স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো সৃজনশীল

SSC: স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো সৃজনশীল: ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ শীর্ষক কবিতাটি নির্মলেন্দু গুণের ‘চাষাভূষার কাব্য’ নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের মনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের প্রেরণা দান এবং তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করা।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে লাখ লাখ মানুষের বিশাল জনসভায় বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। এটা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে বাঙালির মুক্তির উদাত্ত আহ্বান। আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অনুপ্রেরণা মূলত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ভাষণের মাধ্যমেই সূচিত হয়।

সেদিন রেসকোর্স ময়দানে তাঁর ভাষণ শোনার জন্য বাংলার সর্বস্তরের মানুষ একত্র হয়েছিল। সবার উদ্দেশ্য ছিল তাদের প্রিয় নেতার কাছে স্বাধীনতার স্বপ্নের কথা শোনার আকুলতা। রমনার রেসকোর্সে যেখানে সেদিনের মঞ তৈরি হয়েছিল সেখানে এখন গড়ে উঠেছে শিশুপার্ক।

কবি মনে করেন, অনাগত কালের শিশুদের কাছে এ কথাটি জানিয়ে দেওয়া দরকার যে, এখান থেকেই, এই পার্কের মঞ্চ থেকেই বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় শব্দ ‘স্বাধীনতা’ কথাটি উচ্চারিত হয়েছিল, আর তা উচ্চারিত হয়েছিল তাদের প্রিয় মানুষটির মুখ থেকে। আপামর জনতার সামনে তিনি সেদিন এসে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর বজ্রকণ্ঠ নিয়ে।

তিনি বাঙালির বড় প্রিয় মানুষ, বাঙালির শেকড় থেকে জেগে ওঠা এক বিদ্রোহী নেতা। তিনি সাধারণ কোনো রাজনীতিবিদ নন, তিনি ছিলেন রাজনীতির কবি। এদেশের মানুষের ভালোবাসায় গড়া এক অসাধারণ মানুষ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে মঞ্চে এসে সেদিন বিকেলের পড়ন্ত রোদে ডাক দিয়েছিলেন “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” উচ্চারণের মাধ্যমে। সেদিন থেকেই বাঙালির কাছে ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি অত্যন্ত প্রিয় শব্দ।


এসএসসি বাংলা ১ম পত্রের সকল গদ্য ও কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: সুভা
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: বইপড়া
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: আম আঁটির ভেঁপু
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: মানুষ মুহাম্মদ (সাঃ)
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: নিমগাছ
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: প্রবাস বন্ধু
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: মমতাদি
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: সাহিত্যের রুপ ও রীতি
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: একাত্তরের দিনগুলি
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: বঙ্গবানী
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: কপোতাক্ষ নদ
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: জীবন-সঙ্গীত
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: মানুষ
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: পল্লিজননী
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: রানার
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: আমার পরিচয়
🔆🔆 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো


স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো সৃজনশীল

সৃজনশীল ০১: ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’— শীর্ষক ডকুমেন্টারি ও প্রতিবেদন তৈরির কাজে নিয়োজিত কুসুমপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত লোমহর্ষক ঘটনাবলি, তাঁদের আবেগঘন মুহূর্তের বিবরণ শুনে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দেশের স্বাধীনতার চেতনায় নতুনভাবে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত হয়। সাক্ষাৎকার পর্বে একজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই ছিল আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার মূল অনুপ্রেরণা ।

ক. ‘বজ্রকণ্ঠ বাণী’ অর্থ কী?
খ. ‘জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সাক্ষাৎকার প্রদানকারী মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস বর্ণনার মধ্যে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কোন বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই ছিল আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার মূল অনুপ্রেরণা।”- মুক্তিযোদ্ধার মন্তব্যটি ৩ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক। ‘বজ্রকণ্ঠ বাণী’ অর্থ— সহজে উদ্দীপ্ত দ্যুতিময় বঙ্গবন্ধুর বাণী।

খ। ‘জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে’ বলতে রমনা রেসকোর্স ময়দানে সমবেত লক্ষ লক্ষ জনগণের সমাবেশ ও জনসমাবেশের এক দিকে অবস্থিত মঞ্চকে বোঝানো হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শোনার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ সমাবেত হয় রমনার রেসকোর্স ময়দানে। রমনা রেসকোর্সে সমবেত লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশকে কবি কল্পনা করেছেন জনসমুদ্রের বাগানরূপে। সেই জনসমুদ্রের একদিকে ছিল মঞ্চ, কবির দৃষ্টিতে সেটি যেন সেই জনসমুদ্রের সৈকত।

গ। উদ্দীপকের সাক্ষাৎকার প্রদানকারী মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস বর্ণনার মধ্যে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার যে বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে তা হলো স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের অনুপ্রেরণার ইতিহাস।

৭ই মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতিকে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। সেই আহ্বানে জনতার মধ্যে আসে নবজোয়ার। স্বাধীনতার বাণী পৌঁছে যায় মানুষের অন্তরে অন্তরে। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি ১৯৭১ সালের বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছেন। যা আমাদের স্বাধীনতার গুরুত্ব অনুধাবন ও দেশপ্রেমের প্রেরণা জাগ্রত করে। কারণ ১৯৭১ সালে জাতির জনকের সেই ভাষণের মধ্য দিয়ে সূচিত হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান। পরাধীনতার শেকল ভেঙে বাঙালি স্বাধীনতার জন্য এই ভাষণ শুনে যুদ্ধ করে। কবি অনাগত শিশুদের কাছে এই কথাটি জানিয়ে দিতে চেয়েছেন।

উদ্দীপকেও সাক্ষাৎকার প্রদানকারী মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস বর্ণনার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা জাতির জনকের সেই ৭ই মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের কথা জানতে পারে। উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতা উভয় জায়গায় প্রকাশ পেয়েছে তৎকালীন অবস্থা, মুক্তিযুদ্ধের আহ্বান ও ৭ই মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্য। উদ্দীপকে মুক্তযোদ্ধার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম এ ইতিহাস জানতে পেরেছে। আর আলোচ্য কবিতায় কবি জানিয়েছেন অনাগত শিশুদের। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের ইতিহাস বর্ণনার মধ্য দিয়ে আলোচ্য কবিতার স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের অনুপ্রেরেণার ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

ঘ। “বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই ছিল আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার মূল অনুপ্রেরণা”- মন্তব্যটি যথার্থ। একজন সত্যিকারের দেশনেতা দেশের মানুষের মুক্তির পথনির্দেশ করেন। তিনি জনগণকে সংঘবদ্ধ করেন। তাদের চেতনাকে উজ্জীবিত করেন। দুর্যোগ থেকে উত্তরণের জন্য অনুপ্রাণিত করেন।

মূল উদ্দীপকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ শীর্ষক ডকুমেন্টারি ও প্রতিবেদনের কথা প্রকাশ পেয়েছে। এই প্রতিবেদনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সাক্ষাৎকার প্রকাশ পায়। সাক্ষাৎকারে একজন মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই ছিল আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার মূল অনুপ্রেরণা।

“স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায়ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এ ভাষণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। তাঁর এ ভাষণের মধ্যেই সেদিন সূচিত হয়েছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান।

উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতা উভয় জায়গায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্বের কথা প্রকাশ পেয়েছে। যে ভাষণ বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ায় অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল ০২: বিপথগামী কিছু সেনা কর্মকর্তা সম্প্রতি তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেন। মধ্যরাতে তারা ভারী অস্ত্রশস্ত্রসহ ট্যাঙ্ক, কামান, জঙ্গি বিমান ইত্যাদি নিয়ে আক্রমণ চালিয়ে রাজধানী শহরসহ রেডিও ও টেলিভিশন স্টেশন দখল করে নেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোগান সে সময় অন্য একটি শহরে অবস্থান করছিলেন। অভ্যুত্থানের খবর শুনে তাৎক্ষণিক তিনি তাঁর স্মার্ট ফোনে একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন এবং এতে তিনি দেশপ্রেমিক জনগণকে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান। সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ তার আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাতের অন্ধকার ছাপিয়ে রাস্তায় নেমে আসে এবং অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দেয়।

ক. ছোটদের জন্য লেখা নির্মলেন্দু গুণের গ্রন্থটির নাম কী?
খ. ‘কবির বিরুদ্ধে কবি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সাথে যে দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “জাতির ক্রান্তিলগ্নে এরদোগানের চেয়ে বঙ্গবন্ধুর অবদান অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত”— উদ্দীপক ও ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক। ছোটদের জন্য লেখা নির্মলেন্দু গুণের গ্রন্থটির নাম ‘কালো মেঘের ভেলা’।

