রেইনকোট গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

রেইনকোট গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর (PDF সহ)

রেইনকোট গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: আপনি কি রেইনকোট গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন বা রেইনকোট গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর খুজতেছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেল টি আপনার জন্য।

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আজকের আর্টিকেলে রেইনকোট গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ উত্তরমালা সহ শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।


রেইনকোট গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

সৃজনশীর প্রশ্ন ০১: কোথা হতে কোন পথে কেমন করে মুক্তিফৌজ আসে, আক্রমণ করে এবং প্রতিআক্রমণ করলে কোথায় হাওয়া হয়ে যায়, খানসেনারা তার রহস্য ভেদ করতে পারে না। কখনও কখনও খতরনাক অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। হাট-বাজারের লোকজন, মিল ফ্যাক্টরির শ্রমিক, দোকানদার, স্কুলমাস্টার, ছাত্র সকলকে কাতারবন্দি করে বন্দুকের নল উচিয়ে জিজ্ঞাসা করছে, ‘মুক্তি কিধার হ্যায় বোলো।’ এক উত্তর-ওরা জানে না।

ক. “উও আপ হি কহ সকতা।” উক্তিটি কার?
খ. “টুপির তেজ কি পানিতেও লাগল নাকি?” —–বিশ্লেষণ কর।
গ. “এদিকে নাকি নৌকা করে চলে আসে স্টেনগানওয়ালা ছোকরার দল।” – রেইনকোট’ গল্পের এ প্রসঙ্গটি উদ্দীপকের বিষয়ের সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ) “উদ্দীপক ও ‘রেইনকোট’ গল্প উভয় ক্ষেত্রেই গেরিলাযুদ্ধের গৌরবগাথা বর্ণিত হয়েছে।” — যথার্থতা যাচাই কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক) “উও আপ হি কহ সকতা।” —উক্তিটি প্রিন্সিপাল স্যারের পিওনের।

খ) ভীতু প্রকৃতির মানুষ নুরুল হুদা তার মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের রেখে যাওয়া রেইনকোট ও টুপি পরার পর তাকে তেজি পুরুষের মতোই দেখাচ্ছিল বলে মনে করছিল সে। আলোচ্য উক্তিটি তারই বহিঃপ্রকাশ। প্রিন্সিপালের ডাকে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের রেইনকোট গায়ে দিয়ে নুরুল হুদা বেরিয়ে পড়ে। রেইনকোট গায়ে থাকায় বৃষ্টি পড়লেও সে ভিজে যাচ্ছিল না। তার মাথার টুপির বারান্দা গলিয়ে পানি পড়ছিল। সে পানির কয়েক ফোঁটা সে চেটে দেখল, ঠিক পানসে মনে হয়নি তার। সে মনে করেছিল, এটা টুপির তেজের কারণেই হয়েছে। সে ভাবছিল, রেইনকোট পরে টুপি মাথায় দেওয়ায় তাকে মিলিটারি, পাঞ্জাবি আর্টিলার, বালুচ রেজিমেন্ট, কমান্ডো ফোর্স, প্যারা- মিলিটারি, মিলিটারি পুলিশ ইত্যাদির মতো না হলেও একদম নতুন কোনো নামজাদা বাহিনীর লোকের মতোই তেজি দেখাচ্ছিল। মূলত প্রতীকী রেইনকোট আর টুপির শক্তির বহিঃপ্রকাশ বোঝাতেই লেখক এমন উক্তিটি করেছেন।’

গ) “এদিকে নাকি নৌকা করে চলে আসে স্টেনগানওয়ালা ছোকরার দল।” –’রেইনকোট’ গল্পের এ প্রসঙ্গটি উদ্দীপকের বিষয়ের সাথে গেরিলা আক্রমণের দিক দিয়ে সাদৃশ্যপূর্ণ।

উদ্দীপকে যে আক্রমণ চিত্রটি ফুটে উঠেছে তাকে বলে গেরিলা আক্রমণ। যুদ্ধের ময়দানে প্রতিপক্ষ যখন অধিক শক্তিশালী হয়, তখন যুদ্ধের কৌশল বদল করে শত্রুপক্ষের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে ঘায়েল করতে হয়। আর শত্রুপক্ষের ওপর এমন গোপনে লুকিয়ে থেকে অতর্কিত আক্রমণ চালালে তাকে বলে গেরিলা আক্রমণ। উদ্দীপকের মুক্তিযোদ্ধারাও এভাবে আক্রমণ চালায়, যার কারণে পাক সেনারা মুক্তিসেনাদের গমনাগমনের রহস্যভেদ করতে পারে না।

