জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান করা (মাত্র ১ মিনিটে)

জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান করা

জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান করা: আপনি কি আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য দেখতে চাচ্ছেন বা জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান করতেছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেল টি আপমার জন্য। আজকের আর্টিকেলে জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান করা সহ জন্ম নিবন্ধন কি, জন্ম নিবন্ধন করা কেন জরুরি, জন্ম নিবন্ধন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ জন্ম নিবন্ধন সম্পৃক্ত সকল বিষয়ে আলোচনা করা হবে। কথা না বাডিয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।


জন্ম নিবন্ধন কি?

জন্ম নিবন্ধন হলো জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের২৯ নং আইন) এর আওতায় একজন মানুষের নাম, লিঙ্গ, জন্মের তারিখ ও স্থান, বাবা-মায়ের নাম, তাদের জাতীয়তা এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারিত নিবন্ধক কর্তৃক রেজিস্টারে লেখা বা কম্পিউটারে এন্ট্রি প্রদান এবং জন্ম সনদ প্রদান করা।

জন্ম নিবন্ধন করা কেন জরুরি?

জন্ম সনদ হলো একজন মানুষের জন্ম, বয়স, পরিচয় ও নাগরিকত্বের প্রমাণ। রাষ্ট্রের স্বীকৃত নাগরিকের মর্যাদা ও সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে হলে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক। জেনে নিন কোন কোন কাজে জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজন হয়-

  • পাসপোর্ট ইস্যু
  • বিবাহ নিবন্ধন
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি
  • সরকারি-বেসরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় নিয়োগদান
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু
  • ভোটার তালিকা প্রণয়ন
  • জমি রেজিষ্ট্রেশন
  • ব্যাংক হিসাব খোলা
  • আমদানি ও রপ্তানী লাইসেন্স প্রাপ্তি
  • গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি
  • ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি
  • ঠিকাদারী লাইসেন্স প্রাপ্তি
  • বাড়ির নকশা অনুমোদন প্রাপ্তি
  • গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন
  • ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি
  • বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ
  • শিশু শ্রম প্রতিরোধ ও
  • জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তি।

জন্ম নিবন্ধন না করলে যেসব সমস্যায় পড়তে পারেন-

  • স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতেও বয়স প্রমাণের জন্য জন্ম নিবন্ধন প্রদর্শন করতে হয়। অনেকেরই জন্ম নিবন্ধন সনদ না থাকার ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারে না।
  • শিশুরা যদি কখনো কিশোর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে বা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়, সেক্ষেত্রে বিচার শুরুর আগেই তার বয়স প্রমাণের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • পড়াশোনা, জীবিকা, ব্যবসা, ভ্রমণ, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কারণে বিদেশে যেতে প্রয়োজন হয় পাসপোর্টের। আর পাসপোর্টের আবেদন ফরমের সঙ্গে অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন জমা দিতে হয়।
  • ভোটার আবেদন ফরমের সঙ্গেও বয়স প্রমাণের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিতে হয়। জন্ম নিবন্ধন সনদ না থাকলে ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করা যায় না।
  • সরকারি চাকরি বা স্বায়ত্তশাসিত চাকরির ক্ষেত্রেও বর্তমানে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করতে হয়।
  • বিয়ের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হয়। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বিয়ের সময় বয়স প্রমাণের জন্য এটি ভূমিকা পালন করে।
  • এমনকি সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের পর রেজিষ্ট্রেশনের সময় জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হয়। এই সনদ না থাকলে এক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।
  • সরকারি বা বেসরকারি সব ধরনের সেবা ও সম্পদের বরাদ্দ পেতে অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন করতে হবে।
  • অনেকেই ১৮ বছরের পরপরই ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন। তখন আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় নয় বরং জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে।

জন্ম নিবন্ধন আইনের বিধান অনুযায়ী এই বিধি লংঘনকারী নিবন্ধক বা ব্যক্তি অনধিক ৫০০ টাকা অথবা অনধিক ২ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।


🔆🔆 আরও দেখুন: পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান


জন্ম নিবন্ধন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রথমেই কিছু কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন বয়সের লোকদের জন্য কাগজপত্রেও ভিন্নতা রয়েছে।

শিশুদের জন্ম নিবন্ধকরণে জন্মের পর প্রথম ৪৫ দিনের মধ্যে যে কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন তা হলো-

  • অনলাইনে আবেদনকৃত ফর্মের প্রিন্ট কপি।
  • শিশুর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • শিশুর ইপিআই (এক্সপান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইমিউনাইজেশন) টিকা কার্ড কিংবা ইপিআই কর্মীর নিকট থেকে প্রত্যয়নপত্র
  • শিশুর জন্মস্থান ও জন্ম তারিখের প্রমাণপত্র হিসেবে হাসপাতাল বা ক্লিনিক থেকে শিশুর জন্ম সনদের সত্যায়িত অনুলিপি বা বার্থ এটেনডেন্ট-এর প্রত্যয়ন পত্র বা শিশুর জন্ম সংক্রান্ত অন্য কোনো প্রমাণ পত্র।
  • বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষাতেই বাবা-মার অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদ।
  • বাবা-মার জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • শিশুর যে কোন একজন অভিভাবকের কর পরিশোধের প্রমাণ।

৪৬ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে উপরোক্ত ৪ নং বাদে বাকি সব কাগজপত্রই লাগবে।

৫ বছরের বেশি শিশু অথবা যে কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে-

  • অনলাইনে আবেদনকৃত ফর্মের প্রিন্ট কপি।
  • শিশুর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল স্বীকৃত এমবিবিএস বা তদূর্ধ্ব ডিগ্রিধারী চিকিৎসক-এর নিকট থেকে প্রত্যয়ন পত্র।
  • পিএসসি(প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী), জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) বা এসএসসি (মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট)।
  • বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষাতেই বাবা-মায়ের অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদ।
  • বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র।

জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান করা

BDRIS এর ওয়েবসাইট থেকে আপনারা খুব সহজেই জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান করতে পরবেন। জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান করা এর জন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

  • প্রথমে এখানে ক্লিক করে BDRIS এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন।
  • এবার “Birth Registration Number” এ আপনার ১৭ ডিডিটের জন্ম সনদ নম্বর দিবেন।
  • এখন “Date of Birth” এ আপনার জন্ম তারিখ লিখবেন। (ফর্মেট: YYYY-MM-DD)
  • এবার যোগ বা বিয়োগ এর ভেরিফিকেশন টি সম্পন্ন করে “Search” এ ক্লিক করবেন।

আপনার জন্ম সনদ নম্বর এবং জন্ম তারিখ ঠিক থাকলে সার্চ এ ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য দেখতে পারবেন।


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের যে কোন আপডেট মিস করতে না চাইলে ফেসবুক ও ইউটিউবে সাবক্রাইব করে আমাদেস দাথে কানেক্ট থাকতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।

About মেরাজুল ইসলাম

আমি মেরাজুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পাশাপাশি একজন ব্লগার। এডুকেশন এর প্রতি ভালোবাসাও অনলাইল শিক্ষার পরিসর বাড়ানোর জন্য এডুকেশন ব্লগের পথচলা। ব্লগিং এর পাশাপাশি আমি ওয়েবসাইট ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, কাস্টমাইজ সহ ওয়েব রিলেটেড সকল কাজ করি।

View all posts by মেরাজুল ইসলাম →