খ। ‘কবির বিরুদ্ধে কবি’ বলতে এখানে শুভ শক্তির বিরুদ্ধে অশুভ শক্তির উত্থানকে বোঝানো হয়েছে। “স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে সালের ৭ই মার্চের ভাষণের মূল বিষয়টি তুলে ধরেছেন। এই ভাষণেই তিনি পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। তাঁর এই ভাষণের মধ্য দিয়ে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সূচিত হয় আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার সংগ্রামী চেতনা। বাঙালির শেকড় থেকে জেগে ওঠা এই সংগ্রামী নেতাকে কবি ‘রাজনীতির কবি’ বলেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর এ দেশে অশুভ শক্তির উত্থান ঘটে। যে উত্থানে সব ইতিবাচক ভাবনা, সৌন্দর্যকে সমাহিত করার প্রয়াস চলে। তাই শুভ চেতনার বিরুদ্ধে আজ অশুভ চেতনার উত্থানকে কবি ‘কবির বিরুদ্ধে কবি’ বলে প্রকাশ করার প্রয়াস পেয়েছেন।

গ। উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় প্রতিফলিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুর মোকাবিলা করার আহ্বানের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

জগতের মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে যুগে যুগে বহু মহাপুরুষ, রাষ্ট্রনায়কের আবির্ভাব ঘটেছে। তাঁরা জনগণকে সংঘবদ্ধ করে সংগ্রামের পথে এগিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের সময়োচিত সিদ্ধান্ত, সংগ্রামী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে স্বাধীনতাকামী মানুষ মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছে। উদ্দীপকে বিপথগামী কিছু সেনাকর্মকর্তার চেষ্টায় সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা এবং তুরস্কের রাষ্ট্রনায়কের সময়োচিত পদক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে দেশটির প্রেসিডেন্টের আহ্বানে সাধারণ জনগণ বিপথগামী সেনাকর্মকর্তাদের অভিযানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। তাঁরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাতের অন্ধকারে প্রতিরোধ সংগ্রামে নামে এবং সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দেয়।

এ বিষয়টি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ সগ্রামের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে, মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুর মোকাবিলা করার জন্য বাঙালির প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করে।

ঘ। “জাতির ক্রান্তিলগ্নে এরদোগানের চেয়ে বঙ্গবন্ধুর অবদান অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত”- মন্তব্যটি যথার্থ। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে যোগ্য নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। প্রত্যেক জাতির ভাগ্যেই দুর্যোগ-বিপর্যয় থাকে। তা কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজন যোগ্য নেতৃত্বের। নেতৃত্বশূন্য জাতি নানাভাবে শোষণ-বঞ্চনার শিকার হতে পারে। সেই সময় জাতিকে সঠিক পথনির্দেশনা দিতে সাহসী ও তেজোদীপ্তরা এগিয়ে আসেন।

উদ্দীপকে তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান রুখতে সে দেশের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোগানের সময়োচিত পদক্ষেপ ও নেতৃত্বের দিকটি প্রকাশিত হয়েছে। উদ্দীপকে প্রেসিডেন্টের আহ্বানে সে দেশের জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সামনে বিপথগামী সেনারা টিকতে পারেনি। ফলে সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যায়। এ বিষয়টি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় প্রতিফলিত মুক্তির সংগ্রামে এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তুলনা করা যায়। তবে তা সমতুল্য নয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছিল বাংলাদেশের মানুষকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্তিদান। অন্যদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এ নেতৃত্ব ছিল শুধু একটি সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দেওয়ার।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধু কীভাবে রাজনীতির কবি হয়ে উঠেছিলেন তার পরিচয় আছে। তিনি কীভাবে সময়োচিত নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশকে শত্রুমুক্ত ও স্বাধীন করেছেন সে কথাও কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে, যা উদ্দীপকে প্রকাশ পায়নি। বাঙালির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর যে অবদান তা এরদোগানের চেয়ে বহুগুণ ব্যাপক ও বিস্তৃত। তিনি বাঙালিকে ভিতর থেকে জাগিয়ে তুলে একটি সুগঠিত হানাদার বাহিনীকে রুখে দিতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ নেতৃত্ব দিয়েছেন দীর্ঘ সংগ্রাম-আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বুকে বুক মিলিয়ে। আর উদ্দীপকের এরদোগানের আহ্বান ছিল ভিডিওবার্তার মাধ্যমে একটি সাময়িক অভ্যুত্থান রুখে দিতে। এসব বিষয় বিবেচনায় তাই বলা যায়, প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল ০৩: কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো ছিলেন একজন জীবন্ত কিংবদন্তিতুল্য স্বাধীনতা সংগ্রামী। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে তিনি সাম্য ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক। তাঁর আত্মত্যাগ পৃথিবীজুড়ে সকল মানুষের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় তাঁর আত্মত্যাগ এই যুগের তরুণদেরও সমানভাবে উজ্জীবিত করে যাচ্ছে।

