ভূগোল ও পরিবেশ ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

SSC: ভূগোল ও পরিবেশ ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ভূগোল ও পরিবেশ ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: করোনা মহামারীর কারণে ২০২২ সালের এসএসসি পরিক্ষা শর্ট সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত শর্ট সিলেবাসের উপর ভিত্তি করে সাজানো। আশা রাখছি আপনাদের পরিক্ষার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে অনেকটা কাজে লাগবে।


ভূগোল ও পরিবেশ সকল অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ১ম অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ২য় অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৬ষ্ঠ অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ১০ম অধ্যায় সৃজনশীল


ভূগোল ও পরিবেশ ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল

সৃজনশীল ০১: শুভ তার বন্ধুর পড়ার টেবিলে একটি মানচিত্রের বই দেখতে পেয়ে এর ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে চায়। তার বন্ধু মানচিত্র সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝিয়ে বললো।

ক. মানচিত্র কী?
খ. একটি মানচিত্রের মধ্যে কী ধরনের তথ্য থাকতে পারে?
গ. ব্যবহারিক ক্ষেত্রে মানচিত্রের গুরুত্ব কতটুকু? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মিশরীয়দের মানচিত্র তৈরির ইতিহাস পর্যালোচনা করো।

১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. মানচিত্র হলো নির্দিষ্ট স্কেলে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখাসহ কোনো সমতল ক্ষেত্রের উপর পৃথিবী বা এর অংশবিশেষের অঙ্কিত প্রতিরূপ।

খ. একটি মানচিত্রের মধ্যে যে ধরনের তথ্য থাকতে পারে তা হলো— i. শিরোনাম; ii. স্কেল; iii. উত্তর দিক; iv. সূচক ও; v. তথ্য-উপাত্ত।

গ. মানচিত্র ভূগোল বিষয়ের একটি অপরিহার্য অঙ্গ। তাই ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। নিচে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে মানচিত্রের গুরুত্ব উল্লেখ করা হলো-

i. কোনো স্থানের মানচিত্রের সাহায্যে ঐ স্থানের ভৌগোলিক তথ্যসমূহ সঠিকভাবে দ্রুত জানা সম্ভব হয়।
ii. মানচিত্রের সাহায্যে যেকোনো অঞ্চলের গ্রাম, শহর, স্থলপথ, জলপথ, নদনদী, খালবিল, পাহাড়-পর্বত, মালভূমি ও সমভূমি সম্পর্কে জানতে পারি।
iii. মানচিত্রের সাহায্যে যেকোনো স্থানের দূরত্ব নির্ণয় করে সহজে যাতায়াত করা যায়।
iv. এক এক ধরনের মানচিত্র থেকে এক এক ধরনের জ্ঞান অর্জন করা যায়। যেমন— আবহাওয়া মানচিত্র থেকে আবহাওয়া সম্পর্কে, রাজনৈতিক মানচিত্র থেকে সীমানা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়।
v. সমুদ্রে জাহাজ চালাতে বিমান ভ্রমণে, প্রশাসনিক কাজে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণেও মানচিত্র ব্যবহার করা হয়।

সুতরাং দেখা যায়, ব্যবহারিক ক্ষেত্রে মানচিত্রের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।

ঘ. মানচিত্র তৈরির ইতিহাস অতি প্রাচীন। পৃথিবীর মানচিত্র কখন সর্বপ্রথম ব্যবহৃত বা অঙ্কিত হয়, সে সম্পর্কে ভূগোলবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে জানা যায় যে, প্রায় ৩০০০ বছর পূর্বে মিশরের লোকজন প্রথম মানচিত্র তৈরি করেন।

মিশর ছিল কৃষিভিত্তিক সভ্যতা। সেখানে শস্যের সাহায্যে ভূমি কর প্রদানের প্রথা প্রচলিত ছিল। এজন্য দ্বিতীয় রামসেস (১৩৩৩ – ১৩০০ খ্রিস্টপূর্ব) কর্তৃক ভূমি জরিপের মাধ্যমে ভূমির পরিমাণ এবং সীমারেখা চিহ্নিত করা হয়। প্রাচীন মিশরের নীলনদ উপত্যকার মানচিত্র ছিল বর্তমানকালের মৌজা মানচিত্রের অনুরূপ।

মিশরীয়রা নীলনদের উপত্যকাগুলোর আশেপাশে ছোট ছোট অঞ্চলের মানচিত্র অঙ্কন করত। তাদের এ ক্ষুদ্র মানচিত্রগুলোর অনুকরণে পরবর্তীতে বিভিন্ন সভ্যতায় বৃহৎ আকারে এবং তথ্য সংবলিত মানচিত্রের সৃষ্টি হয়।

