ভূগোল ও পরিবেশ ২য় অধ্যায় সৃজনশীল 

SSC: ভূগোল ও পরিবেশ ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ভূগোল ও পরিবেশ ২য় অধ্যায় সৃজনশীল: করোনা মহামারীর কারণে ২০২২ সালের এসএসসি পরিক্ষা শর্ট সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত শর্ট সিলেবাসের উপর ভিত্তি করে সাজানো। আশা রাখছি আপনাদের পরিক্ষার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে অনেকটা কাজে লাগবে।


ভূগোল ও পরিবেশ সকল অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ১ম অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ২য় অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ৬ষ্ঠ অধ্যায় সৃজনশীল
🔅🔅 ভূগোল ও পরিবেশ: ১০ম অধ্যায় সৃজনশীল


ভূগোল ও পরিবেশ ২য় অধ্যায় সৃজনশীল

সৃজনশীল ০১: আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা ভূগোলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আন্তর্জাতিক সময়সূচিতে সমস্যা দূর করার জন্য এই রেখা ব্যবহৃত হয়। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির মাধ্যমে এই রেখা কল্পনা করা হয়।

ক. আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা কাকে বলে?
খ. আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা অতিক্রম করলে কোনো জাহাজকে দিন যোগ বা বিয়োগ করতে হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের রেখাটির প্রধান দুটি গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তারিখ সংক্রান্ত জটিলতা দূর করার জন্য এই রেখাটি কল্পনা করা হয়। উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. যে দ্রাঘিমারেখা পৃথিবীর পশ্চিম বা পূর্ব গোলার্ধের তারিখ বিভাজিকার হিসেবে কাজ করে তাকে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলে।

খ. ১৮০° দ্রাঘিমারেখাকে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূল মধ্যরেখা থেকে ১৮০° পূর্ব ও পশ্চিমে এর অবস্থান। ফলে এ দ্রাঘিমারেখায় একই সাথে দুইটি ভিন্ন বার দেখা যায়। তাই তারিখ বা বারের সমস্যার সমাধানকল্পে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা অতিক্রম করলে কোনো জাহাজকে দিন যোগ বা বিয়োগ করতে হয়।

গ. উদ্দীপকের রেখাটি আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বা ১৮০° দ্রাঘিমারেখা। আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা প্রবর্তিত হওয়ার ফলে বিভিন্ন দেশের যে বিভিন্ন ধরনের সময়ের জটিলতা তৈরি হয় তা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নিচে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার দুটি গুরুত্ব তুলে ধরা হলো।

(i) আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বার বা দিন গণনার সমস্যা দূর করেছে।
(ii) আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন তারিখ সমস্যার সমাধান করেছে।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, বার বা তারিখ নির্ধারণে আগে যে সমস্যা ছিল আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার ফলে তা সমাধান হয়েছে।

ঘ. মূল মধ্যরেখা থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে প্রতি ১° দ্রাঘিমার জন্য ৪ মিনিট সময়ের ব্যবধান হয়। তারিখ সংক্রান্ত জটিলতা দূর করার জন্য আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা কল্পনা করা হয়েছে। যেহেতু প্রতি ১০ এর জন্য ৪ মিনিট সেহেতু ১৮০° দ্রাঘিমার জন্য ১৮০x৪= ৭২০ মিনিট অর্থাৎ ১২ ঘণ্টার পার্থক্য হয়। এভাবে দুই দিকে অর্থাৎ ০° থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে ১২ ঘণ্টা করে ২৪ ঘন্টার ব্যবধান হয়। পূর্ব দিকে গেলে ১২ ঘণ্টা বাড়ে আর পশ্চিম দিকে গেলে ১২ ঘণ্টা কমে। ফলে ১৮০° দ্রাঘিমারেখায় সময়ের ব্যবধান দেখা হয় ২৪ ঘন্টা।

এর জন্য যে তারিখ ও বারের সমস্যা হয়। তার সমাধানকল্পে ১৮০° দ্রাঘিমারেখাকে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা স্থির করা হয়। এর ফলে পশ্চিম দিকে তারিখ রেখা অতিক্রম করলে ১ দিন যোগ এবং পূর্ব দিকে গেলে ১ দিন বিয়োগ করতে হয়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, বার ও তারিখের জটিলতা দূর করার জন্য আন্তর্জাতিক তারিখরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে।

সৃজনশীল ০২:
দৃশ্যকল্প-১: মেঘমুক্ত রাতের আকাশে দীপ্ত হঠাৎ তার দিকে একটি নক্ষত্র ছুটে আসতে দেখল।
দৃশ্যকল্প-২ : চন্দ্রগ্রহণ দেখার সময় “চাঁদের উপর পতিত পৃথিবীর গোলাকার ছায়া দেখে বুশরা স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছল যে পৃথিবী গোলাকার”। তার মাহবুব স্যার অবশ্য পৃথিবী যে গোলাকার তার সপক্ষে আরও অনেক অপ্রত্যক্ষ প্রমাণ উপস্থাপন করেন।

