নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান ২য় অধ্যায়

নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান ২য় অধ্যায় এর অনুধাবণ মূলক প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা। কেমন আছো তোমরা? আশাকরি সবাই ভালো আছো। পিডিএএফ মেলার আজকের পোস্টে তোমাদের স্বাগতম। আজকের পোস্টে আমি নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান ২য় অধ্যায় জীবকোষ ও টিস্যু এর সকল অনুধাবন মূলক প্রশ্ন আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।

১. প্লীহার সঞ্চালনে অংশগ্রহণকারী পেয়েছে এর গঠন ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: প্লীহার সালনে অংশগ্রহণকারী পেশি হলাে অনৈচ্ছিক পেশি। অনৈচ্ছিক পেশি টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। এ পেশির কোষগুলাে মাকু আকৃতির। এদের গায়ে আড়াআড়ি দাগ থাকে। এজন্য এ পেশিকে মসৃণ পেশিও বলা হয়।

২. এইডসকে কি মারাত্মক ব্যাধি বলা হয় কেন?

উত্তর: এইডস রােগের ভাইরাসের নাম হলাে HIV। এই ভাইরাস শ্বেত রক্তকণিকার ক্ষতিসাধন করে এবং এ কণিকার এন্টিবডি তৈরিতে বিঘ্ন ঘটায়। ফলে এ ভাইরাসের আক্রমণে রােগীর দেহে রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বিনষ্ট হয়ে যায়। ফলে রােগীর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়ে। এ রােগের প্রতিকারে কোনাে ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। এজন্য একে মারাত্মক ঘাতক ব্যাধি বলা হয়। 

৩. কোন টিস্যুকে পরিবহন টিস্যু বলা হয়? কারন সহ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: যে টিস্যু মাটি থেকে শােষিত পানি ও খনিজ লবণ এবং পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্য চলাচলে সহায়তা করে তাকে পরিবহন টিস বলা হয়। জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুকে পরিবহন টিস্যু বলা হয়। কারণ জাইলেম মাটি থেকে পানি ও খনিজ লবণ পাতায় পৌঁছায় এবং ফ্লোয়েম পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্য সারা উদ্ভিদেহে পরিবাহিত করে। 

৪. সেন্ট্রোসোম বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: প্রাণিকোষের নিউক্লিয়াসের কাছে যে দু’টি ফাপা নলাকার বা দণ্ডাকার অঙ্গাণু দেখা যায়, তাদেরকে সেন্ট্রিওল বলে। এই সেন্ট্রিওলের চারপাশে অবাঞ্ছিত গাঢ় তরলকে সেন্ট্রোস্ফিয়ার বলে। সেন্ট্রোস্ফিয়ারসহ সেন্ট্রিওলকে সেন্ট্রোসােম বলা হয়। সেন্ট্রোসােম স্পিন্ডল যন্ত্র ও বিভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাজেলা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। এছাড়া সেন্ট্রোসােমে বিদ্যমান সেন্ট্রিওল কোষ বিভাজনের সময় অ্যাস্টার রে উৎপাদন করে। 

৫. ফটোলাইসিস প্রক্রিয়া কি ব্যাখ্যা করো?

উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় সূর্যালােক ও ক্লোরােফিলের সহায়তায় পানি বিয়ােজিত হয়ে অক্সিজেন, হাইড্রোজেন ও ইলেক্ট্রন উৎপন্ন হয় তাকে ফটোলাইসিস বলে। ফটোলাইসিস হচ্ছে পানির সালােক বিভাজন। পানি ফটোলাইসিস প্রক্রিয়ায় ভেঙে O2 হিসেবে বায়ুতে নির্গত হয় এবং 2H+, NADP কে বিজারিত করে NADPH, H+ ‘ সৃষ্টি করতে ব্যবহৃত হয়।

৬. ফ্লুইড অফ লাইফ বলতে কি বুঝায়?