সৃজনশীল ০২: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা রিপোর্ট তৈরির কাজে মহেশখালী গেল। সেখানে তারা একটি যন্ত্র দিয়ে ভূ-উপগ্রহ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে ভিন্ন একটি ব্যবস্থার সাহায্যে তথ্যগুলো সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে।

ক. প্রমাণ সময় কাকে বলে?
খ. বিভিন্ন দেশ একাধিক প্রমাণ সময় ব্যবহার করে কেন?
গ. ছাত্ররা যে যন্ত্রের সাহায্যে তথ্য সংগ্রহ করে তার কার্যনীতি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. শিক্ষার্থীরা যে ব্যবস্থার সাহায্যে তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করেছে তা বিশ্লেষণ করো।

২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. সাধারণত কোনো একটি দেশের মধ্যভাগের দ্রাঘিমারেখা অনুযায়ী যে সময় নির্ধারণ করা হয় তাকে ঐ দেশের প্রমাণ সময় বলে। যেমন: বাংলাদেশের প্রমাণ সময় ৯০° পূর্ব দ্রাঘিমা অনুযায়ী নির্ধারিত।

খ. সময়ের বিভ্রাট থেকে বাঁচার জন্য প্রত্যেক দেশ একটি প্রমাণ সময় নির্ধারণ করে। সাধারণত কোনো একটি দেশের মধ্যভাগের দ্রাঘিমারেখা অনুযায়ী প্রমাণ সময় নির্ধারণ করা হয়। দেশের আয়তনের উপর ভিত্তি করে প্রমাণ সময় একাধিক হতে পারে। পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত দেশগুলো প্রশাসনিক ও অন্যান্য কাজের সুবিধার জন্য একাধিক প্রমাণ সময় ব্যবহার করে। যেমন: যুক্তরাষ্ট্রে ৪টি এবং কানাডাতে ৬টি প্রমাণ সময় রয়েছে।

গ. ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা যে যন্ত্রের সাহায্যে তথ্য সংগ্রহ করে সেটি হলো জিপিএস। জিপিএস তার রিসিভার দিয়ে ভূ-উপগ্রহ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। এর জন্য মেঘমুক্ত পরিষ্কার আকাশের প্রয়োজন হয়। রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়ায় যন্ত্রটি সঠিকভাবে কাজ করে।

কোনো স্থানে উঁচু খাড়া পাহাড় বা ভবন থাকলে জিপিএস দ্বারা সেই স্থানের অবস্থান নির্ণয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং এতে বেশি সময় লাগে। ভূগোলবিদদের নিকট জিপিএস একটি অত্যন্ত মূল্যবান এবং কার্যকর যন্ত্র হিসেবে পরিচিত। এর সঠিক প্রয়োগ ভৌগোলিক তথ্য সংগ্রহের কাজে খুবই ফলপ্রসু।

ঘ. উদ্দীপকে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে যে ব্যবস্থার সাহায্যে তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে তা হল জিআইএস। ভৌগোলিক তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ ব্যবস্থাকে সংক্ষেপে জিআইএস (GIS) বলে। জিআইএস হলো কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ ব্যবস্থা।

এ ব্যবস্থার মাধ্যমে ভৌগোলিক তথ্যগুলোর সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে স্থানিক ও পারিসরিক (Spatial) সমস্যা চিহ্নিতকরণ, মানচিত্রায়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরি করা হয়ে থাকে । যেমন— হাতিরঝিল প্রকল্পে জিআইএস এর ব্যবহার। বর্তমানে ভূমি ব্যবস্থাপনা, প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়ন, পানি সম্পদ গবেষণা, নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার বিশ্লেষণ প্রভৃতি বহুবিধ কাজে জিআইএস ব্যবহৃত হচ্ছে।

জিআইএসের মাধ্যমে একটি মানচিত্রের মধ্যে অনেক ধরনের উপাত্তের (data) উপস্থাপন ঘটিয়ে এবং তা বিশ্লেষণ করে মানচিত্রটির উপযোগিতা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। যেমন- কোনো অঞ্চলের ভূমি ব্যবহার, পানি ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য, এই সবগুলো বিষয় দেখিয়ে জিআইএস এর মাধ্যমে সেই অঞ্চলের ফসল উৎপাদনে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা যায়। যেমন- আমেরিকার খামার কৃষি (farming)।

সৃজনশীল ০৩: দোয়েল ও কোয়েল জিপিএস যন্ত্র দ্বারা পৃথিবীতে তাদের নিজ নিজে অবস্থান জানতে পারল। দোয়েল রয়েছে ৩০° পূর্ব দ্রাঘিমায় এবং কোয়েল রয়েছে ৫০° পূর্ব দ্রাঘিমায় ।