তাই তারা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে বন্দুক উঁচিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পক্ষান্তরে, ‘রেইনকোট’ গল্পের নুরুল হুদা নিরাপত্তার খাতিরে চারবার বাসা বদলের শেষবার যায় শহর ছেড়ে একটু দূরে গ্রাম্য পরিবেশে। সেখানের বাসাটায় পুবের জানালায় তাকিয়ে সে বিল আর ধানক্ষেত দেখতে পায়। নুরুল হুদা প্রথমত মুক্ত পরিবেশে বুক ভরে প্রশান্তির শ্বাস নিতে পারবে ভেবে পুলকিত হয়। কিন্তু পরক্ষণে সে যখন জানতে পারে এই বিলের ধানক্ষেতের ভেতর দিয়েই নৌকায় করে চলে আসে স্টেনগানওয়ালা ছোকরার দল তথা মুক্তিফৌজের দল বা মুক্তিবাহিনী।

এদিক দিয়েই তারা নৌকা ভরে অস্ত্র নিয়ে আসে। পাকিস্তানি হানাদারদের উপর গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে ঘায়েল করে আবার এদিক দিয়েই চলে যায়। হানাদার বাহিনী বুঝতেই পারে না কীভাবে আক্রমণ হল্মে আর প্রতিআক্রমণ চালাতে গেলে তারা কোথায় হারিয়ে গেল। অর্থাৎ, আলোচ্য উদ্দীপকটির সাথে প্রশ্নে উদ্ধৃত রেইনকোট গল্পের প্রসঙ্গটি মুক্তিফৌজ তথা মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের ধরনের সাথে যেমন সাদৃশ্য প্রকাশ করে তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে যে বর্বর পাকিস্তানি সেনারা নাজেহাল হয়ে এসেছে উদ্দীপক ও গল্পের প্রসঙ্গটি সে সাদৃশ্যেরও ইঙ্গিত বহন করে।

ঘ) উদ্দীপক ও ‘রেইনকোট’ গল্প উভয় ক্ষেত্রেই গেরিলা যুদ্ধের গৌরকাঁাথা বর্ণিত হয়েছে।” —উক্তিটি যথার্থ। বাংলার মুক্তিবাহিনী যখন পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে কোনোভাবেই পেরে উঠছিল না, তখন মুক্তিযোদ্ধারা তাদের যুদ্ধের কৌশল বদল করে। বর্বর হানাদার বাহিনীর উপর তারা গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে ঘায়েল করে।

হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের এমন অতর্কিত আক্রমণে কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তখন হাটে-মাঠে-ঘাটে যাকে যেখানে পায় তাকেই ধরে নিয়ে গিয়ে তারা মুক্তিবাহিনীর খবর জানতে বন্দুকের নল উচিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু তারা কেউই মুক্তিবাহিনী সম্পর্কে কিছু বলতে পারে না। আলোচ্য উদ্দীপকের বর্ণনায় ও মুক্তিফৌজের গেরিলা আক্রমণের কথাই স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান। উদ্দীপকের মুক্তিফৌজের দল কোথা থেকে কীভাবে আসে তা হানাদার বাহিনী জানতে পারে না। কিন্তু তারা মুক্তিফৌজদের আক্রমণের শিকার হয়। তারা প্রতিআক্রমণ চালাতে গেলেও ব্যর্থ হয় কারণ, তারা তখন আর মুক্তিফৌজদের খুঁজে পায় না। তারা কিছুতেই মুক্তিফৌজদের এই গমনাগমনের রহস্যভেদ করতে পারে না। যা মুক্তিফৌজদের গেরিলা যুদ্ধের গৌরবগাঁথাই প্রকাশ করে।

“রেইনকোট গল্পে যে চিত্রটি অঙ্কিত হয়েছে তা মুক্তিযুদ্ধের প্রায় শেষ পর্যায়ের চিত্র। প্রেক্ষাপট তখনকার ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণের শুরু। যেখানে মুক্তিবাহিনী গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে কলেজের সামনের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ধ্বংস করে দেয়। হানাদারবাহিনী এই আক্রমণকারী মুক্তিবাহিনীর সন্ধানের জন্য কলেজের শিক্ষকদের তলব করে তাদের মধ্যে থেকে নুরুল হুদা ও আবদুস সাত্তার মৃধাকে গ্রেপ্তার করে। দারুণ নির্যাতন-নিপীড়ন করে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর জানতে চায়। সমস্ত গল্পটিই বর্ণিত হয় গেরিলা আক্রমণের পরের দিনের ঘটনা।

আর গল্পের মূলকথক বা নুরুল হুদাও উদ্দীপকের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষগুলোর মতো একজন ভুক্তভোগী। অর্থাৎ আমরা যদি উদ্দীপক ও রেইনকোট গল্পের মূল বিষয়ের দিকে আলোকপাত করি তবে দেখতে পাই বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণের গৌরবগাথা বর্ণনা করে। অতএব একথা স্পষ্টতই বলা যায় যে, উদ্দীপক ও ‘রেইন টি’ গল্প উভয় ক্ষেত্রেই গেরিলা যুদ্ধের গৌরবগাঁথা বর্ণিত হয়েছে।” উক্তিটি যথার্থ।