উত্তর: ফ্লুইড অফ লাইফ বলতে পানিকে বােঝানাে হয়েছে। কারণ পানি, ছাড়া জীব বাঁচতে পারে না। পানির অপর নাম জীবন। কোষের প্রােটোপ্লাজমের প্রায় ৯০ ভাগই পানি। প্রােটোপ্লাজম সজীব রাখতে পানির কোনাে বিকল্প নেই। আবার কোষের বৃদ্ধি ও চলনে পানির ভূমিকা অপরিসীম। এজন্য পানিকে ফ্লুইড অফ লাইফ বলা হয়। 

৭. মিউচুয়ালিজম বলতে কি বুঝায়?

উত্তর: যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি জীবের একটি অন্যটিকে সহায়তা করে তাকে ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলে। এক্ষেত্রে সহযােগীদ্বয়ের একটি বা উভয়ই উপকৃত হতে পারে। যে ক্ষেত্রে সহযােগীদ্বয়ের উভয় উদ্ধৃত হয় তাকে মিউচুয়ালিজম বলে। যেমন- মৌমাছি কর্তৃক ফুলের মধু আহরণ।

৮. কার্ডিয়াক বেশি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কার্ডিয়াক পেশি বা হৃদপেশি এক বিশেষ ধরনের অনৈচ্ছিক পেশ। অর্থাৎ এ পেশির টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। এ পেশির গঠন ঐচ্ছিক পেশির মতাে কিন্তু কাজ অনৈচ্ছিক পেশির মতাে। মানব ভূণের একটি বিশেষ পর্যায় থেকে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কার্ডিয়াক পেশি সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া সচল রাখে।

৯. মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বলা হয় কেন?

উত্তর: জীবের শ্বসনকার্যে সাহায্য করা মাইটোকন্ড্রিয়ার প্রধান কাজ। এ জন্য শক্তি প্রয়ােজন। মাইটোকন্ড্রিয়াতে শক্তি উৎপাদনের সকল প্রকার এনজাইম, কো-এনজাইম উপস্থিত থাকে। তাই শক্তি উৎপাদনের বিক্রিয়াগুলাে মাইটোকন্ড্রিয়াতেই সম্পন্ন হয়। এ জন্য মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বলা হয়।

১০. প্লাজমালেমা বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: কোষের প্রােটোপ্লাজমের বাইরে যে দ্বিস্তর বিশিষ্ট স্থিতিস্থাপক পর্দা থাকে তাকে কোষঝিল্লি বা প্লাজমালেমা বলে। এটি প্রধানত লিপিড ও প্রােটিন দ্বারা গঠিত। প্লাজমালেমার ভাজকে মাইক্রোভিলাই বলে। প্লাজমালেমা একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা হওয়ায় অভিস্রবণের মাধ্যমে পানি ও খনিজ লবণ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে ও পার্শ্ববর্তী কোষগুলােকে পরস্পর থেকে আলাদা রাখে।

১১. লসিকাতন্ত্র বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: মানবদেহের বিভিন্ন টিস্যর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানে যে জলীয় পদার্থ জমা হয় সেগুলাে কতকগুলাে ছােট নালির মাধ্যমে সংগৃহীত হয়ে একটি স্বতন্ত্র নালিকাত গঠন করে, যাকে লসিকাত বলে। লসিকা ঈষৎ ক্ষারীয় স্বচ্ছ হলুদ বর্ণের তরল পদার্থ। এদের লসিকা কোষ বলে।

১২. ইমবাইবিশন বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: ইমবাইবিশন পানি শােষণের একটি অন্যতম প্রক্রিয়া। কলয়ে জাতীয় শুকনাে বা অর্ধ শুকনাে পদার্থের তরল পদার্থ শােষণের বিশেষ প্রক্রিয়াকে ইমবাইবিশন বলা হয়। উদ্ভিদ দেহের কোষপ্রাচীর ও প্রােটোপ্লাজম কলয়েডধর্মী হওয়ায় ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় পানি শােষণ করে স্কীত হয়ে উঠে।

১৩. অ্যামিবা কোন রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত জীব? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: অ্যামিবা প্রােটিস্টা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত জীব। কারণ—
১. এরা এককোষী।
২. মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে অযৌন প্রজনন ঘটে।
৩. কোনাে ভূণ গঠিত হয় না।

১৪. বহুকোষী জীবের দেহকোষকে প্রকৃত কোষ বলা হয় কেন?