ক. কবি কাদের আগামী দিনের কবি বলেছেন?
খ. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বর্ণিত ‘শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প’ কী তা ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ফিদেল ক্যাস্ট্রো ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার যে চরিত্রের সাথে সম্পর্কিত তার বর্ণনা দাও।
ঘ. “উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দিকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় উল্লিখিত ‘কবির বিরুদ্ধে কবি মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ’ এর মনোভাব প্রকাশ করেনি।”- মূল্যায়ন কর।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক। কবি অনাগত শিশুদের আগামী দিনের কবি বলেছেন।

খ। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বর্ণিত ‘শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প’ বলতে কবি ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণদানের বিকেলকে বুঝিয়েছেন । ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বিকেলে লাখ লাখ মানুষ অপেক্ষা করছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শোনার জন্য । সেই বিকেলেই তিনি সেই জনতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” সেই বিকেলেই বাঙালি জাতি মুক্তির দিকনির্দেশনা পেয়েছিল এবং স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিল। তাই কবি সেই বিকেলের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্যকে ‘শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

গ। উদ্দীপকের ফিদেল ক্যাস্ট্রো ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সম্পর্কিত। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে যোগ্য নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। প্রত্যেক জাতির ভাগ্যেই দুর্যোগ-বিপর্যয় থাকে। তা কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজন যোগ্য নেতৃত্বের। নেতৃত্বশূন্য জাতি নানা হতাশায় নিমজ্জিত হতে পারে। সেই সময় জাতিকে সঠিক পথনির্দেশনা দিতে সাহসী ও তেজোদীপ্তরা এগিয়ে আসেন।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণের ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। এই ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিকে স্বাধীনতার জন্য ডাক দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বেই সর্বস্তরের বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে এবং বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। তাঁর দীপ্ত চেতনাতেই বাঙালি স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।

উদ্দীপকের ফিদেল ক্যাস্ট্রোও তেমনই কিউবার জনগণের অবিসংবাদিত নেতা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী প্রবাদপুরুষ। এ দিক থেকে ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সম্পর্কিত বলা যায়।

ঘ। “উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দিকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় উল্লিখিত ‘কবির বিরুদ্ধে কবি… মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ’-এর মনোভাব প্রকাশ করেনি।”- মন্তব্যটি যথার্থ।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যুগে যুগে বহু যোগ্য নেতার আবির্ভাব ঘটেছে। সাহসী পদক্ষেপে, সুদৃঢ় চেতনায় তাঁরা স্বজাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। সাধারণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁরা অসীম ত্যাগ স্বীকার করেছেন। উদ্দীপকে শুধু কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মত্যাগের দিকটি ফুটে উঠেছে।

অন্যদিকে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক মহাকাব্যিক ভাষণের ঘটনা, সেদিনকার ঘটনাস্থল রেসকোর্স ময়দানের গণজোয়ার, ভাষণমঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ডাক, মানুষের অবেগ-উল্লাস ইত্যাদি বিষয় ফুটে উঠেছে। অন্যদিকে এই কবিতায় কবি যে বিরুদ্ধ চেতনার কথা বলেছেন তা উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়নি। কারণ কবি দেখেন যে, সেদিনের শত্রুরা আজও তৎপর। তারা রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাণীর বিরুদ্ধে কথা বলে, সেদিনের সেই মঞ্চের স্মৃতিচিহ্ন মুছে দিয়েছে। এসব বিষয় উদ্দীপকে অনুপস্থিত।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় অনেক বিষয়ের সমাবেশ ঘটেছে। যেমন- বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ, ভাষণের মঞ্জু, ঘটনাস্থল, গণজোয়ার, বজ্রকণ্ঠ ভাষণে উত্তাল জনসমুদ্র, স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক, মানুষের আবেগের বহিঃপ্রকাশ, শত বছরের বাঙালির সংগ্রাম, সর্বস্তরের জনসাধারণের অংশগ্রহণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যথাযোগ্য নেতৃত্ব এবং এসবের বিরুদ্ধাচরণকারী বৈরী শক্তির প্রভাব। এসব বিষয় উদ্দীপকে নেই। উদ্দীপকে শুধু ফিদেল ক্যাস্ট্রোর আত্মত্যাগের দিকটি ফুটে উঠেছে। তাই মন্তব্যটি যথার্থ বলা যায়।


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ। এছাড়াও আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে ফেসবুকে কানক্ট থাকতে পারেন।

ssc suggestion 2022