মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তপুর মতো সাহসী যুবকদের আত্মদানের বিনিময়ে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেয়েছে। উদ্দীপক ও ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনার প্রেক্ষাপট অভিন্ন হলেও ঘটনাপ্রবাহের ভিন্নতা রয়েছে।

উদ্দীপকে কাহিনির কেন্দ্রে আছে তপু নামক এক যুবক, যে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছে। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনাটির লেখক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কাহিনির কেন্দ্রে আছেন বঙ্গবন্ধু নিজেই এবং এর পটভূমি ১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন, তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর অপশাসন ও অবিচারে বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর প্রতিবাদ।

১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধু কারাগারে আটক ছিলেন। বিনা বিচারে রাজবন্দিদের আটকে রাখার প্রতিবাদে তিনি অনশন ধর্মঘট পালন করেন। অনশন চলাকালে জেল কর্তৃপক্ষের আচরণ এবং তাদের কার্যাবলিও কাহিনির অন্তর্গত। অনশনের কারণে বঙ্গবন্ধুর জীবন যখন সংশয়ের মুখে পড়ে, তখন তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত হয়ে ত্যাগ স্বীকার করার এ দিকটি উদ্দীপকের কাহিনিচিত্রেও পরিলক্ষিত হয়। তবে রচনার পটভূমি, কথকের অবস্থান এবং মূল চরিত্রের পরিণতিতে ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। সেদিক বিবেচনায় প্রশ্নে উল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকে কাহিনির কেন্দ্রে রয়েছে তপু নামক এক যুবক, যে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছে। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনাটির লেখক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধু কারাগারে আটক ছিলেন। অর্থাৎ উদ্দীপক ও ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ উভয় রচনার পটভূমিতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের বিষয়টি উঠে এলেও কথক ও কাহিনির ভিন্নতা আছে দুটি ক্ষেত্রে।


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের যে কোন আপডেট মিস করতে না চাইলে ফেসবুক ও ইউটিউবে সাবক্রাইব করে আমাদেস দাথে কানেক্ট থাকতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।