সৃজনশীল প্রশ্ন ০২:

হয়তোবা ইতিহাসে তোমাদের নাম লেখা রবে না
বড় বড় লোকদের ভীড়ে জ্ঞানী আর গুণীদের আসরে
তোমাদের কথা কেউ কবে না, তবু এই বিজয়ী বীর মুক্তিসেনা
তোমাদের এই ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না।

ক) ‘রেইনকোট’ গল্পে পিয়নের নাম কী?
খ) ‘ক্লাক ডাউনের রাত’ বলতে কী বুঝায়?
গ) “উদ্দীপকের মুক্তিসেনা যেন ‘রেইনকোট’ গল্পের মিন্টুকে মনে করিয়ে দেয়” বর্ণনা কর।
ঘ) “রেইনকোট’ গল্পের মূলভাব উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে।” —মন্তব্যটি যাচাই কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক) ‘রেইনকোট’ গল্পে পিয়নের নাম ছিল ইসহাক মিয়া।

খ) ‘রেইনকোট’ গল্পে ‘ক্লাক-ডাউনের রাত’ বলতে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কাল রাতের কথা বোঝানো হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ ভয়াল রাতটিতে সূচনা হয় বাঙালির ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। কেননা, এই রাতে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত, নিরস্ত্র, অসহায় মানুষের উপর অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সারা বাংলাদেশের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার উপর পৈশাচিক কায়দায় গণহত্যার সূচনা ঘটায়। ক্লাক-ডাউনের রাত বহুতে ‘রেইনকোট’ গল্পে এ রাতকেই বোঝানো হয়েছে।

গ) “উদ্দীপকের মুক্তিসেনা ‘রেইনকোট’ গল্পের, মিন্টুকে মনে করিয়ে দেয়।” —উক্তিটি যথার্থ। উদ্দীপর্কে যে মুক্তিসেনাদের গৌরবগাঁথা ধ্বনিত হয়েছে তারা দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ করেছে। বাংলাদেশের আর দশজন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধার মতো তারাও প্রাণপণ লড়াই করে এ দেশকে হানাদারমুক্ত করে স্বাধীন করেছে। তাই তাদের কাছে আমরা চিরঋণী।

হয়তো তাদের নাম জ্ঞানী আর গুণীদের আসরে ধ্বনিত হবে না। তাদের নামের পাশে লেখা থাকবে না এই সব সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে বাস করে তাদের ঋণের দায় এড়ানো যাবে না কিছুতে। তাই আমরা তাদের কাছে চিরঋণী। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন শ্রদ্ধার সাথে তাদের আমরা স্মরণ করতে বাধ্য থাকত।

তেমনি ‘রেইনকোট’ গল্পের মিন্টু তথা কলেজ শিক্ষক নুরুল হুদার শ্যালকও একজন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা। সেও তার প্রাণের মায়া ত্যাগ করে বর্ডার ক্রস করে ওপার বাংলা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে যোগ দেয় সশস্ত্র সংগ্রামে। পাকিস্তানি বাহিনী যখন গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিতে থাকে, টপাটপ মানুষ মারে, মা-বোনদের ধরে নিয়ে যায়, সম্ভ্রম লুট করে হত্যা করে। তাদের বিরুদ্ধে প্রবল দুঃসাহসে রুখে দাঁড়ায় মিন্টু। সে ২৩ শে জুন’ শামিল হয় সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধে। একের পর এক গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে ধ্বংস করে দেয় পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প। জয় করে আনে পরাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন সূর্য।

‘রেইনকোট’ গল্পের নুরুল হুদা যেমন মিন্টুর সাহসিকতায় প্রভাবিত হয় তেমনি বাংলার নাম না জানা হাজার মুক্তিযোদ্ধার প্রভাবে প্রতারিত হই আমরাও। তাই বিশ্বের জ্ঞানী, গুণীদের সভায় তার নাম উচ্চারিত না হলেও, তাদের নামের পাশে তার নাম লেখা না থাকলেই তাদের ঋণকে কিছুতেই অস্বীকার করা যাবে না। কেননা তাদের মহান আত্মত্যাগের কারণেই আমরা স্বাধীন সার্বভৌম জাতি। অতএব বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।


🔆🔆 আরও দেখুন: রেইনকোট গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন (PDF)
🔆🔆 আরও দেখুন: রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর


ঘ) “রেইনকোট’ গল্পের মূলভাব উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে।” —উক্তিটি যথার্থ। আলোচ্য উদ্দীপকে সেই সব মুক্তিসেনার গৌরবগাঁথা ধ্বনিত হয়েছে যাদের মহান আত্মত্যাগে আজ আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ-সংঘর্ষের মাধ্যমে মুক্তিসেনারা এদেশ স্বাধীন করে।

অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে অকুতোভয় বাঙালি মুক্তিসেনারা দেশ মাতৃকার শৃঙ্খল মোচনের দৃঢ় প্রত্যয়ে রুখে দাঁড়ায়। অসংখ্য তাজা প্রাণের বলিদান আর লক্ষ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে একদিন তারা ছিনিয়ে আনে বাংলার স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। হয়তো তাদের নাম বিশ্বের জ্ঞানী-গুণীদের আসরে উচ্চারিত হবে না কিংবা তাঁদের নামের পাশেও লেখা রবে না এই সব আত্মোৎসর্গকারী মুক্তিযোদ্ধাদের নাম। তবুও যারা বাংলার স্বাধীনতার জন্য হাসিমুখে মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছে। তাদের কাছে সমগ্র বাঙালি জাতি আজন্মকাল ঋণী থাকবে। কেননা তাদের কারণেই আজ আমরা বিশ্বের বুকে আপন পরিচয়ে পরিচিত।

‘রেইনকোট’ গল্পের মূলভাব পর্যালোচনা করলেও আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের অপার সাহসিকতা ও কীর্তিগাথার প্রকাশ দেখতে পাই। ‘রেইনকোট’ গল্পের কলেজ শিক্ষক নুরুল হুদার শ্যালকও একজন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা। সেও দেশের কথা, দেশের মানুষের মুক্তির কথা চিন্তা করে যোগ দেয় মুক্তিযুদ্ধে। একের পর এক সাহসী অভিযানের মাধ্যমে ঘায়েল করে পাকিস্তানি সেনাদের। যার সাহস ও দেশপ্রেম ব্যঞ্জনাময় হয়ে উঠেছে নুরুল হুদার গায়ে জড়ানো রেইনকোটটির মাধ্যমে। ঠিক এমনিভাবেই মুক্তিযোদ্ধারা তাদের চেতনা, তাদের দুঃসাহসিকতা আমাদের চেতনাকে আন্দোলিত করে।

তাই ইতিহাসের পাতায় মিন্টুর মতো মুক্তিযোদ্ধাদের ঠাঁই না হলেও বাংলার আপামর মানুষের হৃদয়ে তাদের ঠাঁই চিরকালীন। তারা অনন্তকাল মিশে রবে বাঙালির জাতীয়াতাবোধের সত্ত্বায়, বাংলার মানুষের আত্ময়। উপরোক্ত আলোচনা পরিশেষে বলা যায় যে, রেইনকোট গল্পের মূলভাবের প্রতিফলনই উদ্দীপকের সুললিত কাব্যময়তায় প্রোথিত হয়েছে। অর্থাৎ উদ্দীপকটি ‘রেইনকোট’ গল্পেরই আক্ষরিকতার বাহ্যিক প্রতিচ্ছবি বা প্রতিফলন।

সৃজনশীল প্রশ্ন ০৩: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে একটি ছাত্রাবাস থেকে মিলিটারিরা সাজ্জাদকে তুলে নিয়ে যায়। অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে তারা তার পিতার সন্ধান চায়। ক্ষত-বিক্ষত হয়েও সাজ্জাদ নীরব থাকে। মনে পড়ে বাবার শেষ উপদেশ, “জীবনের চেয়ে দেশ অনেক বড়।” নিজেকে একজন দেশপ্রেমী মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মনে করায় তার বুক ফুলে ওঠে।

ক) “সেই চোখ ভরা ভয়, কেবল ভয়” –’রেইনকোট’ গল্পে কোন চোখের কথা বলা হয়েছে?
খ) “ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের নতুনরূপে সে ভ্যাবাচ্যাকা খায়।” –কে, কেন ভ্যাবাচ্যাকা খায়?
গ) উদ্দীপকের সাজ্জাদ ‘রেইনকোট’ গল্পের কোন চরিত্রের সাথে তুলনীয়? তুলনার যৌক্তিকতা তুলে ধর।
ঘ) সাজ্জাদের চেতনা ‘রেইনকোট’ গল্পের মূলভাবকে কতখানি ধারণ করে বলে তুমি মনে কর? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক) “সেই চোখ ভরা ভয়, কেবল ভয়”, -‘রেইনকোট’ গল্পে হঠাৎ বাস থেকে নেমে যাওয়া সর্দার টাইপের লোকটার চোখের কথা বলা হয়েছে।