ক. ১° দ্রাঘিমার ব্যবধানে সময়ের পার্থক্য কত?
খ. মানচিত্রের জন্য সূচক গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. দোয়েলের অবস্থান যখন সকাল ৯টা তখন কোয়েলের অবস্থানে স্থানীয় সময় কত?
ঘ. তাদের ব্যবহৃত যন্ত্রের সুবিধা ও অসুবিধা বিশ্লেষণ কর।

৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ১° দ্রাঘিমার ব্যবধানে সময়ের পার্থক্য ৪ মিনিট।

খ. যেকোনো ভাষায় একটি মানচিত্র পাঠ করতে হলে নানা ধরনের প্রতীক চিহ্নের সাহায্য নিতে হয়। এসব প্রতীক চিহ্নের অর্থ সূচকে দেওয়া থাকে। যেমন— পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ তাদের স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রতীক চিহ্ন ব্যবহার করে আসছে। এসব চিহ্নকে আন্তর্জাতিক প্রচলিত প্রতীক চিহ্ন বলে। স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র পাঠ করার জন্য এই প্রতীক চিহ্নগুলো অত্যন্ত জরুরি বলে মানচিত্রের নিচের দিকে এই প্রতীক চিহ্নগুলোর সূচক দেওয়া থাকে। সুতরাং মানচিত্র গঠনে সূচক আবশ্যকীয়।

গ. উদ্দীপকে দোয়েলের অবস্থান ৩০° পূর্ব এবং কোয়েলের অবস্থান ৫০° পূর্ব দ্রাঘিমায় । সুতরাং কোয়েল ও দোয়েলের পূর্বে অবস্থান করছে এবং তাদের মধ্যে দ্রাঘিমার পার্থক্য, ৫০° – ৩০° = ২০°। আমরা জানি, প্রতি ডিগ্রি দ্রাঘিমার জন্য সময়ের পার্থক্য ৪ মিনিট।

অতএব, তাদের মধ্যে সময়ের পার্থক্য হবে, ২০° x ৪ = ৮০ মিনিট অর্থাৎ ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট । অতএব, কোয়েলের স্থানের স্থানীয় সময় হবে, সকাল ৮টা + ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট = সকাল ৯টা ২০ মিনিট । সুতরাং বলা যায়, দোয়েলের অবস্থানরত স্থানের স্থানীয় সময় যখন সকাল ৮টা তখন কোয়েলের অবস্থানরত স্থানের স্থানীয় সময় হবে সকাল ৯টা ২০ মিনিট।

ঘ. দোয়েল ও কোয়েলের ব্যবহৃত যন্ত্রটি হলো জিপিএস। নিম্নে জিপিএস-এর সুবিধা ও অসুবিধা ব্যাখ্যা করা হলো:

জিপিএস-এর সুবিধা: জিপিএসের সাহায্যে মুহূর্তের মধ্যে কোনো একটি স্থানের অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ ইত্যাদি জানা যায়। আমাদের দেশে অনেক সময় ভূমি জরিপের মধ্যে বেশি ঝামেলা করা হয়। জিপিএস ব্যবহারে সময় অনেক কম অপচয় হয়। যে কোনো দুর্যোগকালীন সময়ে জিপিএস-এর মাধ্যমে কোনো একটি স্থানের অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ জেনে তার সঠিক অবস্থান জেনে সাহায্য পাঠানো যায়। জিপিএস-এর মাধ্যমে কোনো স্থানের উচ্চতা ও দূরত্ব জানা যায়। এছাড়াও ঐ স্থানের উত্তর দিক, তারিখ ও সময় জানা যায়।

জিপিএস-এর অসুবিধা: জিপিএস-এর সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। অসুবিধা গুলো হলো-এর মূল্য বেশি তাই সহজলভ্য নয়, বেশির ভাগ জনগণ (বাংলাদেশে) এর সঙ্গে পরিচিত নয়। আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ এটি চালাতে পারেনা। এছাড়া সনাতনী পদ্ধতি না ছাড়ার প্রবণতা থাকায় আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এটি জনপ্রিয় হতে পারছেনা। পরিশেষে বলা যায় দোয়েল ও কোয়েলের এই জিপিএস- যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের অবস্থান জানতে পেরেছে যা এই যন্ত্রের একটি অন্যতম সুবিধাজনক দিক।

আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ। এছাড়াও আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে ফেসবুকে কানক্ট থাকতে পারেন।

ssc suggestion 2022