তোমাকে পাওয়ার জন্যে

SSC: তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল: ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ শীর্ষক কবিতাটি ‘শামসুর রাহমানের শ্রেষ্ঠ কবিতা’ নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতাটি কবির ‘বন্দী শিবির থেকে’ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।

স্বাধীনতা অর্জনে আপামর বাঙালির সংগ্রামী চেতনা এবং তাদের মহান আত্মত্যাগের মহিমা তুলে ধরা। ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে সর্বস্তরের বাঙালি নারী-পুরুষের সংগ্রামী চেতনা এবং তাদের মহান আত্মত্যাগের মহিমাকে তুলে ধরা হয়েছে।

এ কবিতায় বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। তারা এদেশের নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা চালায়। ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ এদেশের সাধারণ মানুষকে তারা নির্বিচারে হত্যা করে, আগুন দিয়ে মানুষের ঘরবাড়ি-বস্তি পুড়িয়ে দেয়। তাদের নির্মমতায় সাকিনা বিবির মতো নারীদের সহায়-সম্বল-সম্ভ্রম সবকিছু বিসর্জিত হয়।

হরিদাসীর মতো নারীরা স্বামী হারান। শিশুরা মা-বাবাকে হারায়। এদেশের নিরীহ মানুষ সগীর আলী, কেষ্ট দাস, মতলব মিয়া, রুস্তম শেখও তাদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। কবি এদের নাম ও পেশার কথা কবিতায় উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

কবি স্বাধীনতার কাছে জানতে চেয়েছেন— এত রক্ত, এত ত্যাগের পরও কি সে আসবে না? তার আসতে হলে কি আরও রক্ত লাগবে? লাশ লাগবে? আগুনে পোড়া ঘরের খুঁটি ধরে মোল্লাবাড়ির বিধবার প্রতীক্ষার প্রহর কি শেষ হবে না?

অনাথ কিশোরীর শূন্য থালায় ক্ষুধার অন্ন সংস্থানের উপায় হিসেবে কি সে আসবে না? তাকে অবশ্যই আসতে হবে। আত্মবিশ্বাসী কবি তাই চারদিকে দামামা বাজিয়ে, নিশান উড়িয়ে স্বাধীনতার আগমনের নিশ্চয়তার বাণী শোনান স্বাধীনতাকামী এদেশের সব মানুষকে।


এসএসসি বাংলা ১ম পত্রের সকল গদ্য ও কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: সুভা
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: বইপড়া
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: আম আঁটির ভেঁপু
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: মানুষ মুহাম্মদ (সাঃ)
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: নিমগাছ
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: প্রবাস বন্ধু
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: মমতাদি
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: সাহিত্যের রুপ ও রীতি
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: একাত্তরের দিনগুলি
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: বঙ্গবানী
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: কপোতাক্ষ নদ
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: জীবন-সঙ্গীত
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: মানুষ
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: পল্লিজননী
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: রানার
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: আমার পরিচয়
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো


তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল

সৃজনশীল ০১: মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিত দেশমাতৃকার দুর্দিনে অন্য বন্ধুদের সাথে যুদ্ধে যোগ দিল। পাক সেনাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপারেশনে সফল নেতৃত্ব দিল। একদিন সম্মুখ যুদ্ধে শত্রুর বুলেটের আঘাতে দেহ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেল। বন্ধুরা তার মৃতদেহ বাড়িতে আনলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হলো। কিন্তু তার বৃদ্ধ মা একটুও বিচলিত না হয়ে সবাইকে লক্ষ্য করে বললেন, “দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা গৌরব ও সম্মানের। সকলের ত্যাগের বিনিময়েই দেশ একদিন স্বাধীন হবে।”

ক. অবুঝ শিশু কোথায় হামাগুড়ি দিল?
খ. ‘তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা’— কবির এই দৃঢ় উত্তির কারণ বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে মায়ের উক্তিতে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে— মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক। অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতা-মাতার লাশের ওপর।