উত্তর: বহুকোষী জীবের দেহকোষকে প্রকৃত কোষ বলার কারণ— বহুকোষী জীবের দেহগঠনে যেসব কোষ অংশগ্রহণ করে, সেসব কোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ঝিল্লি দ্বারা নিউক্লিও বস্তু পরিবেষ্টিত ও সুসংগঠিত। ক্রোমােসােমে DNউত্তর, প্রােটিন, হিস্টোন ইত্যাদি উপস্থিত থাকে। 

১৫. এপেন্ডিসাইটিস বলতে কী বোঝ?

উত্তর: মানবদেহে পেটের ডানদিকের নিচে বৃহদন্ত্রের সিকামের সাথে অ্যাপেনডিক্স যুক্ত থাকে। এটি আঙ্গুলের আকারের একটি থলে। এই অ্যাপেনডিক্সের সংক্রমণের কারণে যে রােগটি হয় সেটিই হলাে অ্যাপেনডিসাইটিস। এ রােগে প্রথমে নাভির চারদিকে ব্যথা অনুভব হয় এবং ব্যথা শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তলপেটের ডানদিকে সরে যায়।

১৬. হৃদপেশী অন্যান্য পেশীর থেকে আলাদা কেন?

উত্তর: হৃৎপেশি মেরুদণ্ডী প্রাণীদের হৃৎপিণ্ডের এক বিশেষ ধরনের অনৈচ্ছিক পেশি। ঐচ্ছিক ও অনৈচ্ছিক পেশি শুধুমাত্র যখন প্রয়ােজন তখন সালিত হয়। কিন্তু হৃৎপেশি মানব ভূণ সৃষ্টির একটা বিশেষ পর্যায় থেকে মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত একটা নির্দিষ্ট গতিতে সংকুচিত ও প্রসারিত হতে থাকে। একারণেই হৃৎপেশি অন্যান্য পেশি থেকে আলাদা। 

১৭. তন্ত্র বলতে কী বোঝো?

উত্তর: দেহের বাইরের দিকে যে আচ্ছাদনকারী আবরণ থাকে, তাকে ত্বক বা চামড়া বলে। কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রন্থিযুক্ত এই ত্বক দেহকে আচ্ছাদন করে, বাইরের আঘাত এবং জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এছাড়া দেহের জলীয় অংশকে দেহের ভিতর সংরক্ষণ করে।

১৮. নিউক্লিয়াসকে কোষের মস্তিষ্ক বলা হয় কেন?

উত্তর: নিউক্লিয়াস কোষের যাবতীয় কার্যাবলি যেমন— কোষের গঠনগত ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের নিয়ন্ত্রণ, RNউত্তর ও রাইবােজোম গঠন, প্রােটিন সংশ্লেষণ, বংশগতির স্থানান্তর, বংশগতির বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক ক্রোমােজোম ধারণ, কোষ বিভাজনে অংশগ্রহণ সবই নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য নিউক্লিয়াসকে কোষের মস্তিষ্ক বলা হয়।

১৯. অ্যানাইসোগ্যামাস জনন বলতে কী বোঝো?

উত্তর: আকার, আকৃতি অথবা শারীরবৃত্তীয় পার্থক্যবিশিষ্ট ভিন্নধর্মী দুটি গ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে যে যৌনজনন সম্পন্ন হয় তাই অ্যানাইসােগ্যামাস। প্লান্টি রাজ্যে এ ধরনের জনন দেখা যায়। এরা সপুষ্পক।

২০. আমাদের দেহে কঙ্কাল না থাকলে কি হতো? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: একটি ঘর তৈরি করতে হলে প্রথমে এর কাঠামাে বানাতে হয়। তেমনি আমাদের মূল কাঠামাে হলাে কঙ্কাল। এটি মানবদেহকে নির্দিষ্ট আকার দেয় এবং অঙ্গ সঞ্চালন ও চলনে সহায়তা করে। এছাড়া মস্তিষ্ক, মেরুরজ্জ, ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড এরকম দেহের নরম ও নাজুক অঙ্গগুলােকে রক্ষা করে। তাই মানবদেহে কঙ্কাল না থাকলে কোনাে কাজই মানুষ সঠিকভাবে করতে পারবে না। অর্থাৎ দেহ একটি মাংশপিণ্ডে পরিণত হবে।