খ) নুরুল হুদা ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের নতুন রূপ দেখে সে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। নুরুল হুদা একজন ভীতু প্রকৃতির কলেজ শিক্ষক। সে প্রবল বর্ষণের কারণে তার স্ত্রীর কথামতো তার ভাই ফটুর রেইনকোট পরে। তার বারান্দাওয়ালা টুপিটাও সে মাথায় দেয়। নুরুল হুদার গায়ে ফটুর রেইনকোট দেখে তার পাঁচ বছরের ছোট ছেলেটি বলে তাকে ছোট মামার মতো দেখাচ্ছে। ‘নুরুল হুদা ছোট্ট ছেলের মুখে এমন কথা শুনে চমকে যায়। কারণ, তাকে যদি সত্যি সত্যি মুক্তিবাহিনীর মতো দেখায়, পাকসেনারা তাকে দেখে যদি মুক্তিবাহিনীর লোক মনে করে ভুল করে এসব কথা মনে করে সে ভাবনায় পড়ে যায়। তাই সে রেইনকোট গায়ে নিজেকে কেমন দেখাচ্ছে তা যাচাই করতে গেলে সে নিজের নতুন রূপ দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।

গ) উদ্দীপকের সাজ্জাদ ‘রেইনকোট’ গল্পের নুরুল হুদা চরিত্রের সাথে তুলনীয়। মুক্তিযোদ্ধারা যখন একের পর গেরিলা আক্রমণে পাকহানাদারদের কোণঠাসা করে ফেলে তখন পাকহানাদার বাহিনীও মুক্তিযোদ্ধাদের নিধনের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। তাই তারা মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মীয়-স্বজনদের ধরে নিয়ে যায়। নানা রকম নির্যাতন-নিপীড়ন করে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর জানতে চায়। আলোচ্য উদ্দীপকেও সাজ্জাত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলেই তাকেই ছাত্রাবাস থেকে পাক হানাদাররা তুলে নিয়ে যায়। তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে তার পিতার সন্ধান জানতে চায়।

কিন্তু সাজ্জাদ ক্ষত-বিক্ষত হয়েও নীরব থাকে। তার পিতার উপদেশ মনে করে গর্ববোধ করে। ঠিক তেমনি ‘রেইনকোট’ গল্পের নুরুল হুদাকেও ধরে নিয়ে যায়। নানান নির্যাতন-নিপীড়ন করে তার কাছে মিসক্রিয়েন্টদের তথা মুক্তিযোদ্ধাদের খবর জানতে চায়। কিন্তু নুরুল হুদা উদ্দীপকের সাজ্জাদের মতোই নীরব থাকে। দাঁতে দাঁত চেপে সব অত্যাচার হজম করে নেয়। সে সব জেনেও কিছুতেই মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধান দেয় না। তাকে ছাদে লাগোয়া আংটার সাথে ঝুলিয়ে তার পাছায় সপাৎ সপাৎ করে চাবুক মারলেও সে চুপ থাকে। সে তার শরীর থেকে খুলে ফেলা রেইনকোট ও তার মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের কথা মনে করে সাহস অনুভব করে।

উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উদ্দীপক ও ‘রেইনকোট’ গল্পে দুটি ক্ষেত্রেই পাকহানাদারদের নির্মম নির্যাতনের চিত্র ফুটে উঠেছে। যেখানে দুজন ভুক্তভোগী তথা উদ্দীপকের সাজ্জাদ ও রেইনকোট গল্পের নুরুল হুদা একই পরিস্থিতির শিকার। অর্থাৎ উদ্দীপকের সাজ্জাদ ‘রেইনকোট’ গল্পের নুরুল হুদা চরিত্রের সাথে তুলনীয়” —উক্তিটি যথার্থ।

ঘ) সাজ্জাদের চেতনা ‘রেইনকোট’ গল্পে মূলভাবকে সম্পূর্ণই ধারণ করে বলে আমি মনে করি। পরাধীনতার শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন কেউই চায় না। সেই পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তির প্রত্যয়েই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর কাছ থেকে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতেই জীবন উৎসর্গ করেছে লাখ লাখ মুক্তিসেনা। তাদের এ মহান আত্মত্যাগেই সমগ্র বাঙালি জাতি আজ মহিমান্বিত, গৌরবান্বিত। উদ্দীপকের সাজ্জাদ ও তার মুক্তিযোদ্ধা পিতার মধ্যে দিয়ে “জীবনের চেয়ে দেশ বড়” যে মহান আদর্শের ঘোষণা হয়েছে তা রেইনকোট গল্পেও স্পষ্ট।

উদ্দীপকের সাজ্জাদ একজন আবাসিক হোস্টেলে থাকা ছাত্র। তাকে ভরি মুক্তিযোদ্ধা পিতার সন্ধানের জন্য পাক হানাদার বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু সাজ্জাদ তাদের সকল অমানবিক নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করে নীরব থাকে। কিছুতেও তার বাবার সন্ধান বলে না। সে তার বাবার উপদেশ বাণী মনে করে মনে মনে সাহস সঞ্চার করে। সে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে গৌরববোধ করে। তেমনি ‘রেইনকোট’ গল্পেও একজন ভীতু প্রকৃতির কলেজ শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা মন্টুর দুলাভাইসহ তার সহকর্মীকে ধরে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। নুরুল হুদাকে দারুণ নির্যাতন-নিপীড়ন করে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধান জানতে চায়।

