অনুচ্ছেদ রচনা: গ্রন্থাগার

অনুচ্ছেদ রচনা: গ্রন্থাগার

গ্রন্থ বা বইয়ের আগার বা গৃহকে গ্রন্থাগার বলে। গ্রন্থাগার এমন এক প্রতিষ্ঠান যেখানে পুস্তক সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও আদান-প্রদান করা হয়। মানুষকে জ্ঞানসন্ধানে অনুসন্ধিৎসু, তার জ্ঞানবৃদ্ধি, উন্নত চিন্তা ও মেধা বিকাশের উদ্দেশ্যে। গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। গ্রন্থ সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং পাঠকদের সেবা প্রদানই গ্রন্থাগারের কাজ। পাঠক এখানে বসে। বই পড়তে পারে। আবার সদস্য হয়ে পুস্তক ধার নিতে পারে। গ্রন্থাগারের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে একজন গ্রন্থাগারিক থাকেন। গ্রন্থাগারের বিশালতা সাপেক্ষে গ্রন্থাগারিক ও কর্মী সংখ্যা কম বেশি হয়ে থাকে। গ্রন্থাগারে র্যাক বা আলমারিতে বই সাজানাে থাকে। বই সাজানাের বিশেষ নিয়ম আছে, একে ক্যাটালগিং বা গ্রন্থবিন্যাস বলে। ক্যাটালগ বাসে ছােট ছােট কার্ডে বইয়ের নাম, লেখকের নাম, বইয়ের নম্বর, আলমারির নম্বর ইত্যাদি লেখা থাকে। ক্যাটালগ দেখে গ্রন্থাগারে কী কী বই আছে, কোন বইটি কোন আলমারিতে আছে তা বােঝা যায়। আজকাল এসব বিষয়গুলাে অতি সহজে কমিপউটারে সম্পাদন করা হয়ে থাকে। গ্রন্থের সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর গ্রন্থাগারকে দু ভাগে ভাগ করা যায় : সংহত গ্রন্থাগার এবং ক্রমবর্ধমান গ্রন্থাগার। যে গ্রন্থাগারে গ্রন্থসংগ্রহের সংখ্যা নির্দিষ্ট ও সীমিত থাকে তাকে সংহত গ্রন্থাগার বলে। আর যে গ্রন্থাগারের গ্রন্থসংখ্যা ও বৃদ্ধি অসীম তাকে ক্রমবর্ধমান গ্রন্থাগার বলে। আবার গ্রন্থ ব্যবহারকারীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের দিক দিয়ে গ্রন্থাগার দু রকম : সংরক্ষিত ও উন্মুক্ত। যে গ্রন্থাগারে বিশেষভাবে সংজ্ঞায়িত ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারে তাকে সংরক্ষিত গ্রন্থাগার আর যে গ্রন্থাগার সকলের জন্য খােলা, প্রবেশাধিকার সীমিত নয় তাকে উন্মুক্ত গ্রন্থাগার বলে। অন্যদিকে পুস্তক গ্রন্থাগারের বাইরে নিয়ে আসতে পারা বা না পারার দিক দিয়েও দু রকমের : রেফারেন্স ও ননরেফারেন্স পাঠাগার। গ্রন্থাগার বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন, ব্যক্তি বা পারিবারিক গ্রন্থাগার, স্থানীয় কমিউনিটির উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি গ্রন্থাগার, স্কুল-কলেজের গ্রন্থাগার, সাধারণের গ্রন্থাগার (পাবলিক লাইব্রেরি), ভ্রাম্যমান লাইব্রেরি ইত্যাদি। ভৌগােলিক অবস্থান বা প্রাতিষ্ঠানিক কারণে গ্রন্থাগারের নাম বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যেমন- জাতীয় গ্রন্থাগার, সাধারণ গ্রন্থাগার, বিশবিদ্যালয় গ্রন্থাগার, কুল গ্রন্থাগার, গণ গ্রন্থাগার, ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার ইত্যাদি। আকার- আকৃতি ও প্রকৃতিগত পার্থক্য থাকলেও সব ধরনের গ্রন্থাগারের কার্যক্রম ও উদ্দেশ্য অভিন্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *