অতিথির স্মৃতি সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

গল্প: অতিথির স্মৃতি সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর (PDF)

অতিথির স্মৃতি সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর: ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে একটি কুকুরের সঙ্গে একজন মানুষের গভীর মমত্বের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। লেখক বা কথক অসুস্থ হয়ে বায়ু পরিবর্তনের জন্য দেওঘরে গেলে সেখানে একটি পথের কুকুরের প্রতি তার সহানুভূতি জাগে। বেড়াতে বের হলেই কুকুরটি তাকে সঙ্গ দিত। এমনকি কথকের চাকর-বাকররা কুকুরটির প্রতি অমানবিক আচরণ করলেও প্রাণীটি কথকের সঙ্গ ছাড়েনি। কথক দেওঘর ছেড়ে চলে আসার , সময় সেই অতিথি কুকুরকে রেখে আসেন। সেই কুকুরটির স্মৃতি কথককে পীড়া দেয়। এ গল্পে লেখক দেখিয়েছেন, মানুষে-মানুষে যেমন মেহপ্রীতির সম্পর্ক, অন্য জীবের সঙ্গেও তেমনি মানুষের সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। সেই সম্পর্ক নানা প্রতিকূলতার কারণে বাধাগ্রস্ত হয়। মূলত মানবেতর একটি প্রাণীর সঙ্গে অসুস্থ একটি মানুষের পরিচয়ের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা একটি মমত্বের সম্পর্কই এ গল্পের বিষয়।

অতিথির স্মৃতি সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সৃজনশীল ০১: বাদল সাহেব ডায়াবেটিস রােগী। ডাক্তারের পরামর্শে প্রতিদিন বিকেলে হাঁটতে বের হন। হাঁটতে গিয়ে দেখেন তার মতাে অনেকেই হাঁটতে বের হয়েছে। যারা হাঁটতে বের হয়েছে তাদের অনেকে স্থূলকায়। একটু হাঁটলেই হাঁপিয়ে যায়। তারপরও তাদের হাঁটার প্রাণপণ চেষ্টা। হঠাৎ বাদল সাহেব দেখতে পান রাস্তার পাশে। একটি বিড়ালছানা অসুস্থ অবস্থায় তিনি বিড়ালছানাটিকে বাসায় নিয়ে যান এবং পরম যত্নে তাকে সুস্থ করে তােলেন।

ক. কী দেখে লেখকের সত্যিকার ভাবনা ঘুচে গেল?
খ. আতিথ্যের মর্যাদা লঘন বলতে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে? কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত লোেকদের হাঁটার প্রাণপণ চেষ্টা ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের কোন দিককে নির্দেশ করে। ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের বাদল সাহেবের প্রাণীর প্রতি মমত্ববােধে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের লেখকের মমত্ববােধের পূর্ণাঙ্গ রূপ ফুটে উঠেছে কি? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীল ০১ এর উত্তর: 

ক. হলদে রঙের একজোড়া বেনে-বৌ পাখিকে আবার ফিরে আসতে দেখে লেখকের সত্যিকারের ভাবনা ঘুচে গেল।

খ. বিনা নিমন্ত্রণে কুকুরটি ভােজ খাওয়ার আশায় নিশ্চিত হয়ে বসে আছে, যা আতিথ্যের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করে। NE) কুকুরটির সঙ্গে লেখকের সখ্য হওয়ার পরের দিন কুকুরটি লেখকের নিমন্ত্রণ রক্ষা করে। পরের দিনও একই সময়ে কুকুরটি কর গৃহে এসে হাজির হয়। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কারও বাড়িতে কোনাে অতিথি অধিক সময় অবস্থান করলে তাতে আতিথ্যের মর্যাদা লঙ্ঘিত হয়। তাই সাধারণ বিচারে কুকুরটি এ মর্যাদা লঙ্ঘন করেছে, যা আলােচ্য বাক্যে ফুটে উঠেছে।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত লােকদের হাঁটার প্রাণপণ চেষ্টা ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের বায়ু পরিবর্তন করতে আসা বাগ্রস্তদের হাঁটার দিকটিকে जिद চিকিৎসকেরা অনেক সময় রােগীদের বায়ু পরিবর্তনের জন্য বলেন। অনেকে সে জন্য নতুন আবহাওয়ায় শারীরটাকে ঝরঝরে করতে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণে যান। অনেকে আছেন সকাল-সন্ধ্যা হাঁটাহাঁটি করেন ডাক্তারের পরামর্শে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস ও বাতের রােগীরা এটা বেশি অনুসরণ করেন।
উদ্দীপকের বাদল সাহেব ডায়বেটিস রােগী। তিনি ডাক্তারের পরামর্শে হাঁটতে বের হয়ে দেখেন তার মতাে অনেকেই হাঁটতে এসেছে। এ বিষয়টি ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পেও দেখা যায়। লেখক বায়ু পরিবর্তনের জন্য দেওঘরে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন অনেক মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শে বায়ু পরিবর্তন করতে এসেছে। তাদের অনেকে ক্ষুধা বৃদ্ধির জন্য আবার কেউ বা বাতের জন্য হাঁটাহাঁটি করতে বের হয়েছে। কেউ বা দুতপদে বাসায় ফিরতে চেষ্টা করছে। গল্পের এ দিকটিকেই উদ্দীপকের লােকদের হাঁটার প্রাণপণ চেষ্টা নির্দেশ করেছে।

