ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: “ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯” শীর্ষক কবিতাটি কবি শামসুর রাহমানের ‘নিজ বাসভূমে’ কাব্যগ্রন্থ থেকে চয়ন করা হয়েছে। “ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯” দেশপ্রেম, গণজাগরণ ও সংগ্রামী চেতনার কবিতা।

১৯৬৯-এ পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে যে গণআন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, কবিতাটি সেই গণজাগরণের পটভূমিতে রচিত। জাতিগত শােষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এদেশের সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ১৯৬৯-এ। প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জ, হাটবাজার, কলকারখানা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসংখ্য মানুষ জড়াে হয় ঢাকার রাজপথে।

শামসুর রাহমান বিচিত্র শ্রেণি- -পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সংগ্রামী চেতনার অসাধারণ এক শিল্পভাষ্য রচনা করেছেন এই কবিতায়। কবিতাটিতে দেশমাতৃকার প্রতি জনতার বিপুল ভালােবাসা সংবর্ধিত হয়েছে। দেশকে ভালােবেসে মানুষের আত্মদান ও আত্মাহুতির প্রেরণাকে কবি গভীর মমতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে মূর্ত করে তুলেছেন।


ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

প্রশ্ন ০১: ‘শাবাশ বাংলাদেশ
এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়
জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।’

ক. ‘হরিৎ উপত্যকা’ অর্থ কী?
খ. ‘সালামের মুখে আজ তরুণ শ্যামল পূর্ব বাংলা’— ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার কোন অংশের সাদৃশ্য রয়েছে? আলোচনা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার মর্মবাণীকে পুরোপুরি ধারণ করে না”- মন্তব্যটি নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো।

১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক) হরিৎ উপত্যকা শব্দের অর্থ— সবুজ প্রান্তর।

খ) কবি ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী বাংলাকে যেন ভাষা আন্দোলনের শহিদ সালামের বিপ্লবী মুখাবয়বে খুঁজে পেয়েছেন। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার ওপর পাকিস্তান সরকারের অন্যায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এ দেশের ছাত্র-জনতা আন্দোলন শুরু করে এবং বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করে। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের শোষণ-অত্যাচারের বিরুদ্ধে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। ভাষা আন্দোলনের শহিদ সালাম, বরকতসহ অনেকেই ছিলেন এ আন্দোলনের মূল প্রেরণা। এ বিষয়টি বোঝাতে গিয়েই আলোচ্য চরণটিতে কবি বিপ্লবী ভাষা শহিদ সালামের প্রসঙ্গ অবতারণা করেছেন।

উত্তরের সারবস্তু: কবি ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী বাংলাকে যেন ভাষা আন্দোলনের শহিদ সালামের বিপ্লবী মুখাবয়বে খুঁজে পেয়েছেন।

গ) উদ্দীপকের সাথে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় ফুটে ওঠা বাঙালির প্রতিবাদী মানসিকতার দিকটির মিল রয়েছে। ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি বায়ান্নর পটভূমিতে দাঁড়িয়ে বাঙালির আত্মচেতনার জাগরণ এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সকল আন্দোলন-সংগ্রাম সংঘটনের দিকটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে উপস্থাপন করেছেন। কবিতাটিতে কবি দেখিয়েছেন, ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাঙালি মানসে যে বিপ্লবী চেতনার জাগরণ ঘটেছিল তাই ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণা জুগিয়েছিল।

উদ্দীপকের কবিতাংশে বাঙালির অকুতোভয় মনোভাবের দিকটি ফুটে উঠেছে। বিদেশি শত্রুর সীমাহীন অত্যাচারের মুখেও তারা নতি স্বীকার করেনি, বরং তাদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায়ও এ দিকটি বিশেষভাবে তুলে ধরেছেন কবি। কবিতাটিতে তিনি দেখিয়েছেন, পাকিস্তানি শাসকদের জাতিগত শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে অকুতোভয় বাঙালি ১৯৬৯-এর গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে আবারও প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রেরণা ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। আলোচ্য কবিতাটিতে ফুটে ওঠা বাঙালির এই প্রতিবাদী মনোভাব উদ্দীপকের কবিতাংশটির বক্তব্যের সমান্তরাল। এদিক থেকে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার সাথে উদ্দীপকের কবিতাংশটির সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকের কবিতাংশটিতে বাঙালি জাতির প্রতিবাদী মনোভাবের স্বরূপ ফুটে উঠেছে। একইভাবে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির প্রতিবাদী চেতনার পরিচয় তুলে ধরেছেন।