কিন্তু সেও উদ্দীপকের সাজ্জাদের মতো সকল নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করে নেয়। সে মনে মনে তার গা থেকে খুলে ফেলা মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের রেইনকোটের কথা মনে করে হৃদয়ে সাহস সঞ্চয় করে। সেও স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তার আঁতাতের কথা ভেবে উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে। তখন সকূল নির্যাতনই তার কাছে তুচ্ছ মনে হয়।

উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আলোচ্য উদ্দীপকের সাজ্জাদের “জীবনের চেয়ে দেশ বড়” –চেতনাটিই যেন ‘রেইনকোট’ গল্পের সম্পূর্ণ মূলভাবকে ধারণ করে।


সৃজনশীর প্রশ্ন ০৪:

“ধা করে একটি ট্রাক যাচ্ছে ছুটে, আরোহী ক’জন
চোখ বাঁধা, হাত বাঁধা অবস্থা মানুষ
রেইনকোট পাশে রাইফেলধারী পাঞ্জাবী সৈনিক।
ছাত্র নই, মুক্তি সেনা নই কোনও, তবু
হঠাৎ হ্যান্ডস আপ বলে
স্টেনগান হাতে আর প্রশ্ন দেয় ছুঁড়ে ঘাড় ধরে
বাঙালিহো তুম”?

ক) মিলিটারি পাণ্ডা কোথায় বসেছিল?
খ) নুরুল হুদার কাছে কোন বিষয়টিকে ‘স্রেফ উৎপাত’ বলে মনে হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ) উদ্দীপকের ‘চোখ বাঁধা, হাত বাঁধা আবছা মানুষ’ বলতে ‘রেইনকোট’ গল্পে কাদের কথা বোঝানো হয়েছে? আলোচনা কর।
ঘ) উদ্দীপকে মিলিটারিদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের ছবি যেন ‘রেইনকোট’ গল্পের প্রতিচ্ছবি। ব্যাখ্যা কর।

কলিমদ্দি দফাদারের বোর্ড অফিস শীতলক্ষ্যা তীরের বাজারে। নদীর এপারে ওপারে বেশ কিছু বড় বড় কলকারখানা। এগুলো শাসনের সুবিধার্থে একদল খান সেনা বাজার সংলগ্ন হাই স্কুলটিকে ছাউনি করে নিয়েছে। কোনো কোনো রাত্রে গুলিবিনিময় হয়। কোথা হতে কোন পথে কেমন করে মুক্তিফৌজ আসে, আক্রমণ করে এবং প্রতি আক্রমণ করলে কোথায় হাওয়া হয়ে যায়, খান সেনারা তার রহস্য ভেদ করতে পারে না।

ক)‘বর্ষাকালেই তো জুৎ’—কথাটি কে বলেছিল?
খ) “রাশিয়ায় ছিল জেনারেল উইস্টার, আমাদের জেনারেল মনসুন” ব্যাখ্যা কর।
গ) উদ্দীপকটির শেষাংশের বক্তব্য ‘রেইনকোট গল্পের কোন বিষয়টি নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ) “উদ্দীপকটিতে ‘রেইনকোট’ গল্পের আংশিক বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে।” —তোমার মতামতসহ আলোচনা কর।

সৃজনশীর প্রশ্ন ০৫:

বর্গি এল খাজনা নিতে
মারল মানুষ কত।
পুড়ল শহর পুড়ল শ্যামল
গ্রাম যে শত শত।
হানাদারের সঙ্গে জোরে
লড়ে মুক্তি সেনা
তাদের কথা দেশের মানুষ
কখনো ভুলবে না।

ক) ‘রেইনকোট’ গল্পের কথকের নাম কী?
খ) “রাশিয়ায় ছিল জেনারেল উইনটার, আমাদের জেনারেল মনসুন” “ব্যাখ্যা কর।
গ) উদ্দীপকটিতে ‘রেইনকোট’ গল্পের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ) “হানাদারের সঙ্গে জোরে লড়ে মুক্তি সেনা—–উদ্দীপকের এই বক্তব্যের মতো ‘রেইনকোট’ গল্পেও প্রতিরোধের চিত্র রয়েছে।” –তোমার মতামতসহ আলোচনা কর।