ঘ. উদ্দীপকের বাদল সাহেবের প্রাণীর প্রতি মমত্ববােধে অতিথির স্মৃতি’ গল্পের লেখকের মমত্ববােধের পূর্ণাঙ্গ রূপ ফুটে উঠেছে।

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে একে অন্যকে সাহায্য-সহযােগিতা করে, ভালােবাসে। মানুষ হয়ে মানুষকে যেমন ভালােবাসা উচিত তেমনই অন্য প্রাণীর প্রতি ভালােবাসা ও সহমর্মিতা থাকা বাঞ্ছনীয়। উদ্দীপকের বাদল সাহেব একজন ডায়বেটিসের রােগী। তিনি এক সকালে হাঁটতে গিয়ে দেখেন একটা বিড়ালছানা রাস্তার পাশে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি ছানাটিকে বাসায় নিয়ে যান এবং পরম যত্নে সুস্থ করে তােলেন। প্রাণীর প্রতি তার এ মমত্ববােধ অতিথির স্মৃতি’ গল্পের লেখকের অনুরূপ।

কেননা লেখকও দেওঘর বেড়াতে গিয়ে একটা রাস্তার কুকুরকে অতিথির মর্যাদা দিয়ে নিজের কাছে এনে সেবা-যত্ন করেন এবং আপন করে নেন। ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে লেখক দেখিয়েছেন মানুষে মানুষে যেমন স্নেহ-প্রীতির সম্পর্ক, অন্য জীবের সঙ্গেও তেমন সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। লেখক নিজেই সেটা করে দেখিয়েছেন। আলােচ্য গল্পে তার বর্ণনা রয়েছে। উদ্দীপকের বাদল সাহেবের মাঝেও প্রাণীর প্রতি এমন মমতৃবােধ লক্ষ করা যায়। সুতরাং বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল ০২: মহেশ দরিদ্র বর্গাচাষি গফুরের অতি আদরের একমাত্র যাড়। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে ওকে ঠিকমতাে খড়-বিচুলি খেতে দিতে পারে না। জমিদারের কাছে সামান্য খড় ধার চেয়েও পায় না। নিতে না খেয়ে থাকলেও গফুরের দুঃখ নেই। কিন্তু মহেশকে খাবার দিতে না পেরে তার বুক ফেটে যায়। তাই সে মহেশের গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে- মহেশ, তুই তাে জানিস আমি তােকে কত ভালােবাসি। মহেশ প্রত্যুত্তরে গলা বাড়িয়ে আরামে চোখ বুজে থাকে।

ক. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে একটু দেরি করে আসত কোন পাখি?
খ. ‘আতিথ্যের মর্যাদা লঘন’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের যে দিকটির মিল রয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের গফুরের মানসিকতা ‘অতিথির স্মৃতি গল্পের লেখকের মানসিকতারই প্রতিরূপ”- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

সৃজনশীল ০২ এর উত্তর: 

