গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন

ভাব-সম্প্রসারণ: গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন

“ভাব-সম্প্রসারণ গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন” ২০২২ সালের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাব-সম্প্রসারণ। আজকের আর্টিকেলে এসএসসি পরিক্ষার উপযোগী ভাব-সম্প্রসারণ টি শেয়ার করা হয়েছে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।

গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন,
নহে বিদ্যা, নহে ধন, হলে প্রয়ােজন

ভাব-সম্প্রসারণ: যে-বিদ্যা মানুষের কাজে লাগে, যে-বিদ্যার ব্যবহারিক প্রয়ােজন রয়েছে সে-বিদ্যা সার্থক। যে- জ্ঞান বা বিদ্যা মানুষের কোনাে কাজে আসে না এবং শুধু পুস্তকেই সীমাবদ্ধ থাকে সে-জ্ঞান বা বিদ্যার কোনাে প্রয়ােজন নেই। বস্তুত গ্রন্থসর্বস্ব বা কেতাবি বিদ্যা মানুষের কোনাে প্রয়ােজনে আসে না।

বিদ্যা এবং ধনের সার্থকতা নির্ভর করে মানুষের প্রয়ােজন মেটানাের ওপর। পার্থিব জীবনে ধন-সম্পদ ও বিদ্যার গুরুত্ব অপরিসীম। গ্রন্থ বা বইপুস্তক পাঠের মাধ্যমে আমরা সাধারণত বিদ্যার্জন তথা জ্ঞানলাভ করে থাকি। কিন্তু শুধু পুথিগত জ্ঞানলাভ করলে শিক্ষা সমাপ্ত হয় না। বইয়ে যে বিদ্যা সঞ্চিত থাকে মানুষ চর্চার মাধ্যমে তাকে আত্মথ করে এবং মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটায়। গ্রন্থপাঠ থেকে অর্জিত বিদ্যা যদি আমরা আমাদের ব্যবহারিক জীবনে যথার্থ কাজে লাগাতে না পারি, তার যদি প্রয়ােগমুখিতা না থাকে, তাহলে সে বিদ্যা বা জ্ঞান মূল্যহীন, নিরর্থক।

সে বিদ্যাকে পরের হাতের ধন-সম্পদের সঙ্গে তুলনা করা যায়। অপরের অধিকৃত সম্পদে আমাদের কোনাে অধিকার নেই, কারণ প্রয়ােজনে তা আমরা ব্যবহার করতে পারি না। ফলে সে সম্পদ যেমন আমাদের কাছে মূল্যহীন, তেমনি চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন করেও যদি আমরা রােগ নির্ণয় ও প্রয়ােজনীয় ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দিতে না পারি অথবা আমাদের অর্জিত জ্ঞানকে যদি প্রাত্যহিক জীবনে কাজে লাগাতে না পারি, তাহলে আমাদের সে বিদ্যাও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।

এ প্রসঙ্গে চাণক্য পণ্ডিতের মন্তব্যটি প্রণিধানযােগ্য, ‘পুঁথিতে যে বিদ্যা থাকে আর পরের হাতে যে ধন থাকে দুটিই সমান। দরকারের সময় সে বিদ্যা বিদ্যা নয়। সে ধন ধন নয়। তা ছাড়া, যে-জ্ঞান ব্যবহারিক জীবনে কোনাে কাজে আসে না, সে-জ্ঞান দ্বারা নিজেরও যেমন কোনাে উপকার হয় না, তেমনি জগতেরও কোনাে কল্যাণ সাধিত হয় না। সুতরাং সার্থক ও সুন্দর জীবনের জন্যে বিদ্যাকে বুদ্ধি দ্বারা আত্মস্থ করে বাস্তবের সঙ্গে সংযােগ করা দরকার এবং ধন-সম্পত্তি অন্যের কাছে অহেতুক গচ্ছিত না রেখে নিজের আয়ত্তে রাখা দরকার, যেন প্রয়ােজনের সময় নিজের কাজে লাগানাে যায় এবং দেশ ও দশের মঙ্গলে বা স্বার্থে সাহায্য করা যায়।

গ্রন্থগত বিদ্যা যা আত্মস্থ করা হয় নি এবং অন্যের ধন যা স্বীয় করায়ত্ত হয় নি— এ সবই নিরর্থক। কারণ প্রয়ােজনের মুহূর্তে এগুলাে যথাযথ ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। প্রকৃতপক্ষে যে-বিষয়টি আত্মস্থ করা যায় না, নিজের অধিকারে ও ব্যবহারে আনা যায় না তা যতই সমৃদ্ধ হােক তাতে মানুষের কোনাে উপকার হয় না।

1️⃣ You Can Also Read: বহুব্রীহি সমাসের শ্রেণিবিভাগ ও বহুব্রীহি সমাস নির্ণয়ের সহজ উপায়
2️⃣ You Can Also Read: তৎপুরুষ সমাসের শ্রেণিবিভাগ ও তৎপুরুষ সমাস নির্ণয়ের সহজ উপায়
3️⃣ You Can Also Read: দ্বন্দ্ব ও দ্বিগু সমাসের শ্রেণিবিভাগ ও নির্ণয়ের সহজ কৌশল
4️⃣ You Can Also Read: কর্মধারয় সমাসের শ্রেণিবিভাগ ও নির্ণয়ের সহজ উপায়


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।