সৃজনশীর প্রশ্ন ০৬: “চকচকে রোদ। সড়কের উত্তরে রাইফেল রেঞ্জের মধ্যে গামছা-পরা এক কিশোর তিন চারটে গরু খেদিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তার মাথায় ছালা বোঝাই ঘাস। কাঁধে লাঙল-জোয়াল। সম্ভবত সে মাঠ থেকে বাড়ি ফিরছে। ‘মুক্তি! মুক্তি!’। একজন সৈনিক চিৎকার করে ওঠে। ‘কাঁহা? কাহা?’- অপরেরা প্রশ্ন করে। ‘ডানহা তরফ দেখো।’ কলিমুদ্দি দফাদার সবিনয়ে বলতে চায়, ‘মুক্তি নেহি ক্যান্টিন সাব, উয়ো রাখাল হ্যায়, মেরা চেনাজানা হ্যায়।’ ‘চুপরাও সালে কাফের কা বাচ্চা কাফের। মুক্তি, আলবৎ মুক্তি।’ বলেই সকলে একসঙ্গে গুলি ছোঁড়ে। এলাকা কেঁপে ওঠে। ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়ে দূরে ছড়িয়ে পড়ে।

ক) ‘রেইনকোট’ গল্পটি কার লেখা?
খ) ‘ক্লাক ডাউনের’ রাতে কী ঘটেছিল?
গ) উদ্দীপকে ‘রেইনকোট’ গল্পের যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ) উদ্দীপক ও ‘রেইনকোট’ গল্পের আলোকে স্বাধীনতা যুদ্ধে এদেশের জনসাধারণের অবস্থা আলোচনা কর।

সৃজনশীর প্রশ্ন ০৭:

বিদেশি সেনার কামান বুলেটে বিদ্ধ
নারী শিশু আর যুবক-জোয়ান-বৃদ্ধ
শত্রু সেনারা হত্যার অভিযানে
মুক্তিবাহিনী প্রতিরোধ উত্থানে
মুক্তির পথ যুদ্ধেও রয় জেনে
ঘাতক ধ্বংস করেছে অস্ত্র হেনে।

ক)· ‘রেইনকোট’ গল্পটি কত সালে প্রকাশিত হয়?
খ) “যেন বৃষ্টি পড়ছে ফিন্টুর রেইনকোটের উপর”— বাক্যটি বুঝিয়ে লেখ।
গ) উদ্দীপকের “বিদেশি সেনা” ‘রেইনকোট’ গল্পের কাদের সাথে তুলনীয়? পাঠ্যগল্পে তাদের তৎপরতার সাথে উদ্দীপকের বর্ণনার মিলগুলো তুলে ধর।
ঘ) “উদ্দীপকটির ‘মুক্তিবাহিনী’র সাথে ‘রেইনকোট’ গল্পে বর্ণিত মুক্তিযুদ্ধের সপ্তক্ষশক্তির বর্ণনা অনেকটা সাদৃশ্যযুক্ত হলেও বৈসাদৃশ্যও রয়েছে”— মন্তব্যটির যথার্থ্য নিরূপণ কর।

সৃজনশীর প্রশ্ন ০৮: তারামন বিবি ১১ নং সেক্টরের একজন নারী মুক্তিযোদ্ধা। আজিজ মাস্টারের ক্যাম্পে তিনি মুক্তিবাহিনীর জন্য রান্নার দায়িত্ব পালন করেন। মুহিব হালদারের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি পুরুষের পাশাপাশি সরাসরি যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন।

ক) ‘রেইনকোট’ গল্পটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত?
খ)‘আব্বু তাহলে মুক্তিবাহিনী’— ব্যাখ্যা কর।
গ) উদ্দীপকের তারামন বিবির সাথে ‘রেইনকোট’ গল্পের মিন্টুর তুলনা কর।
ঘ) নারী ও পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে’— ‘রেইনকোট’ গল্প ও উদ্দীপকের আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীর প্রশ্ন ০৯: তালেব মাস্টার অত্যন্ত ভীতু প্রকৃতির একজন মানুষ। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের জন্য তার দাদার ফাঁসি হয়। আলমারিতে রক্ষিত দাদার ব্যবহৃত বুটজোড়া মাঝে মাঝে পায়ে দেয় মাস্টার। তখন গর্বে ও সাহসে বুক ভরে ওঠে তার। মুক্তিযোদ্ধারা গ্রামের কালভার্ট ও ব্রীজ উড়িয়ে দিয়েছে। মিলিটারি ক্যাম্প আক্রমণ করেছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তালেব মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগসাজশ আছে বলে তাঁর উপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। কিন্তু পায়ে থাকা দাদার বুট জোড়া যেন তাকে সাহসী করে তোলে। দেশপ্রেমে উজ্জীবিত তালেব মাস্টার অনায়াসেই হজম করে সব অত্যাচার। তার মুখ থেকে একটি শব্দও বের করতে ব্যর্থ হয় পাকিস্তানি হায়েনারা।

