রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর: রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের অগ্রদূত। বিশ শতকের শুরুতে যখন এদেশের নারীরা শিক্ষা-দীক্ষা ও সব অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন তখন তিনি প্রায় একক চেষ্টায় মেয়েদের শিক্ষার জন্য আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাঁর এ আন্দোলনের হাতিয়ার ছিল কলম- লেখালেখি।

একটি শিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনা পরিবারের সদস্য ছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরও যে প্রতিকূলতার ভিতর দিয়ে তাঁকে শিক্ষাগ্রহণ করতে হয়েছে তার তুলনা চলে না। ফলে নারীশিক্ষার চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি ভালোভাবেই অবগত ছিলেন।


রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ১। বিংশ শতাব্দীর সূচনায় রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন কীভাবে নারীমুক্তির পথ দেখেছিলেন?
উত্তর: রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারীমুক্তির দুটি পথ দেখেছিলেন। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সময় মুসলিম সমাজ পর্দাপ্রথা কঠোরভাবে মেনে চলত। সেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নারীর মুক্তির লক্ষ্যে দুটি পথ দেখেছিলেন। এক. মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করা, দুই. নিজের রচনায় নারীমুক্তির দিকনির্দেশনা দান করা। এজন্য তিনি স্বামীর স্মরণে ‘সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং পাঁচটি বই লেখেন।

প্রশ্ন ২। ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম’ সংগঠনটির লক্ষ্য কী ছিল? বর্ণনা কর।
উত্তর: ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম’ রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন প্রতিষ্ঠিত একটি মহিলা সংগঠন, যার লক্ষ্য ছিল সমাজের সাধারণ দুস্থ নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলা। বিশ শতকের শুরুর দিকে বাঙালি মুসলমান নারীরা ছিল চরমভাবে অবহেলিত। বেগম রোকেয়া ১৯১৫ সালে তাদের জন্য একটি মহিলা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম’। এ প্রতিষ্ঠান থেকে সমাজের দুস্থ নারীদের কাজ শিখিয়ে, সামান্য পড়ালেখা শিখিয়ে স্বাবলম্বী করে তোলার চেষ্ট করা হতো।

প্রশ্ন ৩। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস ফুল’টি প্রতিষ্ঠা করেন কেন?
উত্তর: বিশ শতকের অশিক্ষিত ও পিছিয়ে পড়া বাঙালি মুসলমান নারীদের শিক্ষা ও মুক্তির জন্য রোকেয়া সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সমসাময়িক বাঙালি মুসলমান নারীদের অবস্থা ছিল শোচনীয়। তিনি নিজে পড়াশুনায় অনেক আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও স্কুলে যাওয়ার জন্য অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন। প্রথমে ভাইয়ের সাহায্যে ও পরবর্তীতে স্বামী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সহযোগিতায় রোকেয়া পড়াশুনার চর্চা চালিয়ে যান। স্বামী মারা গেলে অশিক্ষিত বাঙালি মুসলমান নারীসমাজকে শিক্ষিত করে তোলার উদ্দেশ্যে তিনি স্বামীর নামে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রশ্ন ৪। “রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন আমাদের কাছে একজন অসাধারণ নারী।” কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: প্রতিকূল পরিবেশে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সাহিত্য সাধনা ও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লেখক এই মন্তব্য করেছেন। রোকেয়ার জন্মের সময় বাঙালি মুসলমান সমাজে শিক্ষার প্রচলন ছিল না। তাই রোকেয়ার ভাইয়েরা উচ্চশিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পেলেও আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও রোকেয়া ও তাঁর বোনেরা শিক্ষার সুযোগ পাননি। অবশেষে রোকেয়ার পড়াশুনায় প্রবল আগ্রহ দেখে বড় ভাই ইব্রাহীম সাবের তাঁকে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করেন। বোন করিমুনেসা তাঁকে বাংলা পড়তে সাহায্য করেন। পরিবার ও পরিবেশের অনেক বাধা পেরিয়ে কেবল আপন ইচ্ছাশক্তির বলে রোকেয়া নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং বাংলা ভাষায় সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন। তাই তিনি আমাদের কাছে একজন অসাধারণ নারী।

প্রশ্ন ৫। উনিশ শতকে বাঙালি মুসলমান সমাজের অবস্থা কেমন ছিল? বর্ণনা কর।
উত্তর: উনিশ শতকে বাঙালি মুসলমান সমাজ ছিল খুবই রক্ষণশীল, অনগ্রসর ও পশ্চাৎপদ। উনিশ শতকে বাঙালি মুসলমান সমাজে রক্ষণশীলতার জন্য শিক্ষার ব্যাপক প্রচলন ছিল না। তাই শিক্ষা-দীক্ষা, চাকরি, সামাজিক প্রতিষ্ঠা সব দিক থেকেই তারা পিছিয়ে ছিল। সেই সমাজে মেয়েদের অবস্থা ছিল আরও শোচনীয়। কারণ সেসময় পর্দাপ্রথাকে কঠোরভাবে মানা হতো বলে শিক্ষালাভের কোনো সুযোগ ছিল না।


🔆🔆 আরও দেখুন: রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
🔆🔆 আরও দেখুন: রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
🔆🔆 আরও দেখুন: রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের যে কোন আপডেট মিস করতে না চাইলে ফেসবুক ও ইউটিউবে সাবক্রাইব করে আমাদের সাথে কানেক্ট থাকতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।