ক. একটু দেরি করে আসত হলদে একজোড়া বেনে-বৌ পাখি।

খ. বিনা নিমন্ত্রণে কুকুরটি ডােজ খাওয়ার আশায় নিশ্চিত হয়ে বসে আছে, যা আতিথ্যের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করে। কুকুরটির সঙ্গে লেখকের সখ্য হওয়ার পরের দিন কুকুরটি লেখকের নিমন্ত্রণ রক্ষা করে। পরের দিনও একই সময়ে কুকুরটি লেখকের গৃহে এসে হাজির হয়। অনাকাক্সিক্ষতভাবে কারও বাড়িতে কোনাে অতিথি অধিক সময় অবস্থান করলে তাতে আতিথ্যের মর্যাদা লঙ্ঘিত হয়। তাই সাধারণ বিচারে কুকুরটি এ মর্যাদা লঘন করেছে, যা আলােচ্য বাক্যে ফুটে উঠেছে।

গ) মানবেতর প্রাণীর প্রতি মমত্বের সম্পর্কের দিক দিয়ে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের মিল রয়েছে।

ভালােবাসা একটা স্বর্গীয় অনুভূতি। এমন অনুভূতি মানুষের প্রতি যেমন হতে পারে তেমনই হতে পারে বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিও। ভালােবাসা দিলে মানবেতর প্রাণীর সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কও তৈরি হয়ে যায়।

উদ্দীপকে দেখা যায়, গফুর তার বঁড় মহেশকে প্রচণ্ড ভালােবাসে। দারিদ্র্যের কারণে মহেশকে ঠিকমতাে খড়-বিচুলি দিতে পারে না বলে তার কষ্টের সীমা নেই। নিজে না খেয়ে থাকলেও তার দুঃখ হয় না কিন্তু মহেশকে সে অভুক্ত রাখতে পারে না। মানবেতর প্রাণীর প্রতি এমন ভালােবাসা ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের দেখা যায়। লেখক দেওঘরে বায়ু পরিবর্তন করতে গিয়ে একটি রাস্তার কুকুরকে অতিথির মর্যাদা দিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন তাকে খেতে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তার যাতে কোনাে অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলেন। গল্পের এ দিকটির সঙ্গেই উদ্দীপকের মিল রয়েছে।

ঘ. “উদ্দীপকের গফুরের মানসিকতা ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের লেখকের মানসিকতারই প্রতিরূপ” – মন্তব্যটি যথার্থ। মানুষ স্বভাবতই স্নেহপ্রবণ। সে তার কাছের মানুষগুলােকে যেমন ভালােবাসে, স্নেহ করে, তেমনই পশু-পাখির প্রতি তার ভালােবাসা বা মমতা জন্মাননা স্বাভাবিক। এ ধরনের প্রবণতায় মানুষ নানা রকম পশু-পাখি পােষে, তাদের ভালােবাসে নিকটজনের মতােই।

উদ্দীপকের গফুর তার বঁড়টিকে খুব ভালােবাসে। সে দরিদ্র বলে ষাঁড়টিকে চাহিদামতাে খড়-বিচুলি দিতে পারে না বলে তার দুঃখের অন্ত নেই। নিজে দুবেলা না খেয়ে থাকলে তার যে কষ্ট তার চেয়ে বেশি কষ্ট হয় তার মহেশ না খেয়ে থাকলে। মহেশ বুড়াে হয়ে গেলেও তার প্রতি অবহেলার কথা ভাবতে পারে না। এমনই। মানবিকতা ও মানবেতর প্রাণীর প্রতি মমত্বের সম্পর্কের প্রকাশ ঘটেছে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে।

গল্পের লেখকও একই চেতনার অধিকারী। ও ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পটির বিষয় হলাে মানবেতর প্রাণীর সঙ্গে মানুষের মমত্বের সম্পর্ক। লেখক এখানে দেখিয়েছেন মানুষে মানুষে যেমন স্নেহ-প্রীতির সম্পর্ক গড়ে ওঠে তেমনই অন্য জীবের সঙ্গেও মানুষের সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। উদ্দীপকের গফুর এবং আলােচ্য গল্পের লেখকের মানসিকতা এখানে এক ও অভিন্ন। সুতরাং বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল ০৩: পাঁচ বছরের নীলের জন্য তার বাবা শহর থেকে খাঁচাসহ টিয়ে পাখি কিনে আনে। বাবার সাথে নীলও পাখিটার যত্ন নেয়। নীলের সাথে টিয়েটাও নীলের বাবাকে বাবা বলে ডাকে। পাখিটা পােষ মেনেছে ভেবে নীল একদিন চুপি চুপি খাচার দরজা খুলে দেয়। অমনি পাখিটা উড়ে চলে যায়। পাখিটার জন্য বাড়ির সবার মন খারাপ হয়। পরদিন সকালে পাখিটা ফিরে এসে, বাবা, বাবা ডাকতে থাকলে সবাই অবাক হয়ে যায়। নীলের বাবা ভাবে তার হারিয়ে যাওয়া ছেলে ফিরে এসেছে।