ক)‘বর্ষাকালেই তো জুৎ’ – উক্তিটি কে করেছিল?
খ) “রাশিয়ায় ছিল জেনারেল উইন্টার, আমাদের জেনারেল মনসুন” – কথাটি ব্যাখ্যা কর।
গ) উদ্দীপকের তালেব মাস্টারের সাথে ‘রেইনকোট’ গল্পের কোন চরিত্রের মিল রয়েছে? আলোচনা কর।
ঘ) “মুক্তিযোদ্ধা শ্যালক মিন্টুর রেইনকোট গায়ে দিতেই ভীতু প্রকৃতির নুরুল হুদার মধ্যে সঞ্চারিত হয় অপরিসীম সাহস ও উষ্ণ দেশপ্রেমের” – উক্তিটির আলোকে উদ্দীপকটি বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীর প্রশ্ন ১০:

তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,
সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর।
তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,
শহরের বুকে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক এলো
দানবের মতো চীৎকার করতে করতে
তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো। রিকয়েললেস রাইফেল
আর মেশিনগান খই ফোটালো যত্রতত্র।

ক) ‘রেইনকোট’ গল্পটি কোন গল্পগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?
খ) ‘এগুলো হলো পাকিস্তানের শরীরের কাঁটা’- উক্তিটি বুঝিয়ে দাও।
গ) উদ্দীপকে বর্ণিত বিশেষ সময়ের ভয়াবহতা ‘রেইনকোর্ট’ গল্পের সাথে সাদৃশ্যযুক্ত।- মন্তব্যটি বুঝিয়ে দাও।
ঘ) ‘রেইনকোট’ গল্পে শিক্ষক নুরুলহুদার শারীরিক ও মানসিক পরিণতির যে চিত্র বর্ণিত হয়েছে তার প্রতীকী ব্যাঞ্জনা উদ্দীপকে নেই- মন্তব্যটি তোমার যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীর প্রশ্ন ১১: সন্তানকে রক্ষা করতে নিজের বুকে গুলি পর্যন্ত খেলেন লিপি মণ্ডল। এর পরও শেষ রক্ষা হলো না। ছয় বছরের শিশু পুত্র পরাগ মণ্ডলকে দিন দুপুরে অপহরণ করে নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা। শিশুটির এখনও কোনো খোঁজ নেই। এ ধরনের একটি ঘটনা তখনই ঘটে যখন আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতিতে জনমনে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে।

ক) কার জন্য, নুরুল হুদাকে তটস্থ থাকতে হয়?
খ) নুরুল হুদার স্ত্রী কেন বাড়ি পাল্টানোর জন্য হন্যে হয়ে লেগে গেলেন?
গ) উদ্দীপকের লিপি মণ্ডলের সাথে ‘রেইনকোট’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য আছে? আলোচনা কর।
ঘ) “উদ্দীপকের সন্তানহারা লিপি মণ্ডল যেন ‘রেইনকোট’ গল্পের নুরুল হুদারই প্রতিনিধিত্ব করে।” উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

সৃজনশীর প্রশ্ন ১২: ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা ঢাকা শহরকে তাদের অধিকারে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ফার্মগেটে ভারি অস্ত্রসস্ত্রসহ চেক পোস্ট বসিয়ে সতর্ক প্রহরা দেয়। গেরিলা বাহিনী এই বড় চেকপোস্টটিতে হামলা করার পরিকল্পনা করে। তারা একটি ভক্স ওয়াগন গাড়ি নিয়ে ৭ই আগস্ট সন্ধ্যায় চেকপোস্টে হামলা করে। গ্রেনেড, স্টেনগান ও ফসফরাস বোমা ব্যবহার করে চেকপোস্টটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে; পাঁচ সেনা ও ছয় রাজাকার নিহত হয়। হোটেল কন্টিনেন্টালে তখন বিদেশি সাংবাদিকগণ অবস্থান করেছেন। আপারেশনটি সবার মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করলেও পরবর্তীতে মিরপুর রোডে আহত অবস্থায় বদি নামক এক গেরিলা ধরা পড়ে।

ক) ‘রেইনকোট’ গল্পের উর্দু প্রফেসরের নাম কী?
খ) “বারান্দাওয়ালা টুপির নিচের শব্দের ঘষায় ঘষায় আগুন জ্বলে এবং তার উল্কা বেরোয় তার চোখ দিয়ে।” -কথাটির মর্মার্থ কী?
গ) উদ্দীপকের গেরিলাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ‘রেইনকোট’ উল্লিখিত গেরিলাদের কোন দিক দিয়ে মিল আছে?
ঘ) “উদ্দীপকটির ঘটনা অসামান্য সাহসিকতার কিন্তু ‘রেইনকোট’ ঘটনা চেতনাগত জাগরণের”। —মন্তব্যটিকে তুমি কীভাবে বিচার করবে?


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের যে কোন আপডেট মিস করতে না চাইলে ফেসবুক ও ইউটিউবে সাবক্রাইব করে আমাদেস দাথে কানেক্ট থাকতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।