আমার বাড়ি কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

আমার বাড়ি কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

আমার বাড়ি কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর: ‘আমার বাড়ি’ কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীনের ‘হাসু’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় কবি তাঁর প্রিয়জনকে নিজের গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছেন।

বন্ধু কবির বাড়িতে গেলে কবি তাকে শালিধানের চিড়া, বিন্নিধানের খই, বাড়ির গাছের কবরী কলা এবং গামছা-বাঁধা দই দিয়ে আপ্যায়ন করাবেন। প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেমন করে অতিথির প্রাণ জুড়াবে তারও নিবিড় বর্ণনা রয়েছে কবিতাটিতে। এ ছাড়াও কবি বলেন তিনি বন্ধুর সঙ্গে সারা দিন খেলা করবেন। কবি বন্ধুকে বলেছেন কোন পথে তাঁর বাড়ি যেতে হবে, কীভাবে বাড়ি চিনতে হবে।


আমার বাড়ি কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ১। ‘গাই দোহনের শব্দ শুনি জেগো সকালবেলা’ উক্তিটিতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: “গাই দোহনের শব্দ শুনি জেগো সকালবেলা’- উক্তিটির মধ্য দিয়ে বাংলার পল্লি মানুষের জীবনের সকাল বেলার কর্মব্যস্ততার কথা বোঝানো হয়েছে। গ্রামবাংলার মানুষ খুব সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠে। ঘুম থেকে উঠেই তারা নিত্যদিনের কাজকর্ম শুরু করে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বাড়িতে গরু পালন করে। সকালে উঠে তারা গরুর দুধ দোহন করে। আলোচ্য চরণের মাধ্যমে কবি গ্রামবাংলার শ্রমজীবী মানুষের এই কর্মব্যস্ততার কথা বোঝাতেই উক্তিটি করেছেন।

প্রশ্ন ২। ‘আমার বাড়ি যাইও ভোমর’- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: ‘আমার বাড়ি যাইও ডোমর’- উক্তিটির মধ্য দিয়ে কবির প্রিয়জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ডোমর কথাটি ভ’র্মরের কথ্যরূপ। কবিতাটিতে কোনো বন্ধু বা প্রিয়জনকে ডোমর বলে সম্বোধন করেছেন কবি। তিনি আমার বাড়ি যাইও ডোমর বলে বন্ধুকে নিজ বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অর্থাৎ কবি কোনো বন্ধু বা প্রিয়জনকে তাঁর বাড়িতে অতিথি হয়ে বেড়াতে যেতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। উক্তিটির মধ্য দিয়ে এ কথাই প্রকাশ পেয়েছে।

প্রশ্ন ৩। কবি তাঁর বন্ধুকে মৌরী ফুলের গন্ধ শুঁকে থামতে বলেছেন কেন?
উত্তর: কবি বন্ধুকে মৌরী ফুলের গন্ধ শুঁকে থামতে বলেছেন। কারণ যেখানে মৌরি ফুলের গন্ধ পাওয়া যাবে সেখানে তার বাড়ি। কবি বন্ধুকে তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। কোন পথে কবির বাড়ি যেতে হবে তাও তিনি নির্দেশ করে দেন। কবি বন্ধুকে বলেন, যেখানে পথের পাশে মৌরি ফুল ফুটে থাকবে, মৌরি ফুলের গন্ধ বের হবে সেখানেই তাঁর বাড়ি। বন্ধুটি যেন তাই মৌরি ফুলের গন্ধ শুকে সেখানে তার বাহনটি থামায়।

প্রশ্ন ৪। ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় কবি কাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন?
উত্তর: ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় কবি ডোমরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ভ্রমরের কথ্যরূপ ডোমর। কবিতাটিতে কবি ডোমরকে তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আসলে কবি জসীমউদ্দীন কোনো বন্ধু বা প্রিয়জনকে ডোমর বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি প্রিয় মানুষটিকে তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ‘আমার বাড়ি যাইও ভোমর’ চরণটিতে কবির এ আমন্ত্রণই ফুটে উঠেছে।

প্রশ্ন ৫। গাছের শাখা দুলিয়ে বাতাস করব সারা রাতি।’- কবি এ কথা বলেছেন কেন? লেখ।
উত্তর: গাছের শাখা দুলিয়ে বাতাস/করব সারা রাতি- কথাটির মধ্য দিয়ে কবির অতিথিকে সেবা করার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। কবি তাঁর বাড়িতে কোনো প্রিয় বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানান। তিনি বন্ধুটিকে বলেন, সে তার বাড়িতে গেলে শালিধানের চিঁড়া, বিন্নিধানের খই, বাড়ির গাছের কলা, দই ইত্যাদি খেতে দেবেন। রাতে যখন তার বন্ধু ঘুমাবে তখন গাছ শাখা দুলিয়ে সারা রাত বাতাস করবে। অর্থাৎ বাঙালির ঘরে অতিথি এলে শুধু গৃহকর্তা নয়, প্রকৃতিও তার সেবা করে। প্রশ্নোত্ত চরণটির মধ্য দিয়ে এ কথাই প্রকাশ পায়।

প্রশ্ন ৬। ‘চাঁদমুখে তোর চাঁদের চুমো মাখিয়ে দেব সুখে – ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: উদ্ধৃত চরণে কবি বন্ধুর মুখটিকে চাঁদের মুখ বলে সেখানে স্নেহ মাখিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। কবির আমন্ত্রিত বন্ধুটি কবির বাড়ি বেড়াতে এলে কবি তাকে নানাভাবে আপ্যায়ন করার কথা বলেন। কবি বলেন যখন চাঁদ উঠবে তখন আমন্ত্রিত অতিথির চাঁদ মুখে তিনি চাঁদের চুমো অর্থাৎ আদর-স্নেহ মাখিয়ে দেবেন। অর্থাৎ কবির বন্ধুটি চাঁদের জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধতাও উপভোগ করতে পারবে।

প্রশ্ন ৭। কবি সারা দিন আমন্ত্রিত অতিথির সঙ্গে কীভাবে কাটাবেন?
উত্তর: কবি সারা দিন আমন্ত্রিত অতিথির সঙ্গে খেলা করে কাটাবেন। আমন্ত্রিত অতিথি যেহেতু কবির বন্ধু তাই তিনি বলেন যখন বন্ধু তাঁর বাড়িতে বেড়াতে যাবে তিনি তাকে সঙ্গে নিয়ে সারা দিন খেলাধুলা করবেন। সারা দিন খেলা করার মধ্য দিয়ে কবি কিশোরসুলভ আনন্দ লাভের কথাই বলেছেন। কারণ শিশু-কিশোররা সারা দিন হৈ-হুল্লোড় করে খেলতে ভালোবাসে ।

প্রশ্ন ৮। কাজলা দিঘি সম্পর্কে কবি কী বলেছেন?
উত্তর: কাজলা দিঘি সম্পর্কে কবি বলেছেন যে তার জল কালো। কাজলের মতো কালো হওয়ায় কবি কাজলা দিঘির জলকে কাজল জল বলেছেন। কাজলাদিঘির কাজল কালো জলে হাঁস খেলা করে। কবি কাজলাদিঘির সৌন্দর্য প্রকাশ করেছেন বন্ধুর কাছে যাতে কবির বন্ধু তাঁর বাড়িতে বেড়াতে আসে। কবি মনে করেন তাঁর বন্ধু এই সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হবে।

প্রশ্ন ৯। আমার বাড়ি যাইও ভোমর, এই বরাবর পথ— বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: আমার বাড়ি যাইও ভোমর/ এই বরাবর পথ- চরণটির মধ্য দিয়ে কবি তাঁর বন্ধুকে তাঁর বাড়ির পথনির্দেশ করে দেন। কবি জসীমউদ্দীন বন্ধুকে তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। বাড়ি যেতে হলে কবির বন্ধুকে পথ চিনতে হবে। কবি তাই বন্ধুকে পথনির্দেশ করেন যে এই বরাবর গেলে তাঁর বাড়ি। কবি আলোচ্য চরণটির মধ্য দিয়ে নিজের বাড়ির পথনির্দেশ করেছেন।

প্রশ্ন ১০। ‘আমার বাড়ি’ কবিতার মধ্য দিয়ে কবি কোন বিষয়টি প্রকাশ করতে চেয়েছেন?
উত্তর: ‘আমার বাড়ি’ কবিতার মধ্য দিয়ে কবি বাঙালির আতিথেয়তার বিষয়টি প্রকাশ করতে চেয়েছেন। বাঙালি চিরকাল অতিথির সেবা করতে ভালোবাসে। যুগ যুগ ধরে বাঙালির অতিথি সেবার সুনাম রয়েছে। অতিথি ঘরে এলে বাঙালি গৃহকর্তার সঙ্গে সঙ্গে বাংলার প্রকৃতিও যেন আনন্দিত হয়। প্রকৃতি তার ফুল-ফল-জল দিয়ে অতিথির সেবা করে। কবি ‘আমার বাড়ি কবিতার মধ্য দিয়ে এ বিষয়টিই প্রকাশ করতে চেয়েছেন।


🔆🔆 আরও দেখুন: আমার বাড়ি কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
🔆🔆 আরও দেখুন: আমার বাড়ি কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
🔆🔆 আরও দেখুন: আমার বাড়ি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের যে কোন আপডেট মিস করতে না চাইলে ফেসবুক ও ইউটিউবে সাবক্রাইব করে আমাদের সাথে কানেক্ট থাকতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।

About মেরাজুল ইসলাম

আমি মেরাজুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পাশাপাশি একজন ব্লগার। এডুকেশন এর প্রতি ভালোবাসাও অনলাইল শিক্ষার পরিসর বাড়ানোর জন্য এডুকেশন ব্লগের পথচলা। ব্লগিং এর পাশাপাশি আমি ওয়েবসাইট ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, কাস্টমাইজ সহ ওয়েব রিলেটেড সকল কাজ করি।

View all posts by মেরাজুল ইসলাম →