ক. সৌরজগতের কেন্দ্রস্থিত নক্ষত্রের নাম কী?
খ. মঙ্গলগ্রহ লালচে দেখায় কেন?
গ. কী কারণে দৃশ্যকল্প-১ এর দীপ্তের দিকে তারাটি ছুটে এলো, ব্যাখ্যা করো?
ঘ. চন্দ্রগ্রহণ ছাড়াও পৃথিবী যে গোলাকার সে সম্পর্কে মাহবুব স্যার যে সকল অপ্রত্যক্ষ প্রমাণ দিয়েছে সেগুলো বিশ্লেষণ করো।

২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. সৌরজগতের কেন্দ্রস্থিত নক্ষত্র সূর্য।

খ. মঙ্গল গ্রহ বছরের অধিকাংশ সময় দেখা যায়। মঙ্গলগ্রহে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। কার্বন ডাইঅক্সাইডের এই ঘনত্বের কারণে সূর্যের আলোর লাল রঙের প্রতিফলনের ফলে খালি চোখে মঙ্গল গ্রহ লালচে দেখায়।

গ. দৃশ্যকল্প –১ এর দীপ্তর দিকে ছুটে আসা তারাটি হলো উল্কা। রাতের মেঘযুক্ত আকাশে অনেক সময় মান হয় যেন নক্ষত্র ছুটে যাচ্ছে বা মনে হয় কোনো নক্ষত্র যেন এই মাত্র খসে পড়ল। এ ঘটনাকে নক্ষত্রপতন বা তারা খসা বলে। এরা কিন্তু আসলে কোনো নক্ষত্র নয়। এদের নাম উল্কা। মহাশূন্যে এসব অজস্র জড় পিণ্ড ভেসে বেড়ায়। এই জড়পিণ্ডতগুলো অভিকর্ষ বলের আকর্ষণে প্রচণ্ড গতিতে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে। বায়ুর সংস্পর্শে এসে বায়ুর সঙ্গে সংঘর্ষের ফরে এরা জ্বলে ওঠে। ফলে এদের ছুটন্ত তারা মনে হয়। সুতরাং এসব কারনেই দীপ্ত দেখলো তার দিকে একটি তারা ছুটে আসছে।

ঘ. চন্দ্রগ্রহণ ছাড়াও পৃথিবী গোলাকার এর বেশ কিছু অপ্রত্যক্ষ প্রমাণ রয়েছে। এসব প্রমাণের মাধ্যমে আমরা বোঝাতে পারি পৃথিবী গোলাকার। নিম্নে বেশ কিছু অপ্রত্যক্ষ প্রমাণ বিশ্লেষণ করা হলোঃ পৃথিবীর আহ্নিক গতির কারণে দিন ও রাত হয়। যদি পৃথিবী গোলাকার না হতো তাহলে আহ্নিক গতি থাকত না।

এ আহ্নিক গতি না থাকলে পৃথিবীর একদিক চিরকাল অন্ধকার থাকত এবং অপরদিক আলোকিত হয়ে থাকত। সুতরাং পৃথিবীর দিন-রাত সংঘটন থেকে বোঝা যায় পৃথিবী গোলাকার। কোনো বস্তু গোলাকার না হলে তা নিজ অক্ষের উপর ঘুরতে পারে না। পৃথিবী তার নিজ অক্ষের উপর ঘুরতে থাকে এর ফলে একই সঙ্গে কেন্দ্রমুখী এবং ক্ষেত্রবিমুখ বরের উদ্ভব হয়, যে বলের প্রভাবে যেকোনো ঘূর্ণায়মান বস্তু গোলাকার ধারন করে।

পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর প্রচণ্ড গতিতে ঘূর্ণয়ণশীল। সুতরাং পৃথিবীর নিজ অক্ষের উপর এ আবর্তনের জন্য বলা যায় পৃথিবী গোলাকার। আবার, জাহাজের মাস্তুল দেখে পৃথিবীর আকৃতি বোঝা যায়। চলমান কোনো জাহাজের আগে দেখা যায় জাহাজের মাস্তুল তার একমাত্র কারণ হলো গোলাকৃতি পৃথিবী। পৃথিবী গোলকৃতি না হলে মাস্তুল আগে দেখা সম্ভব হতো না। সুতরাং বলা যায়, পৃথিবী গোলাকৃতির অপ্রত্যক্ষ কারণগুলো মাহমুদ স্যার উপস্থাপন করেন।

সৃজনশীল ০৩: ভূগোল ক্লাসে মামুন অক্ষাংশ নির্ণয়ের এমন একটি পদ্ধতি শিখল যার সাহায্যে দিনের বেলা অক্ষাংশ নির্ণয় সম্ভব নয়। সহপাঠী দিদার বিষয়টি বুঝতে না পারায় মামুন তাকে একটি মানচিত্রের সাহায্যে বুঝানোর চেষ্টা করছিল। মানচিত্রটিতে উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমে কল্পিত রেখাগুলোর কৌণিক মান দেয়া ছিল।