খ। প্রশ্নোক্ত পঙ্ক্তিটিতে কবি বাঙালির জন্মগত অধিকার স্বাধীনতা অর্জনের দিকটি তুলে ধরেছেন।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালায়। তারা আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। কবি সেই ধ্বংস আর হত্যাযজ্ঞের মধ্যেও অবলোকন করেন নবীন রক্তের প্রাণস্পন্দন ও আশা। তাই তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেন— এত আত্মত্যাগ যার উদ্দেশ্যে সেই স্বাধীনতাবে ঙালি একদিন ছিনিয়ে আনবেই।

গ। ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রকাশিত স্বাধীনতার জন্য বাংলার মানুষের সুমহান আত্মত্যাগের দিকটির সঙ্গে উদ্দীপকটির সাদৃশ্য রয়েছে।

যুগে যুগে বাঙালি জাতি নানা বিদেশি শত্রুর কাছে শোষিত নির্যাতিত হয়েছে। সবশেষে এ জাতির ওপর আগ্রাসন চালিয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। তারা বাঙালিকে দমিয়ে রেখে নিজেদের স্বার্থান্বেষী শাসন কায়েম করতে চেয়েছিল। কিন্তু বীর বাঙালি তাদের পরাজিত করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে।

উদ্দীপকে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিত পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সে শহিদ হয় এবং সহযোদ্ধারা তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে। তার বৃদ্ধা মা ছেলের আত্মত্যাগের জন্য গর্ববোধ করেছেন। ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায়ও স্বাধীনতার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। কবি এখানে দেখিয়েছেন স্বাধীনতা আসবে বলে হরিদাসীর সিঁথির সিঁদুর মুছে যায়, সাকিনা বিবির কপাল ভাঙে। ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হয়। পিতামাতার লাশের ওপর ওবুঝ শিশু হামাগুড়ি দেয়। স্বাধীনতার জন্য বাঙালিকে এমনই আত্মত্যাগ করতে হয়। কবিতার এ দিকটির সঙ্গেই উদ্দীপকটির সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ। উদ্দীপকে মায়ের উক্তিতে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে— মন্তব্যটি যথার্থ। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়ায়। অবশেষে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বপ্নের স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনতে এদেশের অগণিত মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে অমিত যুদ্ধে গিয়ে শহিদ হয়। সহযোদ্ধারা তার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে এলে বৃদ্ধা মা উদ্দীপকে দেখা যায়, তা দেখে শোকাকুল না হয়ে ছেলের এমন বীরোচিত মৃত্যুতে গর্ববোধ করেন এবং বলেন, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা গৌরব ও সম্মানের। সবার ত্যাগের বিনিময়েই একদিন এদেশ স্বাধীন হবে। অমিতের মায়ের এ উক্তিতে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখা যায়। কারণ এ কবিতায় কবি বলেছেন এ দেশের সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের কথা, যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। কবি তাই মনে করেন স্বাধীনতাকে বাঙালি এক দিন ছিনিয়ে আনবেই।

‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি দেখিয়েছেন স্বাধীনতার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত। সেই সঙ্গে নবীন রক্তে প্রাণস্পন্দন ও আশা জেগে থাকতে দেখে কবি দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেন যার উদ্দেশ্যে এত আত্মত্যাগ সেই স্বাধীনতাকে একদিন আসতেই হবে। উদ্দীপকের মায়ের কথায় কবির এ আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে। এসব বিচারে মন্তব্যটি যথার্থ বলা যায়।

সৃজনশীল ০২: ১১ অক্টোবর, সোমবার, ১৯৭১। হঠাৎ করে ভারী অস্ত্র ও গোলা-বারুদ নিয়ে গাজীপুরা গ্রামে প্রবেশ করে একদল মিলিটারি। গ্রামে ঢুকে তারা প্রথমে বাজার ও দোকানপাট পুড়িয়ে দেয়। নির্বিচারে গুলি চালায় সাধারণ মানুষের ওপর। গুলি খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে যায় অনেক মানুষ। অনেকে গুরুতর আহত হয়। আতঙ্কে জীবন বাঁচাবার জন্য কেউ কেউ পালাবার চেষ্টা করে। অনেককে তারা ধরে নিয়ে যায় ক্যাম্পে। সে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি, যা এখনও সেই গ্রামের মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়।