ক. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে লেখকের কিসের ভাবনা ছিল?
খ. অতিথি প্রথম দিন বাড়ির ভিতরে ঢােকার ভরসা পেল না কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে পাখিটির ফিরে আসা অতিথির স্মৃতি’ গল্পের কোন বিষয়টিকে নির্দেশ করে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. নীলের বাবাকে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের লেখকের প্রতিনিধি বলা যায় কি? উত্তরের পক্ষে তােমার মতামত দাও।

সৃজনশীল ০৩ এর উত্তর: 

ক. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে এক জোড়া বেনে-বৌ পাখিকে দুদিন না দেখে লেখকের ভাবনা হলাে ব্যাধেরা বুঝি পাখি দুটিকে ধরে চালান করে দিয়েছে।

খ. চাকরদের ভয়ে অতিথি প্রথম দিন বাড়ির ভেতরে ঢােকার ভরসা পেল না।
লেখক কুকুরটিকে অন্ধকার পথে বাড়ি পর্যন্ত পৌছে দেওয়ার জন্য, বললেন। তার লেজ নাড়তে দেখে লেখক বুঝলেন সে রাজি আছে। তিনি কুকুরটিকে সাথে নিয়ে বাড়ির সামনে এলেন। গেট খুলে ঐ কুকুরটিকে ভেতরে ডাকলেন। কিন্তু কুকুরটি বাইরে দাঁড়িয়ে লেজ নাড়তে লাগল। ভেতরে ঢুকল না কারণ কুকুরটি ভয় পেয়েছিল। সে ভেবেছিল ভেতরে ঢুকলে হয়তাে তাকে প্রহার করা হবে।

গ. উদ্দীপকে পাখিটির ফিরে আসা অতিথির স্মৃতি’ গল্পের মানবেতর প্রাণীও যে মানুষের স্নেহ-মায়ায় বাঁধা পড়ে সে দিকটিকে নির্দেশ করে।
পশু-পাখি, জীব-জন্তু মানব পরিবেশের অংশ। এরা মানুষের মতাে কথা বলতে পারে না সত্য, কিন্তু একেবারে অনুভূতিশূন্য নয়। তারা প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ধন করে মানুষের মনে আনন্দ এনে দেয়। তাই এদের প্রতি মানুষের অনুরাগ জন্মে এবং এদের প্রতি মানুষ ভালােবাসা অনুভব করে। উদ্দীপকে পাঁচ বছর বয়সী নীলের জন্য নীলের বাবার পাখি কিনে আনা, যত্ন নেওয়া এবং ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখানে নীল পােষা পাখিটিকে ছেড়ে দেওয়ায় সবার মন খারাপ হয়েছে। আবার পাখিটির ফিরে আসাকে নীলের বাবার কাছে হারানাে ছেলের ফিরে আসার মতাে মনে হয়েছে।
এসবের মূলে রয়েছে পাখিটির প্রতি নীল, নীলের বাবা এবং বাড়ির সবার গভীর ভালােবাসা। উদ্দীপকের পাখিটি ছাড়া পেয়েও ফিরে আসে। সে তার চিরায়ত বৈশিষ্ট্যের থেকে ভিন্ন আচরণ করে কারণ সেও নীলের বাবার ও নীলের পরিবারের স্নেহ মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। উদ্দীপকের এই বিষয়টি ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের অতিথি কুকুরের লেখকের ভালােবাসার এবং অতিথি কুকুরটির অনুভূতিশীলতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। লেখক চিকিত্সকের পরামর্শে বায়ু পরিবর্তনের জন্য দেওঘরে যান। সেখানে প্রাচীর ঘেরা এক বড় বাড়িতে থাকার সময় প্রতিদিন বেড়াতে বের হতেন। একদিন এক পথের কুকুরের সাথে তার সখ্য গড়ে ওঠে।
তার পর থেকে তিনি প্রতিদিন কুকুরটির সাথে পথে বেড়াতে বের হতেন। হঠাৎ দুদিন নিচে নামতে না পারায় কুকুরটিই তার দোতলায় ঘরে চলে যায়। এমনকি লেখকের বিদায়ের দিন তার দৌড়াদৌড়িই ছিল বেশি। যা প্রমাণ করে কুকুরটি লেখকের স্নেহের, বন্ধনে আবদ্ধ সেও লেখকের স্নেহ-মায়ার বাঁধা পড়ে এসব করে। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের পাখিটির ফিরে আসা আলােচ্য গল্পের মানবেতর প্রাণীও যে মানুষের স্নেহমায়ায় বাধা পড়ে সে দিকটিকে নির্দেশ করে।

