পিতৃপুরুষের গল্প গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

পিতৃপুরুষের গল্প গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

পিতৃপুরুষের গল্প গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর: ‘পিতৃপুরুষের’ গল্প’ গল্পটির কিশোর অন্তু ঢাকায় বসবাস করে। মায়ের কাছে মুক্তিযোদ্ধা কাজল মামার সাহসী সংগ্রামের গল্প শুনে অন্তুর মনে মামার মুখ থেকে যুদ্ধের গল্প শোনার আগ্রহ জাগে।

সে মামার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। এক সময় একুশে ফেব্রুয়ারির দু-দিন আগে কাজল মামা ঢাকায় আসেন। মামার কাছেই শুরু হয় অন্তুর অতীত সম্পর্কে তথ্যনির্ভর ইতিহাসের পাঠ। অন্তু জানতে পারে ঢাকা শহরের নামের ইতিহাস, সাতমসজিদ রাস্তার নামের ইতিহাস জানতে পারে যুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের পার্থক্য।


পিতৃপুরুষের গল্প গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ১। ‘ওরা আমাদের পিতৃপুরুষ’— এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘ওরা আমাদের পিতৃপুরুষ’— এখানে ১৯৫২ সালের ভাষাশহিদদের কথা বলা হয়েছে। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলা মায়ের সন্তানরা ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেন। তাঁদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি পেয়েছে ভাষার স্বাধীনতা। ভাষা আন্দোলনের চেতনা থেকেই আমরা স্বাধীনতা আন্দোলনের পথে এগিয়েছি। বাঙালি জাতি সেই চেতনাশক্তি লালন করেই মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে শত্রুমুক্ত করে। জাতির মুক্তির সংগ্রামে ভাষাশহিদরা প্রেরণা ও শক্তি হিসেবে ছিলেন বলে আলোচ্য গল্পে তাদের পিতৃপুরুষ বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ২। “স্বাধীনতা এবার আসবেই।”—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বাবার কথার পরিপ্রেক্ষিতে কাজল মামা এ কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালীন দেশে যুদ্ধ বাধলে কাজল মামা ঢাকা ছেড়ে হঠাৎ গ্রামে চলে আসেন। তারপর রাতদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে ছেলেদের জোগাড় করে মিছিল মিটিং করেন, রাইফেল জোগাড় করে ট্রেনিং দিতেন। আর এজন্য তার বাবা তাকে অনেক বকতেন। আর মামা তখন সাহস নিয়ে বলতেন যে, সাহসী বাঙালিরা এবার যুদ্ধ করবে. বাবা । বাঙালির এই সংগ্রাম ও সাহসিকতার পথ ধরে স্বাধীনতা আসবেই।

প্রশ্ন ৩। অন্তু তার মামার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে কেন?
উত্তর: অন্তু যুদ্ধের গল্প শুনতে তার মামার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। অন্তুর কাজল মামা একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য তিনি যুদ্ধ করেছেন। অন্তু মায়ের মুখ থেকে মুক্তিযোদ্ধা মামার অনেক কথা শুনেছে। তাই সে মামার মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে চায়। এজন্য সে অধীর আগ্রহে ‘মামার জন্য অপেক্ষা করছে।

প্রশ্ন ৪। সাতমসজিদ রোড নামকরণ হয়েছে কীভাবে?
উত্তর: সাত গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদের কারণেই রাস্তার নাম হয়েছে সাতমসজিদ রোড। মোগল বাদশা জাহাঙ্গীরের নাম অনুসারে ঢাকার নাম হয় জাহাঙ্গীরনগর। সেই সময় থেকেই শহরের আনাচে-কানাচে অনেক মসজিদ তৈরি হতে থাকে। একটি রাস্তা পিলখানার মোড় থেকে মোহাম্মদপুর এসে একটা সাত গম্বুজ মসজিদে ঠেকেছে। সেই পুরনো মসজিদের নামেই এ রাস্তার নাম হয়েছে সাতমসজিদ রোড।

প্রশ্ন ৫। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের হত্যা করেছিল কেন?
উত্তর: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল বলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের হত্যা করেছিল। পাকিস্তানি সামরিক শাসক আমাদের বাংলাদেশটাকে গোলাম করে রাখতে চেয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই শোষণের নিগড় ভাঙতে চেয়েছিলেন। তারা সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেন। আর সে কারণেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের হত্যা করেছিল।

প্রশ্ন ৬। বাংলা ভাষা কীভাবে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?
উত্তর: শহিদদের রক্তের বিনিময়ে বাংলা ভাষা মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানি শাসকরা বাঙালিদের ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বাঙালিরা তা মেনে নেয়নি। তাই তারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, আন্দোলন করে। প্রতিবাদরত অবস্থায় পাকিস্তানি পুলিশ তাদের গুলি করে হত্যা করে। তাদের রক্তের বিনিময়েই বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

প্রশ্ন ৭। “ওরা আমাদের পিতৃপুরুষ ওদের আমরা চিরদিন মনে রাখব— শ্রদ্ধা করব।”- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ১৯৫২ সালের ভাষাশহিদদের সম্পর্কে কাজল মামা আলোচ্য কথাটি বলেছেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা মায়ের সন্তানরা ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেন। তাঁদের জন্যই আজ বাংলা ভাষা রক্ষা পেয়েছে। বাংলা ভাষা আমাদের রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেয়েছে। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই আমরা স্বাধীনতা আন্দোলনের পথে এগিয়ে গিয়েছি। তাই তাঁদের আমরা কখনো ভুলব না, শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করব; কারণ তাঁরা আমাদের পিতৃপুরুষ।

প্রশ্ন ৮। অদ্ভু ও কাজল মামা কোথায় নীরবে শ্রদ্ধা জানান, কেন?
উত্তর: অন্তু ও কাজল মামা শহিদ মিনার থেকে নেমে নীরবে ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলার সাহসী সন্তানরা ভাষার দাবিতে প্রাণ উৎসর্গ করেন। বুকের রক্ত রাজপথে ঢেলে দিয়ে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁরা আমাদের গর্ব, আমাদের স্বাধীনতা আদায়ের অগ্রপথিক তাঁরাই। তাই অন্তু ও কাজল মামা শহিদ মিনারে নীরবে শ্রদ্ধা জানান।


🔆🔆 আরও দেখুন: পিতৃপুরুষের গল্প গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
🔆🔆 আরও দেখুন: পিতৃপুরুষের গল্প গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
🔆🔆 আরও দেখুন: পিতৃপুরুষের গল্প গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের যে কোন আপডেট মিস করতে না চাইলে ফেসবুক ও ইউটিউবে সাবক্রাইব করে আমাদের সাথে কানেক্ট থাকতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।