ভূগোল ও পরিবেশ ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল

SSC: ভূগোল ও পরিবেশ ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ভূগোল ও পরিবেশ ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল: করোনা মহামারীর কারণে ২০২২ সালের এসএসসি পরিক্ষা শর্ট সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত শর্ট সিলেবাসের উপর ভিত্তি করে সাজানো। আশা রাখছি আপনাদের পরিক্ষার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে অনেকটা কাজে লাগবে।


ভূগোল ও পরিবেশ সকল অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ১ম অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ২য় অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৬ষ্ঠ অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ১০ম অধ্যায় সৃজনশীল


ভূগোল ও পরিবেশ ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল

সৃজনশীল ০১:
দৃশ্যকল্প-১: দিনাজপুর ও শিলং একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উচ্চতার কারণে শিলং দিনাজপুর অপেক্ষা শীতল।
দৃশ্যকল্প-২: সমুদ্র থেকে দূরত্বের কারণে কক্সবাজার ও রাজশাহীর জলবায়ু ভিন্ন।

ক. বায়ুর আর্দ্রতা পরিমাপক যন্ত্রের নাম কী?
খ. বায়ুমণ্ডলের চাপ বলয়সমূহের নাম উল্লেখ করো।
গ. দৃশ্যকল্প-১ এর তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উত্ত নিয়ামকগুলো ছাড়া আর যেসব নিয়ামক বাংলাদেশের জলবায়ুতে ভূমিকা রাখছে তা উল্লেখপূর্বক দুটির বিশ্লেষণ করো।

১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. বায়ুর আদ্রর্তা পরিমাপক যন্ত্রের নাম হাইগ্রোমিটার।

খ. ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অক্ষাংশের তাপের পার্থক্য এবং গোলাকার পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে বায়ুমণ্ডলে কয়েকটি চাপমণ্ডলের সৃষ্টি হয়। যথা- (১) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়, (২) ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বরয়, (৩) উপ-মেরুবৃত্তের নিম্নচাপ বলয়, (৪) মেরু অঞ্চলের উচ্চচাপ বলয়।

গ. দৃশ্যকল্প-১ এ দিনাজপুর ও শিলং এর তাপমাত্রার ভিন্নতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এ দুইটি অঞ্চল একই অক্ষাংশে অবস্থিত। একই অক্ষাংশে একই ধরনের জলবায়ু পরিলক্ষিত হবার কথা থাকলেও উচ্চতার পার্থক্যের কারণে তাপমাত্রার ভিন্নতা দেখা যায়।

সমুদ্র সমতল থেকে যতই উপরে ওঠা যায়, উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলীয় তাপমাত্রা ততই হ্রাস পায়। সাধারণত প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় প্রায় ৬° সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায়। তাই দিনাজপুর ও শিলং একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও শিলং অপেক্ষাকৃত অধিক উঁচুতে অবস্থিত হওয়ায় এর তাপমাত্রা দিনাজপুর অপেক্ষা কম।

ঘ. উদ্দীপকের নিয়ামক গুলো ছাড়া বাংলাদেশের জলবায়ুতে যেসব নিয়ামক কাজ করছে সেগুলো হলো: ১. অক্ষাংশগত অবস্থান, ২. বায়ুপ্রবাহ, ৩. সমুদ্রস্রোত, ৪. পর্বতের অবস্থান, ৫. মৃত্তিকার গঠন এবং ৬. বনভূমির অবস্থান। এগুলোর মধ্যে পর্বত ও বনভূমির অবস্থান নিচে বিশ্লেষণ করা হলো। পর্বতের অবস্থান: মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উত্তরে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত হিমালয় পর্বতে বাধা পেয়ে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত ঘটায়।

আবার শীতকালে শীতল বায়ু হিমালয় পর্বত অতিক্রম করতে পারে না ফলে আবহাওয়া ততটা শীতল হয় না। বনভূমির অবস্থান: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত সুন্দরবন বরাবরই এ অংশের জেলাগুলোকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করে।

সৃজনশীল ০২: শাবাব বিকেলবেলা দাদুর সাথে বারান্দায় বসে গল্প করছিল। শাবাব দাদুকে বলল, দাদু এখন তো শীতকাল তারপরও গরম লাগছে। দাদু বললেন, বায়ুমণ্ডলে এখন প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গ্যাসের বৃদ্ধির ফলে একটি প্রতিক্রিয়া ঘটছে এবং এর সামগ্রিক প্রভাব পৃথিবীতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।

ক. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায়?
খ. ভারতীয় উপমহাদেশের জলবায়ু ইউরোপের মতো শীতল হয় না কেন?
গ. দাদু বায়ুমণ্ডলে ঘটা কোন প্রতিক্রিয়াটির কথা বলেছেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. পৃথিবীর সামগ্রিক পরিবেশের উপর উক্ত প্রতিক্রিয়াটির প্রভাব বিশ্লেষণ করো।

২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. বায়ুমণ্ডলের এক্সোমণ্ডলে হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায়।

খ. উত্তরের শীতল বায়ু ইউরোপের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়াও সমুদ্র থেকে দূরত্বও এখানে শীত বেশি পরায় একটি কারণ। তাই শীতকালে এখানে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। অপরদিকে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরে হিমালয় পর্বতের অবস্থানের কারণে শীতল বায়ু পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে এখানে শীতকালে ইউরোপের মতো শীতল জলবায়ু পরিলক্ষিত হয় না।

গ. উদ্দীপকে শাবাবের দাদু গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন। পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বায়ুমণ্ডল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডল হলো কাঁচের ঘরের ছাদের মতো। সূর্যের আলো পৃথিবীর সমস্ত তাপ ও শক্তির মূল উৎস।

পৃথিবীতে আসা সূর্যালোক ভূপৃষ্ঠ শোষণ করে ও বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত করে। আবার মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ যেমন- কাঠ, কয়লা পোড়ানো, গাছ কাটা, কলকারখানার ধোঁয়া ইত্যাদি কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন ইত্যাদির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এ গ্যাসগুলোকে বলা হয় গ্রিন হাউস গ্যাস। গ্রিন হাউস গ্যাস বৃদ্ধির ফলে বায়ুমণ্ডলে সৃষ্টি হচ্ছে পুরু একটি গ্যাসের স্তর বা চাদর। এর ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ছেড়ে দেওয়া তাপ পুনরায় ফেরত যায়না। ফলে তাপ শোষণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়। উষ্ণতা বৃদ্ধির এই প্রক্রিয়াই হলো গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া।

ঘ. পৃথিবীর সামগ্রিক পরিবেশের উপর গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ার প্রভাব রয়েছে। এর ফলে কিছু অঞ্চলে সুফল আসবে আবার কিছু অঞ্চলে নেমে আসবে দুর্ভোগ। বিজ্ঞানীদের মতে, গ্রিন হাউসের প্রভাবে কয়েকটি দেশে (যথা- কানাডা, রাশিয়া, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেন প্রভৃতি) সাফল্য বয়ে আনবে। এর ফলে ঐসব অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ একর জমি বরফমুক্ত হয়ে চাষাবাদ ও বাসযোগ্য হয়ে উঠবে।

অন্যদিকে দুর্ভোগ বাড়বে পৃথিবীর প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকার অধিবাসীদের। কারণ গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ার ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উপকূলীয় এলাকার একটি বিরাট অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে একবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ ভাগ অধিবাসীদের সরাসরি ভাগ্য বিপর্যয় দেখা দিবে এবং জলবায়ু শরণার্থীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে।

সৃজনশীল ০৩: মৃদুল বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে জানতে পারে ২১ শতকের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা আরও অতিরিক্ত প্রায় ২.৫° থেকে ৫.৫° সেলসিয়াস বেড়ে যাবে, যার অন্যতম কারণ গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ।

ক. UNFCC এর পূর্ণরূপ কী?
খ. গ্রিন হাউস গ্যাস বলতে কী বোঝ?
গ. উক্ত গ্যাস নিঃসরণ কীভাবে হয়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনাটির ফলাফল কি হতে পারে? বিশ্লেষণ করো।

৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. UNFCC এর পূর্ণরূপ হলো United Nations Framework Convention on Climate Change.

খ. গ্রিন হাউস গ্যাস বায়ুমণ্ডলে তাপ ধরে রাখে। মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ যেমন- কাঠকয়লা পোড়ানো, গাছ কাটা, কলকারখানার ধোঁয়া ইত্যাদি বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন প্রভৃতি গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। এ গ্যাসগুলো সূর্য তাপ ধরে রাখতে পারে। এদের বলা হয় গ্রিন হাউস গ্যাস।

গ. মৃদুল ইন্টারনেট ব্রাউজ করে জানতে পারে ২১ শতকের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা অতিরিক্ত প্রায় ২.৫° থেকে ৫.৫° সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে। এ তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য প্রধানত গ্রিন হাউস গ্যাস দায়ী। বায়ুমণ্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাসসমূহের উপস্থিতির মাত্রা উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি করছে।

উষ্ণায়নের জন্য দায়ী এ গ্যাসগুলো হলো কার্বন ডাইঅক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, মিথেন। শিল্পায়ন, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষির সম্প্রসারণ ইত্যাদি কর্মকাণ্ড উল্লিখিত গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এছাড়াও গাছ কাটা, কাঠ কয়লা পোড়ানো ইত্যাদি কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন ইত্যাদির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

ঘ. উদ্দীপকে গ্রিন হাউস গ্যাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যার পরিমাণ বায়ুমন্ডলে দিন দিন বেড়েই চলেছে। মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বিগত একশ বছরে প্রায় ০.৬০° সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রিন হাউস গ্যাস বৃদ্ধির ফলে বায়ুমণ্ডলে ক্রমশ সৃষ্টি হচ্ছে পুরু গ্রিন হাউস গ্যাসের স্তর বা চাদর। এর ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ছেড়ে দেওয়া তাপ পুনরায় ঊর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলে ফিরে যেতে পারছে না। এ কারণে বায়ুমণ্ডলে তাপ শোষণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ক্রমশ উষ্ণতা বাড়ছে।

যাকে গ্রিন হাউস প্রভাব বা প্রতিক্রিয়া বলে। গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে অধিক বৃষ্টিপাত, ব্যাপক বন্যা, ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়, খরা প্রভৃতি জলবায়ুগত পরিবর্তন সাধিত হতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উপকূলীয় এলাকার এক বিরাট অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ার ফলে একবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় বিশ্বের মোট জনসমষ্টির প্রায় ২০ শতাংশের ভাগ্য বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এছাড়া সময়ে অসময়ে জলোচ্ছ্বাসের ফলে ফসল ডুবে যাওয়া, সুপেয় পানি দূষিত হওয়া, লোনা পানি প্রবেশের ঝুঁকি, বনাঞ্চল ধ্বংস, বন্য জীবজন্তুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ। এছাড়াও আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে ফেসবুকে কানক্ট থাকতে পারেন।

ssc suggestion 2022