ঘ. নীলের বাবাকে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের লেখকের প্রতিনিধি বলা যায়। কারণ পশু-পাখির প্রতি লেখকেরও গভীর অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে।
মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অনুভূতিশীল প্রাণী। মানুষ গভীর স্নেহপ্রবণ ও বলে চারপাশের বিভিন্ন জীব-জন্তু, পশু-পাখির প্রতি তার স্নেহ-মমতা জন্মে। এ অনুভূতি থেকেই অনেকে বাড়িতে নানা রকম জীব-জন্তু, পশু-পাখি পােষে। মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে এসব পােষা প্রাণীর প্রভাব লক্ষ করা যায়। . উদ্দীপকে নীলের জন্য আনা পাখিটির প্রতি নীলের বাবার গভীর অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে। নীল পােষা পাখিটিকে ছেড়ে দেওয়ার ফলে তিনি খুব কষ্ট পেয়েছেন। আবার সেই পাখিটি ফিরে আসায় তার কাছে হারানাে ছেলে ফিরে আসার মতাে মনে হয়েছে।
এই অনুভূতি পােষা পাখিটির প্রতি তার গভীর মমতারই প্রকাশ। উদ্দীপকের নীলের বাবার এই অনুভূতি ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের লেখকের অনুভূতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। লেখকও দেওঘরের বাড়ির বারান্দায় বসে প্রতিদিন পাখি দেখে পাখির প্রতি গভীর মমতা অনুভব করেন। এ কারণেই একজোড়া বেনে-বৌ পাখিকে একদিন না দেখে উদ্বিগ্ন হয়েছেন এবং তিন দিন পর ফিরে আসায় ভাবনামুক্ত হয়েছেন। এছাড়া তিনি রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে রাস্তার একটি কুকুরকে অতিথি করে বাড়ি নিয়ে এসে তাকে যত্ন করার জন্য বাড়ির চাকরদের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিদিন যে খাবার ফেলনা যায় তা যেন তার অতিথিকে দেওয়া হয়। তিনি কুকুরটির প্রতি যে মেহ- মমতা দেখিয়েছেন তা উদ্দীপকের পাখিটি ফিরে আসায় নীলের বাবার খুশি হওয়া ও গভীর মমতার সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা।
‘অতিথির সৃতি’ গল্পে একটি প্রাণীর সঙ্গে লেখকের মমত্বের সম্পর্কটি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে মানুষের সঙ্গে মানুষের যেমন স্নেহ-প্রীতির সম্পর্ক গড়ে ওঠে তেমনই পশুপাখির সঙ্গেও মানুষের স্নেহ-মমতার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। অতিথির স্মৃতি’ গল্পে বিদায়ের দিন এসে পড়লেও লেখক আরও দুদিন দেরি করেন তার অতিথির প্রতি স্নেহ-মমতার কারণে। অনুরূপভাবে উদ্দীপকের নীলের বাবাও পােষা পাখিটির ফিরে আসায় হারানাে ছেলের ফিরে আসার সুখ অনুভব করেন। তাই বলা যায় যে, আলােচ্য গল্পের লেখক ও উদ্দীপকের নীলের বাবা পরস্পরের প্রতিনিধিত্ব করেন।

সকল প্রশ্নের উত্তর দিলে আর্টিকেল টি অনেক বড় হয়ে যেতো। তাই আমরা সকল প্রশ্নোত্তর নিয়ে পিডিএএফ তৈরি করেছি। আর্টিকেল এর শেষে পিডিএফ ডাউনলোড লিংক রয়েছে।

নিজে করো,

সৃজনশীল ০৪: পিয়াসের একটা পােষা বিড়াল ছিল। সে তাকে খুবই যত্ন করত। সময় পেলে নিজ হাতে দুধ, মাছ খেতে দিত। পিয়াস যখন বাইরে যেত বিড়ালটি তখন তার ঘরের দরজার সামনে বসে থাকত। কিন্তু বাড়ির কাজের মেয়ে আয়েশা এটা মােটেই সহ্য করতে পারত । সে সুযােগ পেলেই বিড়ালের দুধটুকু নিজেই খেয়ে নিত এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করত।

ক. দেওঘরে লােকটি একঘেয়ে সুরে কী গান গাইত?
খ. “ফোলা পায়ের লজ্জা ঢাকতে বেচারাদের কত না।? যত্ন।”- লেখক কেন এ কথাটি বলেছেন?
গ. উদ্দীপকের আয়েশার আচরণে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের প্রতিফলিত দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ., “উদ্দীপকের পিয়াসের মানসিকতা ‘অতিথির স্মৃতি গল্পের লেখকের মানসিকতারই প্রতিরূপ।”- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

সৃজনশীল ০৫: পানগাঁও গ্রামের কৃষক বিপ্লব দাস কৃষিকাজের পাশাপাশি মাছ চাষ করতেন। তিনি পুকুরে রুই, কাতলা, মৃগেল প্রভৃতি মাছের চাষ করতেন। মাছগুলােকে তিনি প্রতিদিন দুই বেলা নিজ হাতে খাবার দিতেন, মাছগুলােও তার হাত থেকে খাবার খেত। ওগুলাের মধ্যে দুটো কাতলা মাছ ছিল বিপ্লব দাসের অত্যন্ত প্রিয় ও আদরের। তিনি যখন স্নান করতেন তখন কাতলা দুটো তার কাছে চলে আসত এবং খেলত। কোনাে কোনাে দিন তিনি যদি বাড়িতে না থাকতেন এবং খাবার দিতে দেরি হলে, মাছগুলাে ঘাটে এসে লাফালাফি করত।

ক. বেরিবেরির আসামি কারা?
খ. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে লেখকের কেন মনে হতে লাগল,? হয়তাে ওর মতাে তুচ্ছ জীব শহরে আর নেই! ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের বিপ্লব দাস ও মাছ দুটোর সম্পর্কের সাথে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের লেখক ও অতিথির সম্পর্কের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকগুলাে বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপক ও ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের মূল বক্তব্য এক হলেও প্রেক্ষাপট ভিন্ন।”- উত্তরের পক্ষে তােমার যুক্তি উপস্থাপন কর।

সৃজনশীল ০৬: কিরণ বাবু সরকারি চাকরি করেন। কাজের লােক শ্যামলকে নিয়ে তিনি থাকেন বরিশালে। তার বাসায় একটি বিড়াল আছে। কিরণ বাবু বিড়ালটিকে বেশ আদর করেন। শ্যামলকেও বলে দিয়েছেন বিড়ালটিকে কষ্ট না দেওয়ার জন্য। শ্যামল বিড়ালটিকে নিয়মিত খাবার দেওয়াসহ প্রয়ােজনীয় যত্ন নেয়। অফিস থেকে ফিরে এলে বিড়ালটি মিউমিউ করে কিরণ বাবুকে অভ্যর্থনা জানায়।

ক. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে একটু দেরি করে আসত কোন পাখি?
খ. ‘বেরিবেরির আসামি’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. কিরণ বাবুর সাথে লেখকের যে বৈশিষ্ট্যগত মিল, রয়েছে তার বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকের শ্যামল ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের মালিনীর বিপরীত চরিত্রের প্রতিনিধি।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীল ০৭:  সুবর্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী দিগন্তের একটি পােষা কুকুর আছে। কুকুরটি সবসময় দিগন্তের আশেপাশে থাকে। বাড়ির অন্যরা যত্ন না নিলেও দিগন্ত যত্নের ব্যাপারে সবসময় সতর্ক থাকে। পােষা কুকুরটি দিগন্তকে আপন করে নিয়েছে। সে কোথাও ঘুরতে বের হলে বা স্কুলে যাওয়ার সময় কুকুরটি তাকে খানিকটা পথ এগিয়ে দেয়।

ক. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে ট্রেন স্টেশন ছাড়তে আর কয় মিনিট দেরি?
খ. ‘ওর মতাে তুচ্ছ জীব শহরে আর নেই’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের বৈসাদৃশ্য কী? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “অতিথির স্মৃতি ও উদ্দীপকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উভয়ক্ষেত্রে পােষা প্রাণীর অনুভূতিই প্রাধান্য পেয়েছে”- যথার্থতা বিশ্লেষণ কর।

ডাউনলোড পিডিএফ

আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।

ssc suggestion 2022