২১. স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: যে তন্ত্রের কার্যকারিতার উপর মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জ্বর কোনাে প্রভাব না থাকায় এরা স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে আপন কর্তব্য সম্পাদন করে তাদেরকে স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র বলে। যেমন- হৃৎপিণ্ড, অন্ত্র, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয় ইত্যাদি তন্ত্রগুলাে স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হয়।

২২. আমাদের দেহের অস্থি গুলো নাড়াচাড়া করলেও স্থানচ্যুত হয়না কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: মানবদেহের দুই বা ততােধিক অস্থির সংযােগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে। প্রতিটি অস্থিসন্ধির অস্থিগুলাে একরকম স্থিতিস্থাপক রঞ্জুর মতাে বন্ধনী দিয়ে দৃঢ়ভাবে আটকানাে থাকে। যারফলে অস্থিগুলাে সন্ধিস্থল থেকে বিচ্যুৎ হতে পারে না। এ কারণে আমাদের দেহের অস্থিগুলাে নড়াচড়া করলেও স্থানচ্যুত হয় না।

২৩. প্লাস্টিডকে বর্ণ গঠন করে অঙ্গ বলা হয় কেন?

উত্তর: প্লাস্টিড উদ্ভিদ কোষের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। তিন ধরনের প্লাস্টিডের মধ্যে সবুজ রঙের প্লাস্টিডকে ক্লোরােপ্লাস্ট, বলে। এ প্লাস্টিডে ক্লোরােফিল থাকে তাই এদের সবুজ দেখায়। অসবুজ ও রঙিন প্লাস্টিডকে ক্রোমােপ্লাস্ট বলে। এসব প্লাস্টিডের বর্ণ কণিকার মিশ্রণজনিত কারণে ফুল, পাতা ও উদ্ভিদের অন্যান্য অংশ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। এ বর্ণ কণিকার কারণেই পাতা, ফুল ও ফল হলুদ, কমলা বা লাল হয়ে থাকে। তাই প্লাস্টিডকে বর্ণ গঠনকারী অঙ্গ বলা হয়।

২৪. শ্রেণিবিন্যাস এর উদ্দেশ্য গুলি লেখ?

উত্তর: শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য নিম্নরূপ :
১. প্রতিটি জীবের দল ও উপদল সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণ করা।
২. জীবজগতের ভিন্নতার দিকে আলােকপাত করে আহরিত জ্ঞানকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা।
৩. পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানকে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করা।
৪. প্রতিটি জীবকে শনাক্ত করে তার নামকরণের ব্যবস্থা করা।

২৫. শ্রেণিবিন্যাসের ধাপ গুলো কি কি?

উত্তর: শ্রেণিবিন্যাস হলাে পারস্পরিক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে জীবকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করা। একটি জীবকে প্রজাতি পর্যায়ে বিন্যাসে মূলত আন্তর্জাতিক কোড চিহ্নিত ৭টি ধাপ রয়েছে। ধাপগুলাে হলাে- (১) রাজ্য, (২) পর্ব বা বিভাগ, (৩) শ্রেণি, (৪) বর্গ, (৫) গােত্র, (৬) গণ এবং (৭) প্রজাতি।

২৬. সিভকোষ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: সিভকোষ ফ্লোয়েমের বিশেষ ধরনের কোষ যা দীর্ঘ, পাতলা কোষপ্রাচীরযুক্ত জীবিত এবং লম্বালম্বিভাবে একটির উপর একটি সজ্জিত হয়ে সিভনল গঠন করে। এদের প্রাচীর লিগনিনযুক্ত। পরিণত সিভকোষে কোনাে নিউক্লিয়াস থাকে না।

২৭. পরিবহন টিস্যু কে জটিল টিস্যু বলা হয় কেন?

উত্তর: বিভিন্ন প্রকার কোষের সমন্বয়ে যে স্থায়ী টিস্যু গঠিত হয় তাকে জটিল টিস্যু বলে। জটিল টিস্যু দুই ধরনের জাইলেম ও ফ্লোয়েম। এরা উদ্ভিদে খাদ্য, পানি ও খনিজ লবণ পরিবহনে সাহায্য করে। তাই পরিবহন টিস্যুকে জটিল টিস্যু বলা হয়।

২৮. লাইসোজোমের কাজ কি?

উত্তর: লাইসােজোমের কাজ হলাে—
১. জীবকোষকে জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে।
২. এর উৎসেচক আগত জীবাণুগুলােকে হজম করে ফেলে।
৩. লাইসােজোম পরিপাক কাজে সহায়তা করে।

২৯. কোষগহ্বর কি? এর কাজ কি?

উত্তর: সাইটোপ্লাজমে কোষের মধ্যে যে আপাত ফাঁকা স্থান দেখা যায়, সেগুলােই হচ্ছে কোষগহ্বর। বৃহৎ কোষগহ্বর উদ্ভিদ কোষের বৈশিষ্ট্য। কোষগহ্বরের প্রধান কাজ কোষরস ধারণ করা। বিভিন্ন ধরনের অজৈব লবণ, আমিষ, শর্করা, চর্বিজাতীয় পদার্থ, জৈব এসিড, রঞ্জক পদার্থ, পানি ইত্যাদি এই কোষরসে থাকে।

৩০. বংশগতিবিদ্যাকে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয় কেন?

উত্তর: জীববিজ্ঞানের যে শাখায় তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলােচনা করা হয় তাকে ভৌত জীববিজ্ঞান বলে। বংশগতিবিদ্যায় জীবের বংশগত গুণাবলি কীভাবে এক বংশ থেকে অন্য বংশে সঞ্চারিত হয় তার রীতি- নীতি, সংকর প্রজনন, পরিব্যক্তি, প্রকরণ সৃষ্টির কারণ ইত্যাদি প্রক্রিয়াগুলাে আলােচিত হয়। এ প্রক্রিয়াগুলাে প্রতিটি জীবের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলাে সবই বংশগতিবিদ্যার তত্ত্বীয় বিষয়াবলি। এ কারণে বংশগতিবিদ্যাকে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয়।

৩১. থ্যালাসেমিয়া কেন হয়?

উত্তর: থ্যালাসেমিয়া হয় লােহিত রক্ত কোষের দুটি প্রােটিনের জিন নষ্টের কারণে। থ্যালাসেমিয়া রক্তের লােহিত রক্ত কণিকার এক অস্বাভাবিক অবস্থাজনিত রােগের নাম। এ রােগী রক্তশূন্যতায় ভােগে। লােহিত রক্তকণিকা দুই ধরনের প্রােটিন দ্বারা তৈরি আলফা গ্লোবিউলিন এবং বিটা গ্লোবিউলিন। লােহিত রক্ত কণিকার এ দুটি প্রােটিন জিন নষ্ট হলে ত্রুটিপূর্ণ লােহিত রক্ত কোষ উৎপাদিত হয়। ফলে মেজর ও মাইনর নামে দু’ধরনের থ্যালাসেমিয়া দেখা যায়।

৩২. পাকস্থলীর পেশিকে মসৃণ পেশী বলা হয় কেন?

উত্তর: পাকস্থলীর পেশি টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। পাকস্থলীর পেশি কোষগুলাে মাকু আকৃতির এবং এদের আড়াআড়ি দাগ থাকে না। তাই পাকস্থলীর পেশিকে মসৃণ পেশি বলা হয়।

৩৩. মানবদেহ কঙ্কাল এর ভূমিকা কি?

উত্তর: মানবদেহে কঙ্কাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কঙ্কাল মানবদেহের কাঠামাে গঠন করে দৈহিক আকৃতি প্রদান করে। কঙ্কাল থাকলে মানবদেহের কাঠামাে গঠন হতাে না ফলে অন্যান্য অঙ্গসমূহ সঠিকভাবে অবস্থান করতে পারত না এবং নিরাপদে থাকত না। তাই বলা যায় মানব দেহে কঙ্কাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৩৪. প্রতিবর্তী ক্রিয়া বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: প্রতিবতী ক্রিয়া বলতে উদ্দীপনার আকস্মিকতা ও স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়াকে বুঝায়। হঠাৎ করে আঙ্গুলে সুঁচ ফুটলে অথবা হাতে গরম, কিছু পড়লে আমরা অতিদ্রুত হাতটি উদ্দীপনার শ্বান থেকে সরিয়ে নেই। এটি প্রতিবর্তী ক্রিয়ার ফল। প্রতিবর্তী ক্রিয়া মূলত সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

৩৫. প্লাস্টিক কে কেন উদ্ভিদের রঞ্জকের থলি বলা হয়?

উত্তর: প্লাস্টিডকে উদ্ভিদের রঞ্জক থলি বলা হয়। কারণ প্লাস্টিড উদ্ভিদ দেহকে বর্ণময় করে রঞ্জক পদার্থগুলােকে ধারণ করার মাধ্যমে আকর্ষণীয় করে ও পরাগায়ণে সাহায্য করে।

৩৬. স্পটিফাইড আবরণী টিস্যু কে ট্রানজিশনাল আবরণী টিস্যু বলা হয় কেন?

উত্তর: স্ট্র্যাটিফাইড আবরণী টিস্যুর কোষগুলাে ভিত্তি পর্দার উপর একাধিক স্তরে সজ্জিত থাকে। এমন স্ট্র্যাটিফাইড আবরণী টিস্যুও আছে, যার স্তরের সংখ্যা মিনিটের মধ্যে পাল্টে যেতে পারে। কখনাে দেখা যায় তিন-চারটি আবার পরক্ষণেই দেখা যায় সাত-আটটি। এ কারণে স্ট্র্যাটিফাইড আবরণী টিস্যুকে ট্রানজিশনাল আবরণী টিস্যু বলা হয়।

৩৭. পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যালোক না পেলে দেহে কি সমস্যা দেখা দিতে পারে? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: সূর্যালােকের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে শরীরে কোলেস্টেরল থেকে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি হয়। যা রক্তের মাধ্যমে কিডনিতে গিয়ে ভিটামিন ‘ডি’র কার্যকর রূপে পরিণত হয় এবং আবার রক্তে ফিরে আসে। নিয়মিতভাবে সারা শরীর সারাদিন কালাে বা গাঢ় রঙের কাপড়ে ঢেকে রাখলে কিংবা দীর্ঘদিন ধরে ঘরের বাইরে বের না হলে ত্বক পর্যাপ্ত সূর্যালােক পায় না। আর পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যালােক না পেলে দেহে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

৩৮. মেরুদন্ডী প্রাণীর ত্বককে ট্রানজিশনাল আবরণী বলা হয় কেন?

উত্তর: মেরুদণ্ডী প্রাণীদের ত্বকে স্ট্র্যাটিফাইড আবরণী টিস্যু আছে, যার স্তরের সংখ্যা মিনিটের মধ্যে পাল্টে যেতে পারে। কখনাে দেখা যায় তিন-চারটি স্তর আবার পরক্ষণেই দেখা যায় সাত-আটটি। তাই মেরুদণ্ডী প্রাণীদের ত্বককে ট্রানজিশনাল আবরণী বলা হয়।

৩৯. জাইলেম প্যারেনকাইমা বলতে কী বোঝো?

উত্তর: জাইলেমে অবস্থিত প্যারেনকাইমা কোষকে জাইলেম প্যারেনকাইমা বা উড প্যারেনকাইমা বলে। এদের প্রাচীর পুরু বা পাতলা হতে পারে। প্রাইমারি জাইলেমে অবস্থিত প্যারেনকাইমার কোষ পাতলা প্রাচীরযুক্ত। তবে গৌণ জাইলেমে এরা পুরু প্রাচীরযুক্ত হতে থাকে। খাদ্য সঞ্চয় এবং পানি পরিবহন করা এদের প্রধান কাজ।

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুগন, এই ছিলো নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান ২য় অধ্যায় এর সকল অনুধাবন মূলক প্রশ্ন। আশাকরি ১য় অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসলে এগুলোর মধ্যেই তোমরা কমন পাবা। তোমাদের জন্য শুভ কামণা রইলো, ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *