এশার নামাজ কয় রাকাত

এশার নামাজ কয় রাকাত? এশার নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

এশার নামাজ কয় রাকাত: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে এশার নামাজ সবার শেষে, অর্থাৎ রাতে আদায় করা হয়। এশার নামাজে ফরজ, সুন্নত, নফল, ও বেতের সহ মোট ১৭ রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। আজকের আর্টিকেলে এশার নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।

এশার নামাজ কয় রাকাত?

বেতের নামাজ সহ এশার নামার মোট ১৭ রাকাত, তবে অনেকের মতে বেতের নামাজ এশার নামাজের অংশ নয়। করণ এশার নামাজের অনেক পড়েও রেতের নামাজক আদায় যায়। আমারা বেতের সহ ১৭ রাকাত সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

  • এচার – রাকাত সুন্নত।
  • চার – রাকাত ফরজ।
  • দুই – রাকাত সুন্নত।
  • দুই – রাকাত নফল।
  • তিন – রাকাত বেতর।
  • দুই – রাকাত নফল।

এশার নামাজের সময়

রাতের এক-তৃতীয়াংশের শেষের দিকে এশার নামাজ পড়া উত্তম। অর্থাৎ এশার সময় হওয়ার সোয়া এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরে এশার নামাজ পড়া। (আল-বাহরুর রায়েক : ১/৪৩০)

এশার মকরুহ সময়

বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া মধ্যরাতের পর এশা পড়া মকরুহ। রোগীর সেবা শরিয়ত অনুমোদিত প্রয়োজনের মধ্যে গণ্য হতে পারে। কিন্তু ওয়াজ মাহফিল প্রয়োজনের মধ্যে গণ্য হবে না। তাই ওয়াজ মাহফিলেও যথাসময়ে এশার নামাজ আদায় করা জরুরি। (আল-বাহরুর রায়েক : ১/৪৩১)

এশার নামাজের নিয়ত

অন্য সকল নামাজের নিয়ত এর মতই এশার নামাজের নিয়ত একই। শুধু মাত্র নামাজের নাম ও রাকাত পরিবর্তন হবে। নিচে উদাহরন সহ উল্লেখ করা হলো, এতে আপনারা খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।

ফজরের ফরজ নামাজের নিয়ত: “নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকয়াতাই সালাতিল ফজরের ফারদুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।”

এশার ফরজ নামাজের নিয়ত: “নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকয়াতাই সালাতিল এশাই ফারদুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।”

উপরের নিয়ত গুলো লক্ষ করলে দেখতে পারবেন শুধুমাত্র নামাজের নাম এবং ৪ রাকাত নামাজের ক্ষেত্র রাকয়াতাই এর আগে আরবাআ যুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ, চার রাকাত নামাজে আরবাআ রাকয়াতাই ব্যবহার করতে হবে।

এশার নামাজের নিয়ম

এশার ফরজ (আবশ্যিক) নামায ৪ রাকাত, যা সব মুসলিম’কেই পড়তে হয়। ফরজ অংশটি ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করতে হয় তবে একান্তই কোনো অসুবিধা থাকলে নিজে নিজে পড়ে নেয়া যায়। তবে জামাতের সাথে পড়লে সাতাশ গুন বেশি সওয়াব।

এর পূর্বে ৪ রাকাত সুন্নাহ নামাজ রয়েছে। এটি ঐচ্ছিক নামাজ (সুন্নাতে যায়েদা বা গায়েরে সুন্নাত এ মুয়াক্কাদাহ ও বলা হয়)। এটিও পড়তে উৎসাহিত করা হয় এবং সময় থাকলে পড়া উচিত, তবে না পড়লে গুনাহ হবে না।

ফরয ৪ রাকাতের পর ২ রাকাত সুন্নাহ নামায পড়তে হয় যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত (সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ) এবং নবীজী তার জীবদ্দশায় এটি কখনো ছাড়েননি।

তারপর, কেউ কেউ ২ রাকাত নফল নামায পড়ে থাকেন যার কোন দলিল পাওয়া যায়নি। আসলে, নফল নামাযসমূহ নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত দিনরাতের যেকোন সময় পড়া যায়। শুধু’যে ২ রাকাতই পড়তে হবে, ব্যপারটা এমন নয়।

এরপরের নামাজটি হল বিতরের নামায তবে এটার সাথে এশার নামাযের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এটা ঘুম থেকে শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ নামাযের পর পড়া উত্তম। তবে যারা ঠিকমত ঘুম থেকে জাগতে পারেন না, তাদের জন্য উচিত হবে এশার নামাযের পরপরই পড়ে নেওয়া। হাদিস মতে, বিতরের নামাজ ১ রাকাত, ৩ রাকাত, ৫ রাকাত, ৭ রাকাত পড়া যায়।

এরপর, কেউ কেউ ২ রাকাত নফল নামায পড়ে থাকেন যার কোন দলিল পাওয়া যায়নি। আসলে, নফল নামাযসমূহ নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত দিনরাতের যেকোন সময় পড়া যায়। শুধু’যে ২ রাকাতই পড়তে হবে, ব্যপারটা এমন নয়।

এশার বেতের নামাজ পড়ার নিয়ম

বিতর নামাজ প্রায় অন্য ফরজ নামাজের মতো। তবে নিয়মের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও খুবেই সহজ। সে ক্ষেত্রে দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসবে এবং তাশাহহুদ পড়বে। কিন্তু সালাম ফেরাবে না। এরপর তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে সুরা ফাতিহা পড়বে। এরপর অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মিলাবে। কিরাত (সুরা বা অন্য আয়াত মিলানোর পর) শেষ করার পর তাকবির বলে দুহাত কান পর্যন্ত উঠাবে। এবং তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধবে। তারপর নিঃশব্দে (অনুচ্চ স্বরে) দোয়া কুনুত পড়বে। দোয়া কুনুত পড়ে আগের মতো রুকু-সিজদা করবে। তারপর শেষ তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।

এশার নামাজের ফজিলত

এশা ও ফজরের নামাজের জামাতের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে এ দুই সময়ে মানুষ সাধারণত পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায় ও বিশ্রাম করে। ফলে এই দুই ওয়াক্তে জামাতে শরিক হতে যথেষ্ট অবহেলা ও গাফিলতি হয়ে থাকে। এ জন্য হাদিসে বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে।

অর্ধেক রাত ইবাদত করার সওয়াব

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত (নফল) নামাজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করল সে যেন সারা রাত জেগে নামাজ আদায় করল।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৭)

মুনাফিকের তালিকা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফিকদের জন্য ফজর ও এশার নামাজের চেয়ে অধিক ভারী কোনো নামাজ নেই। এ দুই নামাজের ফজিলত যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৫৭)

উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একবার মহানবী (সা.) আমাদের ফজরের নামাজ পড়িয়েছেন। সালাম ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করেন, অমুক কি আছে? লোকেরা বলল, নেই। তারপর আরেকজনের নাম নিয়ে জিজ্ঞেস করেন, অমুক কি আছে? লোকেরা বলল, নেই। তিনি বলেন, এ দুই নামাজ (এশা ও ফজর) মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন। তোমরা যদি জানতে যে এই দুই নামাজে কী পরিমাণ সওয়াব আছে, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে শরিক হতে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫৫৪)

এই আর্টিকেল টি অনলাইনের বিভিন্ন সোর্স থেকে কালেক্ট করে লেখা। তাই এই আর্টিকেলের ক্রেডিট বা কপিরাইট ওনার পিডিএফ মেলা নয়।

আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ। এছাড়াও আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে ফেসবুকে কানক্ট থাকতে পারেন।