ক. শামসুর রাহমানের কবিতায় সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে কী?
খ. ‘সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা আলোচনা কর ।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক। শামসুর রাহমানের কবিতায় মধ্যবিত্ত নাগরিক জীবনের প্রত্যাশা, হতাশা, বিচ্ছিন্নতা, বৈরাগ্য ও সংগ্রাম সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

খ। ‘সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল’ বলতে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে সম্ভ্রম হারানো সাকিনা বিবির জীবনে মহা দুর্যোগ নেমে আসাকে বোঝানো হয়েছে।

‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এদেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের মহিমা তুলে ধরেছেন। এ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। তাদের সেই অত্যাচারের শিকার হয়েছে সাকিনা বিবি। স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য সাকিনা বিবির মতো গ্রামীণ নারীর . সহায়-সম্বল-সম্ভ্রম বিসর্জিত হয়েছে। কবি এখানে সাকিনা বিবিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

গ। উদ্দীপকে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতনের দিকটি ফুটে উঠেছে।  ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন চালায়।

তারা এদেশের নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাঙালির মন থেকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল। উদ্দীপকে মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। এখানে ১৯৭১ সালের ১১ অক্টোবর ভারী অস্ত্র ও গোলা-বারুদ নিয়ে গাজীপুরা গ্রামে একদল মিলিটারির হত্যাযজ্ঞ চালানোর কথা বলা হয়েছে। তাদের অত্যাচার থেকে গ্রাম ছেড়ে পালাতে গিয়ে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়।

উদ্দীপকের এই চিত্রটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রতিফলিত জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক নিয়ে এদেশের মানুষের ওপর দানবীয় অত্যাচার চালানোর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবি এখানে সাকিনা বিবির কপাল ভাঙার, হরিদাসীর সিঁথির সিঁদুর মুছে যাওয়া, ভগ্নস্তূপে দাঁড়িয়ে কুকুরের আর্তনাদ, পিতা-মাতার লাশের উপর অবুঝ শিশুর হামাগুড়ি দেওয়া, সগীর আলী, কেষ্ট দাস, মতলব মিয়া, রুস্তম শেখ প্রমুখের মৃত্যুর কথা বলে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দিয়েছেন। এভাবে উদ্দীপকটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ ।

ঘ। “উদ্দীপকটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।”- মন্তব্যটি যথার্থ। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল।

সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা এদেশের মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়। বাঙালিরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তাদের রুখে দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। : উদ্দীপকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কিছু সদস্যের আক্রমণে গাজীপুরা গ্রামের মানুষের জীবনে নির্মমতা নেমে আসার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। সেই হত্যাযজ্ঞের কথা ঐ গ্রামের বেঁচে যাওয়া মানুষেরা আজও ভুলতে পারে না। এই বিষয়টি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার একটি বিশেষ দিককে নির্দেশ করে।

এ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনের দিকটি উদ্দীপকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই বিষয়টি ছাড়াও কবিতায় স্বাধীনতা অর্জনের জন্য এদেশের সর্বস্তরের মানুষের আত্মত্যাগের বিষয়, নারী নির্যাতন, শিশু ও বৃদ্ধের প্রতি নির্মমতার দিক প্রতিফলিত হয়েছে, যা উদ্দীপকে নেই।

‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় উদ্দীপকের বিষয় ছাড়াও স্বাধীনতার জন্য অধীর প্রতীক্ষা, রাইফেল কাঁধে তেজী তরুণ যোদ্ধার ঘুরে বেড়ানো, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত ঘোষণা হয়ে, নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে স্বাধীনতার আগমনের স্বপ্ন ইত্যাদি রয়েছে। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল ০৩: শহরের এক বড়লোক ব্যবসায়ী ‘খামারবাড়ি’ করার জন্য গ্রামে কিছু জমি কিনলেন। সেখানে তিনি গোমস্তা লাগিয়ে কলের লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ করান, গরু-ছাগল পালন করান, মাছ চাষ করান- আরো কত কি। এক সময় তিনি বললেন, ‘আমি পুরো গ্রাম কিনে নিয়েছি, তোমাদেরকে বাড়ি-ঘর ছাড়তে হবে। একদিন তিনি শহর থেকে গুন্ডা এনে ঘর-বাড়ি দখল করতে এলেন। কিন্তু গ্রামবাসী একজোট হয়ে জীবন বাজি রেখে তা প্রতিহত করে। গুন্ডারা পালিয়ে গেলেও গ্রামের অনেকে এতে আহত হয়। তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ- জীবন দিয়ে হলেও বাপ-দাদার ভিটা অন্য কাউকে দখল করতে দেবে না।