ঘ) “উদ্দীপকটি ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার মর্মবাণীকে পুরোপুরি ধারণ করে না”— মন্তব্যটি যথার্থ । ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের পটভূমিতে রচিত। আর এ আন্দোলন সংঘটনের পেছনের প্রেরণা হিসেবে কবি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রসঙ্গটিকে সামনে এনেছেন।

এ ক্ষেত্রে কবি ভাষা শহিদদের আত্মদানের প্রসঙ্গটিকে কবি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন। উদ্দীপকের কবিতাংশে কবি বাঙালি জাতির প্রতিবাদী মানসিকতার জয়গান গেয়েছেন। তিনি দেখেছেন, শত অত্যাচার ও নিপীড়নের মুখেও বাঙালি জাতি নতি স্বীকার করেনি। জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার হলেও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে তারা বারবার অস্ত্র হাতে প্রতিবাদী রূপ নিয়ে দাঁড়িয়েছে। বাঙালি জাতির এই দৃঢ়তার দিকটি আলোচ্য ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতাতেও একইভাবে ফুটে উঠেছে। তবে এটিই এ কবিতার মূলবিষয় নয়।

‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি পাকিস্তানি শাসনামলে স্বতন্ত্র জাতিসত্তা হিসেবে বাঙালির আত্মজাগরণ এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেছেন। কবিতাটিতে তিনি দেখিয়েছেন যে অন্যায়- অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি সবসময় সোচ্চার থেকেছে। আলোচ্য ‘ কবিতায় বিধৃত এ বিষয়টি উদ্দীপকের কবিতাংশেও গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এছাড়া কবিতাটিতে ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের পটভূমি হিসেবে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনেছেন। উদ্দীপকের কবিতাংশটিতে এসব বিষয় সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। সে বিবেচনায় প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

উত্তরের সারবস্তু: ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি পাকিস্তানি শাসনামলে স্বতন্ত্র জাতিসত্তা হিসেবে বাঙালির আত্মজাগরণ এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেছেন। উদ্দীপকের কবিতাংশে এ বিষয়ের কোনো ইঙ্গিত মেলে না। সে বিবেচনায় প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

প্রশ্ন ০২: ভাষা আন্দোলন ছিল একটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়। ওই আন্দোলনের ফলে সাম্প্রদায়িক মুসলিম জাতীয়তাবাদকে প্রত্যাখ্যান করে পূর্ব বাংলার মানুষ। ভাষা আন্দোলন ছিল অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের পর বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা থেকেই পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিষয়টি সামনে আসে। এর ফলে ‘৫৪-র প্রথম সাধারণ নির্বাচনেই মুসলিম লীগের ভরাডুবি ঘটে। মওলানা ভাসানী, ফজলুল হক ও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট বিজয়ী হয়।

ক. কবি কোন ফুলের রংকে আমাদের চেতনার সাথে তুলনা করেছেন?
খ. সালামের চোখে আজ আলোচিত ঢাকা।’ – কবিতায় ‘আজ আলোচিত ঢাকা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের বক্তব্যে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? আলোচনা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার মূলভাবের প্রতিনিধিত্ব করে কি? মতামত দাও।

২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক) কবি কৃষ্ণচূড়া ফুলের রংকে আমাদের চেতনার সাথে তুলনা করেছেন।

খ) ‘আজ আলোচিত ঢাকা’ বলতে সমবেত বাঙালির জনস্রোতকে বোঝানো হয়েছে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এদেশের আপামর জনতা। তারা এসেছিলেন পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ঢাকা পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে। আবারও একই চিত্রের পুনরাবৃত্তি ঘটে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ঢাকায় জড়ো হয়। উল্লিখিত চরণটি দ্বারা ভাষা আন্দোলনের মতো ১৬৯ এর গণআন্দোলনে ঢাকার অবস্থাকেই বোঝানো হয়েছে।

উত্তরের সারবস্তু: ‘আজ আলোচিত ঢাকা’ বলতে সমবেত বাঙালির জনস্রোতকে বোঝানো হয়েছে।

গ) উদ্দীপকের বক্তব্যে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় প্রকাশিত সংগ্রামী চেতনার দিকটি ফুটে উঠেছে। ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত। এ কবিতায় কবি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে সৃষ্ট গণজাগরণ, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের বিষয়টিকে শৈল্পিক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেছেন। শুধু তা-ই নয়, কবিতাটিতে শামসুর রাহমান বিচিত্র শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সংগ্রামের এক অসাধারণ শিল্পভাষ্য রচনা করেছেন। উদ্দীপকে বাঙালির মননে এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ভাষা আন্দোলনের অবিনাশী প্রভাব সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।

এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতি সাম্প্রদায়িক পরিচয়কে অস্বীকার করে এবং স্বতন্ত্র একটি জাতিসত্তা হিসেবে অধিকারসচেতন হয়ে ওঠে। ফলে পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যকার বৈষম্য এ দেশের জনতার সামনে প্রকট হয়ে ধরা দেয়। এরই প্রতিবাদ হিসেবে ‘৫৪-এর সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয় ঘটে। একইভাবে, ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায়ও ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা চেতনাকে কেন্দ্র করে ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন সংঘটিত হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। সে বিবেচনায় উদ্দীপকের বক্তব্যে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় প্রকাশিত সংগ্রামী চেতনার দিকটিই উঠে এসেছে।

উত্তরের সারবস্তু: ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতা এবং উদ্দীপকে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জাতীয়তাবাদী চেতনার নিরিখে বাঙালির প্রতিবাদী মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। এদিক বিবেচনায়, উদ্দীপকের বক্তব্যে কবিতাটিতে প্রকাশিত সংগ্রামী চেতনার দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে।

ঘ) উদ্দীপকটি ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার মূলভাবের প্রতিনিধিত্ব করে বলেই আমি মনে করি । ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি অন্যায় ও অপশাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরেছেন। কবিতাটি একুশের রক্তঝরা দিনগুলোতে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে এ দেশের সংগ্রামী মানুষের আত্মাহুতির মাহাত্ম্যে প্রগাঢ়তা লাভ করেছে। এখানে পাকিস্তানি অপশাসনের পরিপ্রেক্ষিতে বাঙালির আত্মজাগরণ এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কথা গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে। উদ্দীপকে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। উদ্দীপকের বক্তা এ আন্দোলনকে দেখেছেন রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে।

কেননা, এ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদকে প্রত্যাখ্যান করে এবং একটি স্বতন্ত্র জাতিসত্তা হিসেবে আত্মপরিচয় লাভ করে। ফলে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিষয়টি তাদের কাছে বড়ো হয়ে ধরা দেয়। এরই ফলস্বরূপ ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয় ঘটে। ‘ ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ একটি দেশপ্রেম, গণজাগরণ এবং সংগ্রামী চেতনার কবিতা।

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে ‘যে গণআন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, কবিতাটি সে গণজাগরণের প্রেক্ষাপটেই লেখা। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই একটি স্বতন্ত্র জাতিসত্তা হিসেবে বাঙালি আত্মপরিচয় লাভ করে এবং অধিকারসচেতন হয়ে ওঠে। আর সে জাতীয়তাবাদী চেতনাই তাদের পরবর্তী সকল আন্দোলন-সংগ্রামে উজ্জীবিত করে। উদ্দীপকের বক্তব্যেও বিষয়টি একইভাবে উঠে এসেছে। এদিক থেকে উদ্দীপকটি আলোচ্য কবিতার মূলভাবের প্রতিনিধিত্ব করে।

উত্তরের সারবস্তু: ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতা এবং উদ্দীপক উভয়ক্ষেত্রেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব এবং এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সকল আন্দোলন-সংগ্রাম সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। এ বিবেচনায় উদ্দীপকটি আলোচ্য কবিতার মূলভাবের প্রতিনিধিত্ব করে।

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর (নিজে করো)

প্রশ্ন ৩: মায়ের ভাষার মান বাঁচাতে
প্রাণ দিল আজ যারা,
ওদের ভাষা প্রাণ পেল আজ
ওরা যে বাকহারা।

ক. ঘাতকের আস্তানায় ভূলুণ্ঠিত কারা?
খ. কৃষ্ণচূড়াকে বাঙালির চেতনার সাথে তুলনা করা হয়েছে কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার কোন দিকটিকে তুলে ধরেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার মূলভাবকে সম্পূর্ণরূপে ধারণ করেছে কি? মতামত দাও।

প্রশ্ন ৪: গহিন সমুদ্রে বাতিঘর যেমন নাবিকদের পথ চলতে সাহায্য করে, ঠিক তেমনি একুশ আমাদের যে কোনো জাতীয় সংকটে বাতিঘর হয়ে পথ দেখায়।