ক. প্রতিপাদ স্থান কাকে বলে?
খ. শুক্র গ্রহের উপরিভাগ থেকে সূর্যকে দেখা যায় না কেন?
গ. মানচিত্রে প্রদর্শিত কোন রেখাগুলো সময়ের পার্থক্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মামুনের প্রদর্শিত পদ্ধতির সাহায্যে কীভাবে অক্ষাংশ নির্ণয় করা যায়? বিশ্লেষণ করো।

৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ভূপৃষ্ঠের ওপর অবস্থিত কোনো বিন্দুর ঠিক বিপরীত বিন্দুকে সেই বিন্দুর প্রতিপাদ স্থান (Antipode) বলে। যেমন- বাংলাদেশের প্রতিপাদ স্থান চিলির নিকট প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত।

খ. শুক্র সূর্যের দ্বিতীয় নিকটবর্তী গ্রহ। শুক্রের বায়ুমণ্ডল প্রধানত কার্বন ডাইঅক্সাইডের তৈরি (প্রায় ৯৯ ভাগ)। ফলে এর উপরিভাগ ঘন মেঘের অন্তরালে ঢাকা রয়েছে। তাই এর উপরিভাগ থেকে কখনোই সূর্যকে দেখা যায় না।

গ. মানচিত্রে প্রদর্শিত রেখাগুলো হলো উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত দ্রাঘিমারেখা এবং পূর্ব-পশ্চিমে পৃথিবীকে বেষ্টনকারী অক্ষরেখা। এর মধ্যে দ্রাঘিমারেখা সময়ের পার্থক্য নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিরক্ষরেখাকে ডিগ্রি, মিনিট ও সেকেন্ডে ভাগ করে প্রত্যেক ভাগবিন্দুর ওপর দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে যে দ্রাঘিমারেখা কল্পনা করা হয়েছে তাকে মধ্যরেখা বলা হয়। গ্রিনিচের উপর দিয়ে অতিক্রমকারী মধ্যরেখাটিকে মূল মধ্যরেখা ধরা হয়। এ রেখার মান ০°°। এর পূর্বে বা পশ্চিমে অবস্থিত কোন স্থানের সময়ের পার্থক্য হয়ে থাকে। যেমন- বাংলাদেশ মূল মধ্যরেখা হতে ৯০° পূর্বে দ্রাঘিমায় অবস্থিত হওয়ায় এর সময় গ্রিনিচ (০°) অপেক্ষা ৬ ঘণ্টা অগ্রবর্তী। তাই সময়ের পার্থক্য নির্ণয়ে মধ্যরেখা বা দ্রাঘিমারেখা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ঘ. মামুনের প্রদর্শিত পদ্ধতিটি হলো ধ্রুবতারার সাহায্যে অক্ষাংশ নির্ণয়। পৃথিবী দুইটি গোলার্ধে বিভক্ত। যেমন— উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ। প্রতি রাতে উত্তর গোলার্ধের যে কোনো স্থান থেকে উত্তর আকাশে একটি নির্দিষ্ট স্থানে ধ্রুবতারাকে দেখা যায়। উত্তর গোলার্ধের সব জায়গা থেকে ধ্রুবতারাকে সমান উচ্চতায় দেখা যায় না। স্থানভেদে এ উচ্চতার পার্থক্য ঘটে। অর্থাৎ বিভিন্ন স্থানের জন্য এর উচ্চতা বিভিন্ন হয়। নিরক্ষরেখা থেকে ধ্রুবতারাকে ঠিক দিগন্তরেখায় দেখা যায়। নিরক্ষরেখায় ধ্রুবতারার উন্নতি ০°।

এ রেখা থেকে উত্তর মেরুর দিকে প্রতি ১° অগ্রসর হতে থাকলে ধ্রুবতারার উন্নতি ১° করে বাড়তে থাকবে। উত্তর মেরুতে ধ্রুবতারাকে ঠিক শিরোবিন্দুতে অর্থাৎ মাথার ওপরে দেখা যায়। তাই উত্তর মেরুতে ধ্রুবতারার উন্নতি ৯০° হয়। সুতরাং নিরক্ষরেখার অক্ষাংশ ০° এবং উত্তর মেরুর অক্ষাংশ ৯০°। যতই উত্তরে অগ্রসর হওয়া যায় ততই অক্ষাংশ বাড়তে থাকে। সুতরাং, উত্তর গোলার্ধের কোনো স্থানের অক্ষাংশ ধ্রুবতারার উন্নতির সমান। ধ্রুবতারার উন্নতি জানতে পারলে সহজেই অক্ষাংশ নির্ণয় করা যায়। উল্লেখ্য, ধ্রুবতারার দ্বারা দিনের বেলায় এবং দক্ষিণ গোলার্ধে অক্ষাংশ নির্ণয় করা সম্ভব নয়।


আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তক, গল্পের বই সহ যে কোন পিডিএফ ডাউনলোড করতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ। এছাড়াও আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে ফেসবুকে কানক্ট থাকতে পারেন।

ssc suggestion 2022