ক. জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক কীভাবে এলো?
খ. ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো কেন?
গ. উদ্দীপকের বড়লোক ব্যবসায়ী ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় উল্লিখিত কাদের প্রতিনিধি? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের গ্রামবাসীদের চেতনা ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত কবিচেতনারই প্রতিচ্ছবি”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক। জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক দানবের মতো চিৎকার করতে করতে এলো।

খ। স্বাধীনতার শত্রুদের নির্মম আক্রমণে ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো। বাংলার মানুষ স্বাধীনতার জন্য দিনের পর দিন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাদের অত্যাচার আর শোষণ চিরস্থায়ী করতে এদেশের মানুষকে হত্যা আর সম্পদ ধ্বংসের উৎসবে মেতে উঠেছিল। তাদের লেলিয়ে দেওয়া হানাদার সেনারা অতর্কিত সারা দেশে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখে। কামানের গোলা আর অগ্নিকাণ্ডে তারা সারা দেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। তাদের সেই ধ্বংসযজ্ঞে ছাত্রাবাস ও বস্তি উজাড় হয়।

গ। উদ্দীপকের বড়লোক ব্যবসায়ী ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় উল্লিখিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রতিনিধি। পাকিস্তান জন্মের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশকে নানাভাবে শাসন-শোষণ করেছে। বাঙালিরা নিজেদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে, প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলেছে।

অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সেনারা নির্মম অত্যাচার ও হত্যাকাণ্ড চালায়। এর প্রতিবাদে বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশ স্বাধীন করে।

উদ্দীপকে শহরের এক বড়লোক ব্যবসায়ীর নিম্নশ্রেণির মানুষের অধিকার হরণ ও অত্যাচার-নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি ‘খামারবাড়ি’ করার নাম করে গ্রামের কিছু জমি কেনে এবং নিজের লোক দিয়ে সেখানে গরু-ছাগল পালন, মাছ চাষ প্রভৃতি করতে থাকেন। একসময় গ্রামের সমস্ত জমি কিনে নিয়েছেন ঘোষণা দিয়ে গ্রামের মানুষদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বলেন।

বড়লোক ব্যবসায়ীর এই অমানবিকতা ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অমানবিকতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তারাও এদেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এভাবে উদ্দীপকের বড়লোক ব্যবসায়ী কবিতায় উল্লেখিত পাকিস্তানি বাহিনীর প্রতিনিধি হয়ে উঠেছে।

ঘ। “উদ্দীপকের গ্রামবাসীদের চেতনা ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত কবিচেতনারই প্রতিচ্ছবি”- মন্তব্যটি যথার্থ। যুগে যুগে পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় নানাভাবে বর্বর শাসক-শোষকরা নিরীহ মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়েছে।

কিন্তু যখন নির্যাতিতরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে তখন কোনো শাসকগোষ্ঠীই তাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি। শেষপর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ শক্তি ও সংগ্রামী চেতনারই জয় হয়েছে।

উদ্দীপকে এক বড়লোক ব্যবসায়ী গ্রামের সব জমি তিনি কিনে নিয়েছেন বলে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীকে তাড়াতে চেয়েছেন। কিন্তু গ্রামবাসী তার কথায় গ্রাম ছেড়ে চলে না গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অন্যায়কারী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে এবং জীবন বাজি রেখে ..তাদের ভিটেমাটি রক্ষা করার জন্য রুখে দাঁড়িয়েছে। এই বিষয়টি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রতিফলিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার এবং তাদের বিরুদ্ধে বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

‘তোমাকে. পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি স্বাধীনতা অর্জনে এদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ চেতনা এবং আত্মত্যাগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এ বিষয়টি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে। গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে বড়লোক ব্যবসায়ীর অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে এবং জীবন বাজি রেখে নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষা করেছে। এ দিক থেকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ। এছাড়াও আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে ফেসবুকে কানক্ট থাকতে পারেন।

ssc suggestion 2022