ক. শামসুর রাহমান কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
খ. ‘বুঝি তাই উনিশশো উনসত্তরেও’ বলতে— কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার মূলভাবকে ধারণ করেছে- প্রমাণ করো।
ঘ. উদ্দীপকটিতে এই কবিতার সামগ্রিক ভাব প্রকাশিত হয়নি- বিশ্লেষণ করো।


🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন: বায়ান্নর দিনগুলো
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন: অপরিচিতা


প্রশ্ন ৫: জয় বাংলা বাংলার জয়
হবে হবে হবে, হবে নিশ্চয়।
কোটি প্রাণ এক সাথে। জেগেছে অন্ধ রাতে
নতুন সূর্য ওঠার এই তো সময়।

ক. মরা, আধমরা, ভীষণ জেদিরা কী করে?
খ. ‘চতুর্দিকে মানবিক বাগান, কমলবন হচ্ছে তছনছ’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে প্রকাশিত আশাবাদ কীভাবে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার সাথে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় চেতনাগত কোনো পার্থক্য নেই”— মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো।

প্রশ্ন ৬: পথিক বলিল, আমি চিরন্তন মুক্তিকামী। এই যাদের খুলি পড়ে রয়েছে, তারা কেউ মরেনি। আমার মাঝেই তারা নতুন শক্তি, নতন জীবন, নতুন আলোক নিয়ে এসেছে। এ মুক্তদল অমর। বিভীষিকা কাঁপিয়ে উঠিল “আমায় চেন না? আমি শৃঙ্খল। তুমি যাই বল, তোমাকে হত্যা করাই আমার ব্রত। মুক্তিকে বন্ধন দেওয়াই আমার লক্ষ্য। তোমাকে মরতে হবে। দুরন্ত পথিক বুক বাড়াইয়া বলিল, মারো, বাঁধো, কিন্তু আমাকে বাঁধতে পারবে না, আমার তো মৃত্যু নাই। আমি যে আবার আসবো।

ক. আসাদুজ্জামান কোন আন্দোলনে শহিদ হন?
খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজলে ফোটে ফুল’— বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের দুরন্ত পথিক ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় যে দিকটির পরিচয় বহন করে তা উপস্থাপন করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

প্রশ্ন ৭: ১৯৬৯ সালের ২০শে জানুয়ারি ছাত্র বিক্ষোভের তৃতীয় দিবস। ঐদিন ঢাকার ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশের জুলুম চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়। ছাত্রদের এক মিছিলের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। ক্রমান্বয়ে এই ছাত্র আন্দোলন একটি গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়। শেষ পর্যন্ত এই গণবিক্ষোভকে দমন করার জন্য শাসকগোষ্ঠী সামরিক বাহিনী তলব করে। কিন্তু সেনাবাহিনী এদেশের বিভিন্ন স্থানে গুলি চালিয়ে জনগণের এই দুর্বার আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে সক্ষম হয়নি।

ক. কোন ফুল শহরে নিবিড় হয়ে ফুটেছে?
খ. ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি জীবনকে কীভাবে প্রকৃতির সাথে সম্পৃক্ত করেছেন?
গ. উদ্দীপকের কোন দিকটির সাথে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার কোন বিষয়টির তুলনা করা যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার মূল চেতনার বাহক – মন্তব্যটি বিচার করো।

প্রশ্ন ৮: স্বাধীন বাংলাদেশ লক্ষ লক্ষ মানুষের আত্মত্যাগের ফসল। নির্যাতিত হয়েছিল অনেক নারী-পুরুষ। দেশমাতৃকার জন্যে যারা অকাতরে জীবন বিসর্জন দিয়েছিল তাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে এক একটি বিজয়গাথা। দেশের এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিজয়গাথার চেতনাই যুগ যুগ ধরে বংলাদেশের বিজয় কেতনকে অনন্ত অক্ষয় রাখবে।

ক. বরকত কোথায় বুক পাতে?
খ. মখে রাত্রি-দিন ভূলুণ্ঠিত ঘাতকের আস্তানায়, কেউ মরা, আধমরা কেউ’— চরণটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আত্মত্যাগের সাথে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতার কাদের তুলনা করা হয়েছে? বিশ্লেষণ করো।
ঘ. উদ্দীপক ও ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি আত্মত্যাগের চেতনায় সমুজ্জ্বল আলোচনা করো।


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের যে কোন আপডেট মিস করতে না চাইলে ফেসবুক ও ইউটিউবে সাবক্রাইব করে আমাদেস দাথে কানেক্ট থাকতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।