অনুচ্ছেদ রচনা: কম্পিউটার

কম্পিউটার অনুচ্ছেদ রচনা

কম্পিউটার অনুচ্ছেদ রচনা টি আজকের আর্টিকেলে শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।

কম্পিউটার অনুচ্ছেদ রচনা

কম্পিউটার আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বৈদ্যুতিক কম্পিউটার আবিষ্কৃত হয়। কম্পিউটার উদ্ভাবনের জনক হিসেবে খ্যাতির অধিকারী হলেন ব্রিটিশ গণিতবিদ চার্লস ব্যাবেজ। তার লাতিন শব্দ ‘কম্পিউটর’ থেকে কম্পিউটার কথার উৎপত্তি। আভিধানিক অর্থে কম্পিউটার হল এক প্রানের গণক। স্থি আজকাল কম্পিউটারকে কেবল গণনাকারী বলা চলে না। এখন তা এক ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ধারণা দেয় যা অগণিত তথ্য বা উপাত্ত গ্রহণ করে অত্যন্ত দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ, গণনা, বিশ্লেষণ ইত্যাদি করতে পারে এবং সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করতে পারে। কম্পিউটারের থাকে তিনটি সুস্পষ্ট অংশ- এক : সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট, দুই : ইনপুট, তিন : আউটপুট। যে কোনাে সমস্যা সংক্রান্ত সবরকম তথ্য নিয়ে কাজ করে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট। ইনপুট’ তথ্য সংবলিত নির্দেশ প্রদান করে আর ‘আউটপুট’ প্রকাশ করে গণনা সংবলিত ফল। যে যাবতীয় তথ্য নিয়ে কম্পিউটার কাজ করে, তাকে বলে ‘প্রােগ্রাম। কম্পিউটারে তথ্য ও নির্দেশ প্রদানের জন্যে যে বিশেষ ভাষা ব্যবহার করা হয়, তাকে বলে প্রােগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। আর এসব কিছুকে এক সঙ্গে অভিহিত করা হয় কম্পিউটার সফটওয়্যার বলে। এছাড়া কম্পিউটারের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণকারী একটা কাঠামাে থাকে, তাকে বলে ‘হার্ডওয়্যার। অত্যন্ত দ্রুত গণনা, নির্ভুল তথ্য বিশ্লেষণ, বিপুল পরিমাণ উপাত্তকে সুসংবদ্ধভাবে যন্ত্র মগজে ধরে রাখার ক্ষমতা, ‘ডাটা’ ও ‘প্রােগ্রাম অনুসারে কাজ করার অসাধারণ ক্ষমতার কারণেই কম্পিউটার মানুষের নিত্যসঙ্গী। কম্পিউটার আধুনিক যুগে মানুষের পরম নির্ভরশীল বন্ধু। কোটি কোটি সংখ্যার অঙ্ক মিলিয়ে হিসাবরক্ষকের হাতে অতি অল্প সময়ে তুলে দিয়ে তাকে নিশ্চিত নির্ভাবনায় ঘরমুখাে করিয়ে দিতে পারে। কম্পিউটার এখন বড় বড় কল-কারখানায় বসে উৎপাদনের পরিকল্পনা আর তা নিয়ন্ত্রণের খবরদারি করছে, লাভ-ক্ষতির হিসাব-নিকাশ করছে। রেলওয়ে, এয়ারলাইন্স, ব্যাঙ্ক রিসার্চ সেন্টার, ইনসিওরেন্স প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের একচ্ছত্র আধিপত্য। পরীক্ষার ফল প্রকাশ, অপরাধীকে খুঁজে বের করা, পুরােনাে মামলার নথিপত্র খুঁজে তথ্য সংগ্রহ করে দেয়া, বিজ্ঞাপন প্রচার করা, যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা— এ সমস্তই এখন করছে মানুষের সৃষ্ট ওই যন্ত্র-মগজ। চিকিৎসাক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও কম্পিউটার নিয়েছে শিক্ষকের ভূমিকা। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা সবই শেখাচ্ছে নিপুণ দক্ষতার সঙ্গে। দাবা, ক্রিকেট, ফুটবলসহ নানারকম ভিডিও গেম খেলছে কম্পিউটার। এসব খেলায় কম্পিউটার মানুষের সঙ্গে প্রতিযােগিতায় অংশ নিচ্ছে। মুদ্রণজগতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছে কম্পিউটার । ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে বসে মুহূর্তেই বিশ্বের যে কোন জায়গায় যে-কোন-তথ্য আদান-প্রদান করা যাচ্ছে। বাংলাদেশেও কম্পিউটারের ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এদেশে এখন মূলত মুদ্রণ শিল্প, ব্যাংক-অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে কম্পিউটারের দ্রুত ও ব্যাপক প্রসার ঘটছে। আধুনিক জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে কম্পিউটারের অবদান অনস্বীকার্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *